মৌলভীবাজার হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের প্রস্তুতি সভা

    0
    207

    আমারসিলেট24ডটকম,২৮ডিসেম্বরঃ আগামী ৩০ জানুয়ারি’১৫ মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ২৩০৫ এর ৪র্থ সম্মেলনকে সামনে রেখে ২৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির এক সভা চৌমুহনাস্থ কার্যালয়ে অনুষ্টিত হয়। সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মোঃ মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মীর মোঃ জসিমউদ্দিন।

    সভায় বক্তব্য রাখেন হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের জেলা কমিটির সহ-সভাপতি আব্দুল আজিজ, হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সদর উপজেলা কমিটির সভাপতি তারেশ বিশ্বাস সুমন, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক মোঃ শাহিন মিয়া ও সদস্য রুহুল আমিন প্রমূখ।

    সভায় বক্তারা বলেন চাল ,ডাল, তেল, লবনসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল জিনিষপত্রের উর্ধ্বগতির এসময়ে দেশের অন্যান্য শ্রমজীবী মানুষের মতো আমরা হোটেল শ্রমিকরাও নিদারুন দুঃখ-কষ্ঠের সাথে জীবন ও জীবিকা নির্বাহ করতে বাধ্য হচ্ছি। তার উপর ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’ হিসেবে আসছে গ্যাসের মূল্য দ্বিগুণ বৃদ্ধির সাথে সাথে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির সরকারি ঘোষণা। গ্যাস খাতে সরকার লাভজনক অবস্থায় থাকলেও সাম্রাজ্যবাদী প্রভূর স্বার্থে আইএমএফের নির্দেশে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করতে চাচ্ছে।

    গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধিতে যেমন বাড়িভাড়া, গাড়িভাড়াসহ সকল নিত্যপণ্যে মূল্য বৃদ্ধিতে প্রভাব পড়বে, তেমনি সরকারের নতুন পে-স্কেল ঘোষণার সাথে সাথেই আবারও সকল ক্ষেত্রে মূল্য বৃদ্ধি ঘটবে। তাই আগামীতে দফায় দফায় মূল্য বৃদ্ধির কষাঘাতে জর্জরিত হবে দেশের শ্রমজীবী জনতার। বর্তমানে আমরা যে মজুরি পাই তা দিয়ে মাসের ১০ দিনও পরিবার-পরিজনও নিয়ে দুবেলা দুমুঠো ডাল-ভাল জুটানো দায় হয়ে পড়ে। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের পর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ২০০৯ সালের ২৪ নভেম্বর সরকার হোটেল সেক্টরে কর্মরত শ্রমিকদের জন্য নিম্নতম মজুরির গেজেট প্রকাশ করছিল, যা তখনকার সময়েই দ্রব্যমূল্যের সাথে সংগতিপূর্ণ ছিল না।

    তারপর ২০১২ সালের ২৬ এপ্রিল বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশন রেজিঃ নং- বিঃ ২৩০৭ এর সাথে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরি কার্যকর ও শ্রম আইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চুক্তি করলেও মালিকপক্ষ তা কার্যকর করেননি। এমনকি মালিকরা দেশের প্রচলিত শ্রম আইনের কোন তোয়াক্কা করেন না।

    সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরি ও শ্রমআইন বাস্তবায়নের প্রেক্সিতে বারবার আবেদন নিবেদন করা সত্ত্বেও সরকারের শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা রহস্যজনক কারণে কার্যকর কোন ভূমিকা গ্রহণ করেন না। হোটেল শ্রমিকরা দৈনিক ১০/১২ ঘন্টা অমানবিক পরিশ্রম করে অর্ধাহারে-অনাহারে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। তাই আজ প্রয়োজন হোটেল সেক্টরে নতুন মজুরি বোর্ড গঠন করে বাজারদরের সাথে সংগতি পূর্ণ ন্যায্য মজুরি ঘোষণা করা।

    সভায় বক্তারা বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণ ন্যায্য মজুরি, সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরির গেজেট কার্যকর, শ্রমিকদের জন্য রেশনিং চালু, ৮ ঘন্টা কর্ম দিবস, নিয়োগ পত্র, পরিচয় পত্রসহ শ্রম আইন বাস্তবায়ন, শ্রীমঙ্গলে স্থায়ী শ্রম আদালত ও যুগ্ম-শ্রম পরিচালকের কার্যালয় স্থাপন করার দাবি জানান।