লোহাগড়ায় অভূক্ত পরিবারের খাবার যোগাতে গিয়ে

    0
    225

    প্রতিপক্ষের হাতুড়ি পেটায় ভ্যানচালক গুরুতর আহত, হাসপাতালে ভর্তি!

    নড়াইল প্রতিনিধি: করোনা ভাইরাস আতঙ্কে দেশব্যাপী যখন চরম আতঙ্ক আর উৎকন্ঠায় সময় কাটাচ্ছে। ভয়ে বাড়ি থেকেকেউ বের হচ্ছে না। তখন পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার তুলে দেয়ার আশা নিয়ে রাস্তায় ভ্যান নিয়ে বের হয়েছিলেন লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের চালিঘাট গ্রামের দরিদ্র ভ্যান চালক ইউসুফ মোল্যা (৫৫)।
    সোমবার (৩০ মার্চ) সকাল ৯টার দিকে গন্ডব বটগাছ তলায় পৌঁছানোর পর প্রতিপক্ষের লোকজন তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলোপাথাড়িভাবে মারপিট করে। পরিবারের সদস্যরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।
    এলাকাবাসীসূত্রে জানাগেছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশত্রুতার জের ধরে কাশিপুর ইউনিয়নের চালিঘাট ও গন্ডবগ্রামের সমন্বয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেন জেলা পরিষদের সদস্য গন্ডব গ্রামের সুলতান মাহমুদ বিপ্লব, আশরাফ আলী মাষ্টার ও সাহেব সিকদার। অপরপক্ষের নেতৃত্ব দেন গন্ডব গ্রামের মিরাজ মোল্যা, আহম্মেদ আলী মোল্যা ও মোস্তফা ডাক্তার।
    আহত ইউসুফ মোল্যা মিরাজ মোল্যার দলের সমর্থক। আর এই অপরাধে তাকে নির্মমভাবে মারপিট করা হয়েছে। এছাড়া গন্ডব গ্রামের চন্নু ম্যোাকে (৪০) মারধর করে আহত করা হয়েছে।
    আহত ইউসুফ মোল্যার ভাই শাহজাহান বলেন, ‘ ইউপি সদস্য সলেমান শেখের ছেলে সজিব শেখ (৩২), জসিম শেখ (৩০), আশরাফুলের ছেলে আব্দুল্লাহ, সলেমান গাছির ছেলে গুলু সহ তাদের দলের বেশ কয়েকজন আমার ভাইকে ঘিরে হাতুড়ি ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে। আমার ভাই ভ্যান চালিয়ে তার সংসার চালায়। করোনা ভাইরাসের কারনে রোজগার কমে গেছে। চাল-ডাল কেনার জন্য আয়-রোজগার করতে রাস্তায় বের হয়েছিলেন। কিন্তু বিনা কারনে আমার ভাইকে মেরে গুরুতর জখম করেছে। হামলাকারীদের বিচার চাই।’
    এ ব্যাপারে প্রতিপক্ষের মাতুব্বর স্কুল শিক্ষক আশরাফ আলী বলেন,‘ শুনেছি ইউসুফ মোল্যাকে মারধর করেছে। ভ্যানে যাত্রী নিয়ে যাবার সময় একজন মুয়াজ্জিনের পায়ের ওপর ভ্যান উঠে যাওয়ার ঘটনায় তর্ক-বিতর্ক হয়। এ ঘটনায় গ্রামের কিছু ছেলেরা মারধর করেছে।’
    নড়াইল সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক শামস্ ইবনে করিম বলেন,‘ আহত ইউসুফ মোল্যাকে জরুরী বিভাগে আনা হলে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এক্সরে করতে বলা হয়েছে। এক্সরে রিপোর্ট পেলে বোঝা যাবে হাঁড় ভাঙ্গা আছে কিনা।’
    লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, ‘ খবর শোনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। এলাকায় যাতে আর কোন অশান্তি সৃষ্টি না হয় সেজন্য স্থানীয় ঈমাম সহ গন্যমান্য ব্যক্তিদের অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া করোনার কারনে ভ্যান চালকসহ অসহায় দরিদ্র মানুষদের স্থানীয়ভাবে সহযোগিতার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।