এয়ার এশিয়ার নিখোঁজ বিমান ঘিরে ক্রমেই গাঢ় হচ্ছে আশঙ্কা

    0
    221

    আমারসিলেট24ডটকম,২৮ডিসেম্বরঃ এয়ার এশিয়ার নিখোঁজ বিমান ঘিরে ক্রমেই গাঢ় হচ্ছে আশঙ্কার কাল মেঘ। এখনও কোনও হদিস পাওয়া যায়নি নিখোঁজ এই বিমানের। আজ রোববার ভোর সাড়ে ৫টায় ইন্দোনেশিয়ার সুরাবেয়া বিমানবন্দর থেকে ১৬২ জন যাত্রী নিয়ে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে রওনা হন বিমানটি।

    আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সূত্রে  জানা যায়, বন্দর ছাড়ার ৪২ মিনিট পর জাকার্তা এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
    কীভাবে বিমানটি নিখোঁজ হল, তা এখনও জানা না গেলেও ইন্দোনেশিয়ার পরিবহণ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সকালে ঘন কুয়াশা ছিল। আবহাওয়াও খুব ভালো ছিল না। নিখোঁজ বিমানের চালক এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলকে জানিয়েছিলেন, আবহাওয়া খুব খারাপ। ঘন মেঘে বিমান চালাতে অসুবিধে হচ্ছে। এরপরই কিউজেড ৮৫০১ এয়ার বিমানটিকে আরও উঁচুতে চালানোর পরামর্শ দেয় এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল। চালকের সাথে এটাই শেষ কথা হয়। এই কথোপকথনের পরই বিমানটির সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

    এদিকে চরম উৎকণ্ঠায় সিঙ্গাপুর ও সুরাবেয়া বিমানবন্দরে ভিড় জমিয়েছেন নিখোঁজ যাত্রীদের পরিবারের সদস্যরা। প্রিয়জনের খবর পেতে বার বার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাচ্ছেন তারা।
    যোগাযোগ মন্ত্রণালয় কর্মকর্তা হাদী মোস্তফা বলেন, যোগাযোগ হারিয়ে যাওয়া বিমানটির নাম্বার- কিউ জেড ৮৫০১। জাকার্তার বিমান নিয়ন্ত্রণ টাওয়ারের সঙ্গে সর্বশেষ সকাল ৬টা ১৭ মিনিটে যোগাযোগ করা হয়েছিল। এয়ারবাস ৩২০-২০০ বিমানটিতে ক্রু ছাড়াও ১৫৫ জন যাত্রী ছিল। তিনি বলেন, শেষ যোগাযোগের পূর্বে অন্য একটি রুটে চলে যায় বিমানটি। বিমানটি সকাল সাড়ে ৮টায় সিঙ্গাপুরে পৌঁছার কথা ছিল।
    হাদী মোস্তফা বলেন, নিখোঁজ হওয়ার আগে উড়োজাহাজটিকে অস্বাভাবিকভাবে রুট পরিবর্তনের কথা বলা হয় এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুম থেকে। তিনি বলেন, ফ্লাইটটি নিখোঁজ থাকার সত্যতা নিশ্চিত করে এয়ার এশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়, উড়োজাহাজটি নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তারা এখন পর্যন্ত যাত্রী বা ক্রুদের ব্যাপারে কোনো তথ্য জানেন না, তবে কোনো কিছু জানতে পারলেই সকলকে জানানো হবে। নিখোঁজ প্লেনটির হদিস পেতে ইতোমধ্যে তৎপরতা শুরু হয়েছে এবং এয়ার এশিয়া তাতে সহযোগিতা করছে বলেও জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
    এদিকে স্থানীয় মেট্রো টিভির খবরে বলা হয়, ভোর ৫টা ২০ মিনিটে সুরাবায়া থেকে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের উদ্দেশে উড়াল দেয় কিউজেড ৮৫০১ ফ্লাইটটি। ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় ৮টা ৩০ মিনিটে গন্তব্যে পৌঁছানোর কথা। কিন্তু স্থানীয় সময় বেলা ১১টার পরও এটি নিখোঁজ রয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার পরিবহনমন্ত্রী হাদি মুস্তাফা সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, এয়ার এশিয়ার এয়ারবাস ৩২০-২০০উড়াল দেয়ার প্রায় দেড় ঘণ্টার কালিমানতান ও বেলিতুং দ্বীপের মাঝামাঝি এলাকা থেকে মধ্যেই জাকার্তা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে বলে মনে করা হচ্ছে।
    জানা যায়, ২০১৪ সালের ৮ মার্চ মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের একটি বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ ২৩৯ জন যাত্রী নিয়ে মাঝ আকাশে উধাও হয়ে যায়। ব্যাপক আন্তর্জাতিক চেষ্টার পরও বিমানটির কোনো হদিস এখনো পাওয়া যায়নি। এর ঠিক ৪ মাসের মাথায় গত ১৭ জুলাই মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের আরেকটি বিমানের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে জানা যায়, বিমানটি ইউক্রেইনের সংঘাতপূর্ণ এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ভূপাতিত হয়ে ২৯৮ জন আরোহীর সবাই নিহত হয়।