মালয়েশিয়ায় বন্দি রেখে দেশে মুক্তিপন দাবী আদম ব্যবসায়ীর

    0
    236

    আমারসিলেট24ডটকম,২৮ডিসেম্বর,মতিউর রহমান মুন্নাঃ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে মালয়েশিয়া পৌছাবে দালালের এমন প্রলোভনে পড়ে নবীগঞ্জের সুমন নামের এক যুবক অবৈধভাবে নৌ-পথে মালয়েশিয়া পারি দিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে। আবুল মিয়া নামের এক দালাল সুমনকে ১ মাস যাবৎ বন্দি করে রেখে শারীরিক নির্যাতন করছে এবং মুক্তিপনের জন্য চাচ্ছে আড়াই লক্ষ টাকা।

    এদিকে দেশে থাকা সুমনের বাবা-মা বসত ঘর বিক্রি করা ছাড়া আর কোন উপায় দেখছেন না।

    এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চৌশতপুর গ্রামের রেজাক মিয়ার ছেলে আদম ব্যবসায়ী আবুল মিয়া দীর্ঘদিন ধরে ইরান, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে অবৈধভাবে নৌ-পথে লোক পাঠিয়ে আসছেন। এবং মুক্তিপনে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। পরে বিদেশগামীদের বিভিন্ন ভাবে শারীরিক নির্যাতন করে হুমকি দেয় যাতে এসব কথা দেশে না জানায়।

    নবীগঞ্জে থাকা দালাল চক্রের লোকজন ৬০ হাজার দিয়ে মালয়েশিয়া পৌছাবে এমন প্রলোভনে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ মাটি করতে চান না কেউ। এসব চিন্তা করে ৬০ হাজার টাকা দালালকে দিয়ে নৌ-পথে স্বপ্নের দেশ মালয়েশিয়ায় পারি জমান নবীগঞ্জ উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের হালিতলা গ্রামের ফরতাব আলীর পুত্র সুমন মিয়া(২৫)।

    সুমনের মা লীলবানু বেগম এ প্রতিবেদককে জানান, আদম ব্যবসায়ী আবুল মিয়ার সাথে গেল নভেম্বের মাসের ২৮ তারিখ ৬০ হাজার টাকা কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে নৌ-পথে-জাহাজযোগে মালয়েশিয়া পাঠায়। প্রায় ২০ দিনে পৌছানোর পর সেখানে ওই দালাল তাকে বন্দি করে রাখে। পরে দালাল তার বাড়িতে ফোন করে আড়াই লক্ষ টাকা দাবী করে। টাকা না দেয়া পর্যন্ত  তাকে মুক্তি দেয়া হবেনা বলে হুমকি দেয়। কিন্তু এ পরিমাণে টাকা দেয়া সুমনের পরিবারের পক্ষে কোন ভাবেই সম্ভব নয়। ফলে বন্দিদশা থেকে মুক্তি করতে সুমনের পরিবারের লোকজন সুদ ও লগ্নি করে টাকা জোগারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কিন্তু কোন ভাবেই টাকা সংগ্রহ করতে পারছেন না। এমতাবস্থায় প্রায় ১ মাস যাবৎ দালালদের বন্দিদশায় রয়েছে সুমন।

    আরও কত দিন থাকতে হবে তা কেউ বলতে পারছেন না। এতে তার স্বজনরাও রয়েছেন আতংকে। সুমনের মা লীলবানু বেগম বলেন “বাবারে আমার আমার ৪ ছেলে ২ মেয়ে। তার মধ্যে সুমনই ছিল কর্মীক তাকে দালাল আবুল ৬০ হাজার নিয়ে মালয়েশিয়া পাঠায় কিন্ত এখন আড়াই লক্ষ টাকার জন্য সেখাঁনে আমার সুমনকে আটক করে মারধর করতাছে কিন্তু আমার ছেলে মেয়েদের নিয়ে তাকার একমাত্র বসত ঘর বিক্রি ছাড়া আর কোন উপায় দেখছিনা”

    বিভন্ন সূত্রে খবর পাওয়া গেছে একই অবস্থায় আদম ব্যবসায়ী আবুল মিয়ার জিম্মায় রয়েছেন নবীগঞ্জের আরোও ২০/২২ জন লোক। মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত দালালদের বন্দিদশা থেকে মানবেতর জীবন যাপন করার খবরে দেশে অবস্থানরত স্বজনদের কান্নায় বালিশ ভিজছে।

    আদম ব্যবসায়ী আবুল মিয়ার বিরুদ্বে এর আগেও বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন না করায় সে দিব্যি চালিয়ে আসছে এই মানব পাচারের ব্যবসা । এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন বন্দিদশায় থাকা সুমনের স্বজনরা।