আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,০৬মে,এম ওসমান, বেনাপোল প্রতিনিধিঃ শার্শা উপজেলার ১নং ডিহি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হোসেন আলী নিজ পরিষদের সদস্য মহিজুল ইসলামের ব্যবহৃত পালসার মটরসাইকেল জোর পূর্বক কেড়ে নিয়ে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দুপুরে ডিহি ইউনিয়ন পরিষদের সামনে। এ সময় প্রত্যক্ষ দর্শীরা দাঁড়িয়ে তা দেখে অবাক হয়ে যায়। ১৫০ সিসি লাল রঙ্গের পালসার মটরসাইকেলটি চেয়ারম্যানের ভাই রাশেদ ১ লাখ ৩০ হাজার নগদ টাকা দিয়ে কিনে নেয়। পরবর্তীতে অবস্থা বেগতিক বুঝে রাশেদ পাকশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রাক্তন ইউপি সদস্য গণির ছেলে শামীমুরের নিকট ১ লাখ ৪১ হাজার টাকায় পুনরায় বিক্রি করে দেয়। এঘটনায় পরিষদ সদস্য এখন দিশেহারা হয়ে পাগলের মত প্রলাপ বকতে শুরু করেছে।
এলাকায় চেয়ারম্যানের নামে ছ্-িছ্ িরব উঠেছে। চেয়ারম্যান নিজ পরিষদের সদস্যের সংগে যদি এমন কাজ করেন, তাহলে সেখানে সাধারণ জনগণের কি অবস্থা তা বলার অবকাশ রাখে না।
প্রকাশ থাকে যে, গত ৬ জানুয়ারী শুক্রবার ভোরে যশোরের সীমান্তবর্তী উত্তর শার্শার ডিহি ইউনিয়নের নারিকেল বাড়িয়া গ্রাম থেকে ৭নং ওয়ার্ড সদস্য মহিজুল ইসলাম (৪২), ভারতীয় নাগরিক জাকির হোসেন মন্ডল (৪০) ও মজিবর রহমান (৩৬) কে ৩’শ বোতল ফেন্সিডিলসহ আটক করে বিজিবি সদস্যরা। মামলায় তিনি জামিনে ছাড়া পান।
বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ এপ্রিল রবিবার সকালে মহিজুল মেম্বর যশোর আদালতে হাজিরা শেষে ইজি বাইকযোগে বাড়ীতে আসার পথে জেলা স্কুলের সামনে পৌঁছাইলে ডিবি পুলিশের এসআই লিয়াকুজ্জামানের নের্তৃত্বে একটি প্রাইভেটকার ও একটি মটরসাইকেলে এসে তাকে চোখ বেধে নিয়ে যায়।
গত ১১ এপ্রিল মঙ্গলবার রাত আড়াইটায় চৌগাছা উপজেলার কাবিলপুর গ্রামের মাদক সম্রাট একসের বন্দুক যুদ্ধে নিহতের মামলায় ফাঁসিয়ে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে ১০লাখ টাকা দাবী করে বসে ডিবি পুলিশ। এসময় তিনি ১ লাখ টাকা দিতে সম্মত হন। ১০লাখ টাকার শর্তে রাজি না থাকায় পরে চেয়ারম্যান হোসেন আলী ও কয়েকজন মেম্বর মিলে মহিজুলের সাথে কথা বলে।
এসময় চেয়ারম্যান মহিজুলকে ১৫লাখ টাকা লাগবে বলে জানান। মহিজুল একথার প্রতিবাদ করে বলে আমি একসের হত্যার দিন ভারতে ছিলাম এবং আমার কাছে ডিবি পুলিশ ১০লাখ টাকা চেয়েছে। আমি টাকা দিব কেন ? মহিজুলের বেঁকে বসা দেখে কৌশলে অনেক দেনদরবার শেষে স্থানীয় চেয়ারম্যান নগদ ৪ লাখ ও বাকী ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে ঐ রবিবার রাতে মহিজুলকে ছাড়িয়ে আনে। কথা থাকে যে, বাড়ী এসে মহিজুল বাকী টাকা দিয়ে দেবে।
কথা অনুযায়ী মেম্বর টাকা দিতে না পারায় মঙ্গলবার দুপুরে চেয়ারম্যান হোসেন আলী প্রকাশ্যে জনসম্মূখে ডিহি ইউনিয়ন পরিষদের অন্যান্য মেম্বরদের সামনে মহিজুল ইসলামের ব্যবহৃত পালসার মটরসাইকেল জোর করে কেড়ে নিয়ে বিক্রি করে দেয়। উক্ত মটরসাইকেলের নাম পত্তন সম্পন্ন হয়েছে শিক্ষক শামীমূরের নামে।
শার্শার ১নং ডিহি ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ড সদস্য মহিজুল ইসলাম বলেন, আমি যশোর আদালতে হাজিরা দিয়ে বাড়ী ফেরার পথে ডিবি পুলিশ আমাকে জেলা স্কুলের সামনে থেকে চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে যায়। পরে আমার কাছে ১০ লাখ টাকা দাবী করার পর এক পর্যায়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান হোসেন আলী সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনে। আমি ৪ লাখ টাকা নগদ দিয়েছি। আর বাকী ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা না দিতে পারায় আমার ব্যবহৃত মটরসাইকেলটি চেয়ারম্যান জোর করে বিক্রি করে দিয়েছে।
শার্শার ১নং ডিহি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হোসেন আলী বলেন, আমি কেন আমার পরিষদ সদস্য মহিজুল ইসলামের মোটর সাইকেল বিক্রি করে দেয়। মেম্বর নিজেই তার মোটরসাইকেল শিক্ষক শামিমুরের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে।
যশোর জেলা ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাউল হক বলেন, ২৩ এপ্রিল আমি ছুটিতে ছিলাম। মহিজুল ইসলাম আটক হয়নি। বাংলাদেশের কোন সাংবাদিক এত মাথা ঘামায় না, যতোটা যশোরের সাংবাদিকরা ঘামায়।
চেয়ারম্যান যদি আমাদের কথা বলে সাড়ে ৫ লাখ টাকা নেয়, তাহলে তাকে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজির মামলা দিতে বলেন।