কমলগঞ্জে এসিড নিক্ষেপ অভিযোগে দেবর আটক:স্ত্রীর অস্বীকার

    0
    511

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৮এপ্রিল,বিক্রমজিত বর্ধনঃ  মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে রোকেয়া বেগম (৪৫) নামে ৫ সন্তানের এক জননীকে এসিড নিক্ষেপ করেছে তারই দেবর ময়ূর মিয়া। ঘটনাটি ঘটে শনিবার ভোর রাতে কমলগঞ্জ উপজেলার ভানুবিল গ্রামে। এ ঘটনায় গৃহবধুর দেবরকে আটক করা হয়েছে বলে জানান, কমলগঞ্জ থানার ওসি মোঃ মোকতাদির হোসেন পিপিএম।

    তিনি জানান, এসিডে গৃহবধুর গলা, কপাল, হাত ও বুকের বেশ কিছু অংশ ঝলসে গেছে। আহত অবস্থায় গৃহবধুকে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করেন।

    এসিড দগ্ধ গৃহবধূ কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের ভানু বিল গ্রামের হোসেন মিয়ার স্ত্রী।

    হোসেন মিয়া সাংবাদিকদের জানান, শনিবার ভোর রাতে তাঁর স্ত্রী রোকেয়া বেগম বাথরুমে যাওয়ার জন্য ঘরের বাইরে বের হন এ সময় ওঁত পেতে থাকা দূর্বৃত্তরা রোকেয়ার গায়ে এসিড নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়।
    কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোকতাদির হোসেন পিপিএম জানান, হোসেন মিয়ার ভাইয়ের সাথে তার জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। এরই জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে কিনা তা তারা তদন্ত করছেন।

    এ ব্যাপারে শনিবার দুপুরে কমলগঞ্জ থানায় রোকেয়ার স্বামী হোসেন মিয়া তার ভাই ময়ূর মিয়া গংদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে ময়ুর মিয়াকে আটক করে পুলিশ।

    মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের প্রধান ডা: সুব্রত রায় জানান, রোকেয়া বেগম সার্জারী বিভাগে চিকিৎসাধীন আছেন। সোমবার মেডিক্যাল বোর্ডের মাধ্যমে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর বোঝা যাবে এটি আসলে এসিড দগ্ধ কি না। তবে কোন না কোন তরল দাহ্য পদার্থ এটি। কারন তার শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যেতে দেখেছেন তিনি।

    এসিডের শিকার গৃহবধুর স্বামী হোসেন মিয়া জানান, জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব শক্রতার জের ধরে তার ছোট ভাই ময়ুর মিয়া ও তার সহযোগী মিলাদ মিয়া এসিড নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়।

    এ ব্যাপারে আদমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আবদাল হোসেন ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মনিন্দ্র সিংহ জানান, জমি সংক্রান্ত বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাদের পারিবারিক বিরোধ চলছিল। তাদের ধারনা এ বিরোধেই এসিড নিক্ষেপের এ ঘটনাটি ঘটতে পারে।

    শনিবার সন্ধায় মৌলভীবাজার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ারুল হক, শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেল এ এস পি আশরাফুজ্জামান, কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মোকতাদির হোসেন পিপিএম ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) নজরুল ইসলাম, উপ-পুলিশ পরিদর্শক কৃষ্ণমোহন দেবনাথ সহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
    এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেল এ এস পি আশরাফুজ্জামান বলেন এ ঘটনায় তারা এসিড আইনে একটি মামলা নিলেও এটি এসিড কিনা তা তারা এখনও নিশ্চিত নন। মেডিক্যাল রিপোর্ট পাওয়ার পর সঠিকভাবে তা বলা যাবে। তবে এর ফলে গৃহবধু রোকেয়ার শরীর ঝলসে গেছে এবং তার পরিধানের শাড়ী পুড়ে গেছে। তাই ওই আইনে মামলা নিয়ে একজনকে আটক করা হয়েছে।

    এ ব্যাপারে ময়ুর মিয়ার স্ত্রী ইয়ারুন বেগম তার স্বামী কর্তৃক রোকেয়া বেগমকে এসিড নিক্ষেপের কথা অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, এটি সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র। আর কমলগঞ্জ থানায় আটক ময়ূর মিয়া পারিবারিক বিরোধের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সম্প্রতি তিনি তাদের উপর আদালতে একটি মামলা করেছেন।