মেয়ে সেজে মৃত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উঠাচ্ছেন ভাইজি

    0
    255

    সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় নিঃসন্তান মুক্তিযোদ্ধা নুর মিয়ার সন্তান উল্লেখ্য করে তারই আপন ছোট ভাই আবুল হোসেন নিজের সন্তানকে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান উল্লেখ করে ভুল তথ্য দিয়ে গত ৪বছর ধরে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা উত্তোলন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

    আর এই অভিযোগ তুলেছেন মৃত মুক্তিযোদ্ধার বড় ভাই মিয়া হোসেন।

    তিনি গত ০১,০৭,১৯ইং তারিখে তার ভাই নূর মিয়া নাম দিয়ে মিথ্যে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা বাতিল করা ও প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যস্থা নেবার জন্য আবুল হোসেনের বিরোদ্ধে তাহিরপুর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ অভিযোগের তদন্তের দায়িত্বপায় সমাজ সেবা কর্মকর্তা। আর কি ভাবে সবার চোখে ফাকিঁ দিয়ে ভুয়া তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান বলে কাগজ তৈরী করা হল এবং কিভাবে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ কাগজ পত্রে স্বাক্ষর করলেন এ নিয়ে উপজেলা জুড়ে তোলপার সৃষ্টি হয়েছে।
    লিখিত অভিযোগ সূত্রে ও স্থানীয় এলাকাবাসী জানান,উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে মৃত ওলি মামুদের ছেলে নুর হোসেন ১৯৭১সালে মুক্তিযোদ্ধে অংশ গ্রহন করেন। দেশ স্বাধীন হবার পর তিনি তাহিরপুর উপজেলার চিসকা গ্রামের মনসুর আলী মেয়ে সাফিয়া বেগমকে বিয়ে করেন। বিয়ের দেড় মাস পর নিঃসন্তান অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধা নূর মিয়া মারা যান। পরির্বতিতে সাফিয়া বেগম দেবর (মুক্তিযোদ্ধা নূর মিয়ার ছোট ভাই) আবুল হোসেনকে বিয়ে করেন। এই সংসারে ৮জন ছেলে মেয়ে রয়েছে। তার মধ্যে ২য় মেয়ে হালিমা আক্তারকে নিঃসন্তান অবস্থায় মৃত নূর মিয়ার সন্তান পরিচয় দিয়ে ভুয়া কাগজপত্র তৈরী করে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলন করছে আবুল হোসেন। কিন্তু হালিমা আক্তারের জাতীয় পরিচয় পত্রে পিতার নাম রয়েছে আবুল হোসেন।

    তার জন্ম তারিখ ১৯৮৭সালে। আর আবুল হোসেন প্রথম সন্তান আকলিমা বেগমের জন্ম তারিখ ১৯৮৬সালে সেখানে তার বাবার নাম আবুল হোসেন নাম লেখা রয়েছে। এখানে উল্লেখ্য আকলিমা বেগম যদি আবুল হোসেনের প্রথম সন্তান হয় তাহলে দ্বিতীয় সন্তান হালিমা আক্তার কিভাবে মুক্তিযোদ্ধা নূর মিয়া সন্তান হয়। স্কুলের খাতায় আর জাতীয় পরিচয় পত্রেই বা কি ভাবে পিতার নাম আবুল হোসেন হয়। সেখানে গলদ দেখা যায়।

    শুধু এখানেই শেষ নয় হালিমার বিয়ের কাবিন নামায়ও পিতার নামের স্থলে আবুল হোসেন লেখা কিন্তু নাম পরিবর্তন করার চেষ্টা করে করেন কৌশলে আবুল।
    এবিষয়ে জানতে চাইলে আবুল হোসেনের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে কথা বা কোন ভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।
    অভিযোগকারী মৃত মুক্তিযোদ্ধার বড় ভাই মিয়া হোসেন বলেন,আমি অভিযোগ দিয়েছি যাতে করে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার পরিচয়দানকারীরা মুক্তিযোদ্ধার ভাতা না পায়। কারন আমার ভাই মারা গেছেন বিয়ের একমাস পর নিঃসন্তান অবস্থায়। এরপর আমার ছোট ভাইয়ের বউ আমার ছোট ভাইয়ের কাছেই বিয়ে বসে। তাহলে কি ভাবে আবুলের ২য় মেয়ে হালিমা আমার মুক্তিযোদ্ধা ভাইয়ের সন্তান হয়। এই সন্তান আবুল হোসেনের সে ভূল তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা তুলে খাচ্ছে। এর বিচার হওয়া দরকার।

    তাহিরপুর উপজেলা সমাজ সেবা মাহবুবুর রহমান জানান,এই বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিবাদী ও বাদী দুই পক্ষকেই প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র নিয়ে আসার জন্য দশ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। কাগজ পত্র দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। প্রয়োজনে ডিএনএ টেষ্ট করা হবে।
    তাহিরপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রফিকুল ইসলাম জানান,এই বিষয়ে আগামী ২নভেম্বর প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র নিয়ে হাজির হবার জন্য দুপক্ষকেই বলা হয়েছে। এরপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।