মানুষের পদচারণায় মুখরিত ছিল দ্বীপশিখা প্রজ্জ্বলনের মাঠ
আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২১ফেব্রুয়ারি,নড়াইল প্রতিনিধিঃ “অন্ধকার থেকে মুক্ত করুক একুশের আলো”- এ শ্লোগানকে সামনে রেখে জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে ভিন্নরকম আয়োজনের মধ্য দিয়ে লাখো মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে নড়াইলে পালিত হয়েছে ২১ শে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ২১ ফেব্র“য়ারি সন্ধ্যায় সূর্য অস্ত যাবার সাথে সাথেই সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের মাঠে ( কুড়িডোব মাঠে) ৬ একর জমির উপর প্রায় ৩ হাজার কর্মী এক লাখ মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানালো ভাষা সৈনিকদের।।
মুহুর্ত অন্ধকার ছাপিয়ে সারামাঠ আলোকিত হয়ে যায়। আলোর বর্ণিল ছটায় আলোকিত হয় শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বিভিন্ন বর্ণমালা, আল্পনাসহ গ্রাম বাংলার নানা ঐহিত্যবাহী নকশা। দৃষ্টি নন্দন এসব নকশা নড়াইলবাসীসহ ঢাকা ও বিভিন্ন জেলা থেকে আগত দর্শনার্থীরা উপভোগ করেন।
নড়াইলের সব পথ, অলিগলি যেন মিশে যায় কুড়িডোব মাঠ এলাকায়। কেউ পায়ে হেটে, কেউ ভ্যানে বা রিক্সায় চড়ে, কেউবা প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল নিয়ে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন দেখেন। সব চোখ গিয়ে পড়ে বাহারি আলোর বর্ণিলছটায়। এ ছাড়া ৬৭তম ভাষা দিবস উপলক্ষে ৬৭টি ফানুষ ওড়ানো হয়।
সন্ধ্যা ৬টার দিক একুশের আলো নামে একুশ উদ্যাপন পর্ষদ-২০১৮ আয়োজিত প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের উদ্ধোধন করা হয়। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোঃ এমদাদুল হক চৌধুরি ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন,নড়াইল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাড.সোহরাব হোসেন বিশ্বাস , পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম, নড়াইল পৌরসভার মেয়র মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন বিশ্বাস, উদযাপন পর্ষদের আহবায়ক প্রফেসর মুন্সী হাফিজুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডঃ সুবাস চন্দ্র বোস,সাধারণ সম্পাদক মোঃ নিজামউদ্দিন খান নিলু , ,উদযাপন পর্ষদ এর সদস্য সচিব কচি খন্দকার. সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মলয় কুমার কুন্ডু, শরফুল আলম লিটু , শামীমুল ইসলাম টুলু প্রমুখ।
এর আগে বিকেলে আলোচনা, গণসঙ্গীত, আবৃতি, কবিতা পাঠ ও দেশাক্তবোধক গানের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের আর্থিক সহায়তা করেছে স্কয়ার এবং মিডিয়ার পার্টনার ছিল মাছরাঙ্গা টেলিভিশন ।
ভাষা শহীদদের স্মরণে নড়াইলে ব্যতিক্রমী এ আয়োজনের শুরু হয় ১৯৯৭ সালে নড়াইলের সুলতান ম চত্বরে । প্রথম বছর মাত্র ৭০০ মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে এ আয়োজনের যাত্রা শুরু হয়। এরপর আর থেমে থাকেনি। একুশ এলেই এভাবে স্মরণ করা হয় ভাষা শহীদদের। এখন বেড়েছে এর পরিধি। এবার মাটির প্রদীপ ও মোমবাতি মিলিয়ে ১ লাখ প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে পালিত হলো অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
নড়াইল পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম জানিয়েছেন, দেশের সর্ববৃহত দ্বীপশিখা প্রজ্জ্বলন এর আয়োজনকে ঘিরে ব্যপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। পুলিশের কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায় শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হলো ২১ উদযাপনের আয়োজন।