মৌলভীবাজারে ওয়ার্কার্স পার্টির মেয়রের নির্বাচনী ইশতেহার

    0
    216

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৫ডিসেম্বরঃ আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন অভিমূখী অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারায় স্থানীয় সরকারে সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মৌলভীবাজার পৌরসভা নির্বাচনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী সৌমিত্র দেব টিটু এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন।

    বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টায় মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রারম্ভিক সূচনা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়কারী সৈয়দ আমিরুজ্জামান, সমন্বয়কারী পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী, পার্টির জেলা সদস্য আফরোজ আলী, বুলবুল হাসান রাসেল, নজরুল ইসলাম, আউয়াল মিয়া, রুম্মন আহমদ, আবু সাইদ, ফয়েজ আহমদ, উচ্ছাস দেব, পারভেদ আহমদ, শাহেদ মিয়া ও সাজু আহমদ প্রমূখ।

    নির্বাচনী ইশতেহার নিম্নে হুবহু তুলে ধরা হলো:আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন অভিমূখী অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারায় স্থানীয় সরকারে সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মৌলভীবাজার পৌরসভা নির্বাচনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী সৌমিত্র দেব টিটুর নির্বাচনী ইশতেহার।

    পরিচ্ছন্ন-সবুজ-আলোকিত-মানবিক মৌলভীবাজারের এবার সমাধানযাত্রা

    প্রিয় ভাই ও বোনেরাঃসংগ্রামী শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন অভিমূখী অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারায় স্থানীয় সরকারে সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মৌলভীবাজার পৌরসভা নির্বাচনে আমি বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী। শুরুতেই আমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ, সম্ভ্রম হারানো ২ লাখ মা-বোনসহ সকল মুক্তিযোদ্ধা, জাতির জনক ও স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, কমরেড মনি সিং, কমরেড মোজাফ্ফর আহমদ, কমরেড রাশেদ খান মেননসহ সকল বীর সংগ্রামীদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণের মধ্য দিয়ে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করছি।

    পাশাপশি আপনারা জানেন, নির্বাচনের একদিন পরই সবচেয়ে বড় সার্বজনীন উৎসব ইংরেজী নববর্ষ ২০১৬। আমি আপনাদের মাধ্যমে মৌলভীবাজার পৌরসভার সকল নাগরিকদের জানাচ্ছি ইংরেজী নববর্ষের আগাম শুভেচ্ছা।

    প্রিয় বন্ধুগণ,আপনারা জানেন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মাননীয় মন্ত্রী জননেতা কমরেড রাশেদ খান মেনন এমপি‘র আহবানে সাড়া দিয়ে আমি মৌলভীবাজার পৌর নির্বাচনে অংশ নিয়েছি।

    এই নির্বাচনে যারা মেয়র ও কাউন্সিলার পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাদের সবাইকে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ও আমার পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

    আমি আশাবাদী, আমরা সবাই মিলে আগামী প্রজন্মের জন্য এশটি সুন্দর ও নিরাপদ পর্যটন বান্ধব মৌলভীবাজার শহরকে গড়ে তুলতে পারবো।

    বেশ পুরনো ঐতিহাসিক ্এই শহর মৌলভীবাজারের পরতে পরতে লুকিয়ে আছে ইতিহাস, ঐতিহ্য ও বিনির্মাণের গল্প। ১৮৮৭ সালে মৌলভীবাজার পৌরসভার যাত্রা শুরু। এরপর শুধু সামনের দিকে এগিয়েছে।

    বন্ধুরা,২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশের কাতারে দাড়াতে চায় বাংলাদেশ। রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির এই যাত্রাতেও সামনে থেকে অংশ নিচ্ছে আমাদের শহর মৌলভীবাজার। অথচ এই শহরটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। গণমাধ্যমের এমন খবর চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য টেকসই ও সৃষ্টিশীল শহর নির্মাণ ছাড়া অন্য কোন বিকল্প আমাদের সামনে নেই।

    সরকার গত ৬ বছরে মৌলভীবাজার পৌরসভার উন্নয়নে বহু কাজ করেছে। আরো বহু কর্মসূচী হাতে নিতে হবে। ক্ষমতায়নসহ সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন অভিমূখী অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারায় সুশাসন নিশ্চিত করা গেলে মৌলভীবাজার শহরের চেহারা বদলে যাবে। মৌলভীবাজারবাসী হিসেবে আপনারা গর্ববোধ করবেন। এই শহরে বহু সমস্যা বিদ্যমান, যা সমাধানে প্রয়োজন একজন প্রগতিমূখী সৎ নিষ্ঠাবান নির্বাচিত প্রতিনিধি। যিনি জনগণ ও সরকারের হয়ে পৌর নাগরিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ সমস্যার সমাধান করবেন।

    প্রতিটি শহর নির্মাণের পেছনে একটি দর্শন থাকে, যার ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে নাগরিক সংস্কৃতি, মূল্যবোধ, মানবিকতা, জীবনাচরণ, উন্নয়ন পরিকল্পনা ও শহরটির ভবিষ্যৎ। জনগণ যদি আমাকে নির্বাচিত করে, তবে প্রথমেই মৌলভীবাজার শহরকে দার্শনিক ভিত্তির ওপর দাড় করানোর প্রয়াস নেবো। শহর বিনির্মাণে আমাদের দর্শন হচ্ছে ধনী-গরীব সকলের জন্য মানবিক ও পর্যটনবান্ধব এক মৌলভীবাজার। যেখানে নাগরিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হবে সবকিছুর ওপরে। মানুষের অধিকার থাকবে সুরক্ষিত।

    আরেকটি বিষয় হলো শহরের প্রতি মালিকানাবোধ। শহরকে পরিবার বা বাড়ির মতো করে দেখতে পারাটা আমার কাছে খুবই জরুরী। আমি এভাবেই ভাবি। আর ভাবি বলেই মৌলভীবাজার আমার কাছে আলাদা কিছু নয়। আমি, আপনি, আমরা- এই আমরাই মৌলভীবাজার।

    বন্ধুরা,গবেষণা বলছে, যে কোনো শহর গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ সড়ক থাকার কথা, মৌলভীবাজারে আছে খুবই কম। শহরের মোট ভূখন্ডের ২৫ শতাংশ সবুজ বনায়নের কথা থাকলেও, মৌলভীবাজারে এ হার খুবই কম। অপরিকল্পিত নগরায়নই এর প্রধান কারণ।

    আপনারা জানেন, নগরায়নের চাপে থাকা আমাদের এই শহর মারাত্মক পরিবেশ, প্রতিবেশ, স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে আছে।

    আপনারা জানেন, নগরায়নের চাপে থাকা আমাদের এই শহর মারাত্মক পরিবেশ, প্রতিবেশ, স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে আছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে সবার আগে প্রয়োজন সুষ্ঠু পরিকল্পনা, সঠিক নেতৃত্ব এবং শহরের পরিবেশ-অবকাঠামোগত দক্ষতা ও সুযোগ বৃদ্ধি করা। উন্নয়নের প্রশ্নে সকল ক্ষেত্রে সমতা ও ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা করা। মৌলভীবাজার শহরের সমস্যা বেশী, পর্যাপ্ত অর্থ নেই। তবে পরিশ্রমী, সৃষ্টিশীল, উদ্যমী ও স্বপ্নকাতর শহরবাসী আছে এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা। জনগণের সহযোগীতায় মৌলভীবাজার শহরকে পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যসম্মত ও সচল রাখা সম্ভব।

    বন্ধুরা, মৌলভীবাজার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের শহর, আবেগের শহর, ¯িœগ্ধতার শহর, লড়াই সংগ্রাম-প্রতিবাদের শহর, অর্জনের শহর, গৌরবের-গর্বের শহর। মৌলভীবাজার আমাদেরই শহর, ফলে এ শহর নিয়ে তো আমাদেরই ভাবতে হবে। আমাদেরই গড়তে হবে।

    প্রিয় ভাই-বোন-বন্ধুরা,যদি আমরা সবাই উদ্যোগী হই, দৃষ্টিভঙ্গী প্রসারিত করি, ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে শহর বিনির্মাণে অংশ গ্রহণ করি, তবে অবশ্যই মৌলভীবাজার শহরে দৃশ্যমান পরিবর্তন আসবেই। যার নেতৃত্বে থাকবে জনগণ, আমি তাদের সাথে থাকতে চাই। আমি নাগরিকদের কাছ থেকে জানতে চাই, শুনতে চাই, শিখতে চাই। জানাতে ও দেখাতে চাই, আমরা যে পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখি। আইনে কাজ নির্দিষ্ট করে দেওয়া হলেও মেয়রের আইনী কর্তৃত্বের অভাব আছে। অন্যদিকে নাগরিকদের সেবা নিশ্চিত করতে মেয়রকে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার ওপর নির্ভর করতে হয়। পৌরসভা এবং এসব সংস্থা একসঙ্গে সক্রীয় হলেই কেবল সর্বোচ্চ নাগরিকসেবা দেওয়া সম্ভব। মৌলভীবাজার শহরের নাগরিকরা আমাকে নির্বাচিত করলে, সর্বোচ্চ নাগরিকসেবা নিশ্চিত করতে পারবো বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

    বন্ধুরা, আমি পৌর এলাকার পিতা নয়, নাগরিকদের বন্ধু হতে চাই। মেয়র বলতে আমি বুঝি, মেয়র হচ্ছেন সব শ্রেণির নাগরিকদের সেই প্রতিনিধি, যিনি নাগরিকদের হয়ে শহরে সমতা, কল্যাণ আর ন্যায় প্রতিষ্ঠায় কাজ করেন।

    প্রিয় ভাই বোনেরা,মৌলভীবাজারের সমস্যা ও সমাধান জানতে আমি বিভিন্ন শ্রেণিপেশার নাগরিকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মত বিনিময় করেছি। নাগরিকদের মতো আমারও আকাংখা ‘সুন্দর সমৃদ্ধ মৌলভীবাজার’। আমি এই শহরের প্রতিটি সমস্যা ও তার সম্ভাব্য নির্দিষ্ট সমাধান সম্পর্কে সচেতন। জনগণ নির্বাচিত করলে পাঁচ বছরের মধ্যে মৌলভীবাজার পৌরসভা নির্দিষ্ট একটি বৈশিষ্ট নিয়ে নাগরিকদের সামনে দৃশ্যমান হবেই এ আমার প্রতিশ্রুতি।

    প্রিয় ভাই ও বোনেরা,আমি আপনাদের মাধ্যমে নাগরিকদের পরিষ্কার করে জানাতে চাই, দুর্নীতির সঙ্গে আমার চিরকালের শত্রুতা। এ বিষয়ে আমি কোন আপোষ করব না । নির্বাচিত হলে সব সেবা পর্যায়ক্রমে হবে দুর্নীতিমুক্ত। নাগরিকদের সহযোগীতায় প্রতিষ্ঠানটিকে পেশিশক্তি, মাস্তানী, অনৈতিক প্রভাব বলয় থেকে মুক্ত রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। আমার প্রতিক ‘হাতুড়ি’। আমি শহরবাসীকে অনুরোধ জানাই, আমাকে ভোট দিন। আপনার স্বপ্নের শহর গড়তে ‘হাতুড়ি’ মার্কায় ভোট দিন।

    পরিচ্ছন্ন, সবুজ ও পরিবেশবান্ধব মৌলভীবাজার ঃনাগরিকদের সু-স্বাস্থ্য শহর ব্যবস্থাপনায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজের একটি। পরিচ্ছন্ন ও সবুজের সঙ্গে নাগরিকের স্বাস্থ্যের বিষয়টি জড়িত। স্বাস্থ্যের সঙ্গে জড়িত সরাসরি উৎপাদন ও উন্নয়নের সম্পর্ক। তাই সবার আগে নিশ্চিত করতে চাই পরিচ্ছন্ন, সবুজ এবং পরিবেশবান্ধব মৌলভীবাজার।

    আমরা যা করতে চাইঃরাস্তাঘাট, বাসা-বাড়ী নির্মাণ এবং শহর পরিকল্পনায় সবুজকে প্রাধান্য দেওয়া হইবে। সবুজ মৌলভীবাজার গড়ে তুলতে এলাকাভিত্তিক পরিকল্পিত বনায়ন করা হবে। বাড়ীভিত্তিক সবুজায়ন উৎসাহিত করা হবে।

    এলাকাভিত্তিক জলাবদ্ধতা দূরীকরণে স্থানীয় এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ সাপেক্ষে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

    আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা আমাদের লক্ষ্য। শহর পরিচ্ছন্ন রাখতে ও আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে বিশেষজ্ঞ ও দাতাদের সহায়তা নেওয়া হবে।

    গৃহস্থালী বর্জ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে বাসা বাড়িতে তিন রঙ্গের বিন (ময়লা রাখার পাত্র) সরবরাহ করা হবে। যেখানে শহরবাসী জৈব, লোহা ও প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ্য আলাদা বিনে সংরক্ষণ করবে। পাশাপাশি প্রধান সড়কগুলোর দু’পাশে ময়লা ফেলার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে আলাদা বিন বসানো হবে।

    নিরাপদ স্বাস্থ্যকর মৌলভীবাজারঃরাষ্ট্রবিজ্ঞানী এরিষ্টটল বলেছেন মানুষ শহরে আসে জীবিকার আশায়, আর এসে স্থায়ীভাবে থেকে যায় উন্নত ও সুন্দর জীবনে প্রতাশায়। উন্নত ও সুন্দর জীবনের জন্য সবার আগে প্রয়োজন নিরাপদ স্বাস্থ্যকর নগর।

    আমরা যা করতে চাই ঃশহরের ভেতরে সব ড্রেন, নালা ও মশা উৎপাদিত হয় এমন জায়গা গুলোতে নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হবে। শহর স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে স্বল্প-নি¤œ আয় নাগরিকদের জন্য সুলভে চিকিৎসা দেওয়া হইবে।শহরের পাঁচটি জোনে সকলের জন্য আধুনিক শৌচাগার নির্মাণ করা হবে।

    শহরের সড়কগুলোকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে। স্কুলে হেল্থ প্রোগ্রাম চালু করা হবে। প্রতিটি সড়কে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    মানবিক উন্নয়নে মৌলভীবাজারঃশহরের দু’টি দিক থাকে, একটি হচ্ছে ফাংশনাল বা কার্যকরি অন্যটি হচ্ছে ভিজ্যুয়াল বা বাহ্যিক রূপ। কার্যকরি ব্যবস্থার দিক থেকে শহরে জাতীয় আদর্শাবলীর প্রতিফলন থাকা দরকার। মানবিক মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করেই শহরের কর্মসংস্থাননীতি, গৃহসংস্থাননীতি, যান-বাহন- যোগাযোগ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার বণ্টন পরিকল্পনা হওয়া উচিৎ। আমরা বিশ্বাস করি, মুষ্টিমেয়ের জন্য সুন্দর শহরের চেয়ে সংখ্যাগরিষ্টের মানবিক শহর বানানোতেই মৌলভীবাজারের ভবিষ্যত নিহিত।

    আমরা যা করতে চাই ঃমৌলভীবাজার হবে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান উপযোগী শহর। প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে আধুনিক ডে-কেয়ার সেন্টার কাম প্রি-স্কুল করা হবে।

    ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সহায়তা দেবার জন্য তাদের ডাটাবেইজ তৈরী করা হবে ঃ ব্যাপকমাত্রায় কর্মসংস্থান ও নতুন উদ্যোক্তা তৈরীর কর্মসূচি নেওয়া হবে।স্বল্পআয়ের মানুষের জন্য পর্যায়ক্রমে স্বল্পমূল্যের বাসস্থান নির্মাণ করা হবে।

    সাংবাদিক, শিল্পী, সাহ্যিত্যিক, সংস্কৃতিকর্মীদের জন্য আকর্ষণীয় আর্থিক মূল্যের মৌলভীবাজার পৌরসভা বেস্ট রিপোর্টিং এ্যাওয়ার্ড চালু করা হবে।

    স্মার্ট ও ডিজিটাল মৌলভীবাজার ঃদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৫ শতাংশ তরুন। এই তরুনদের আলাদা দিক আছে। বিশ্বকে নিজেদের মতো করে দেখতে ও দেখাতে চায়। নিজেদের তারা একটি স্মার্ট শহরের অধিবাসী হিসেবে দেখতে চায়।

    আমরা যা করতে চাই ঃপৌরসভার উদ্দ্যোগে একটি ই-লাইব্রেরীর প্রতিষ্ঠা করা হবে। নাগরিক সমস্যা জানানো, সেবা সুবিধা এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সমৃদ্ধ মোবাইল অ্যাপ চালু করা হবে।ডিজিটাল পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে।

    ডিজিটাল শহর বুলেটিন বোর্ড করা হবে। যেখানে প্রতিনিয়ত ব্রেকিং নিউজ পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেখানো হবে। মোবাইল লাইব্রেরীর ব্যবস্থা করা হবে।

    শহরের মানচিত্র বা টাউন ম্যাপ করা হবে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বড় বড় মানচিত্র টানানো হবে। পর্যটকদের জন্য আলাদা গাইড ম্যাপ বা নেভিগেশন ম্যাপ করা হবে।

    নাগরিকদের মনোনীত নয় ওয়ার্ডের ৩২ মহল্লার ৬৪জন সু-নাগরিককে প্রতিবৎসর পুরস্কৃত করা হবে।

    অংশগ্রহণমূলক ও সুশাসিত মৌলভীবাজার ঃজনগণের অংশগ্রহণ, নেতৃত্ব ও মতামত ছাড়া কোন প্রতিষ্ঠান সত্যিকারের জনগণের হয়ে ওঠে না বলে আমি মনে করি। পৌরসভা জনগণের প্রতিষ্ঠান, যার দায়িত্বই হচ্ছে জনগণকে সেবা দেওয়া। ফলে দক্ষ ও মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করতে হলে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণমূলক মৌলভীবাজার পৌরসভা গড়ে তুলতে চাই আমি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে উন্নতমানের সেবা আর সুশাসন।

    আমরা যা করতে চাইঃ পৌরসভা হবে দুর্নীতিমুক্ত। দুর্নীতি বন্ধে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করা হবে। নাগরিকসেবা, অভিযোগ ও সমস্যা সমাধানে ২৪ ঘন্টা হটলাইন চালু করা হবে। একটি পৌর তথ্য কেন্দ্র খোলা হবে। যেখানে পৌরবাসী তার প্রতিটি সেবার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাবে।

    ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সভা ও নাগরিকদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    পৌর এলাকার উন্নয়ন, পরিকল্পনা প্রণয়নে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি উপদেষ্টা কাউন্সিল বা পরামর্শক কমিটি করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের আগে নাগরিকদের মতামত নেওয়া হবে।

    বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি দেশে একটি কার্যকর স্থানীয় ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য সংগ্রাম করছে, আর তাই পৌরসভার আর্থিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতায়নের জন্য নি¤েœাক্ত দাবীসমূহ তুলে ধরছে ঃ

    ১। পৌরসভাকে কার্যকর ও শক্তিশালী করতে হবে এবং সেই লক্ষ্যে আইন ও বিধিসমূহের প্রয়োজনীয় সংশোধন ও সংস্কার করতে হবে।

    ২। উন্নয়ন তহবিলের বরাদ্দ জাতীয় বাজেটের মাধ্যমে সরাসরি পৌরসভাকে প্রদান করতে হবে, যাতে পৌরসভা স্বাধীনভাবে উন্নয়ন ও পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারে।

    ৩। জনসংখ্যা, এলাকার পশ্চাৎপদতা, পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর চাহিদার ভিত্তিতে বরাদ্দ নীতি নির্ধারনের জন্য কমিশন গঠন করতে হবে।

    ৪। আইন শৃঙ্খলার তদারকিতে পৌরসভাকে কার্যকর ভূমিকা পালনে দায়িত্ব প্রদান করতে হবে।

    ৫। স্থানীয় সম্পদের উপর পৌরসভার পূর্ণাঙ্গ নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবার-পরিকল্পনা, উন্নয়ন, পরিবেশ, প্রশাসন বিষয়ে পৌরসভার নিয়ন্ত্রন ও দায়িত্ব প্রদান করতে হবে।

    ৬। শহর পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন, ও স্থানীয় সম্পদ পৌরসভার দায়িত্বে প্রদান করতে হবে।

    ৭। কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলারদের মর্যাদা ও কাজের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব প্রদান করতে হবে।

    ৮। মেয়র, কাউন্সিলার ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলারসহ পৌরসভার নিয়োজিত বিভিন্নস্থরের সাধারণ কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করতে হবে। এবং তাদের পূর্ণ মর্যাদা প্রদান করতে হবে। এবং পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলার ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলারদের স্বেচ্ছা তহবিলের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি