শিশুটির যায়গা গাড়ির ভিতরে হলোনা কেন ?

    0
    276

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৪সেপ্টেম্বরঃ দিনটি বৃহস্পতিবার ১৪ সেপ্টেম্বর আজ দুপুর ২ টা মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলা শহরের হবিগঞ্জ রোডস্থ ১ নং পুল রিক্সা যোগে পার হয়ে এক আত্মীয়ার বিবাহ অনুষ্ঠানে যাবার কালে মহাসড়কে হঠাৎ নজরে পরে একটি জীপ গাড়িতে পিছনে বাঁধা  এক্সট্রা চাকায় একটি শিশু বসা রয়েছে!চলন্ত গাড়িটিতে দেখা যাচ্ছে ভিতরে কয়েকজন যাত্রী বসা ছবি তুলতে দেখে একজন মাথা লুকিয়ে ফেলে।ভাবছিলাম কোন পিতা বা ভাই কি গাড়ির ভিতরে বসে তার আদরের শিশুটিকে কোন চলন্ত গাড়িতে এমন ঝুকিপুর্ন স্থানে বসিয়ে রাখবে? উত্তর আপনাদের কাছে।আর একটি  প্রশ্ন নিশ্চয় ট্র্যাফিক পয়েন্ট পার হয়ে এসেছে জীপটি তাহলে ট্র্যাফিক স্যারের নজর এড়ালো কিভাবে? স্যারদের নজরে তো অনেক কিছুই এড়াতে পারে না!

    যাই হোক বাংলাদেশে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুদের অংশগ্রহণ নতুন নয়৷দেশের বাস্তব প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে অনেকে হয়ত বলবেন, শিশুটি কাজ করেন আর শ্রমে থাকাই উচিত৷কেননা এ সব শিশু টিকে আছে পরিশ্রম করে৷ কাজ না করলে তাদের খাওয়াবে কে? দেখবে কে? তাছাড়া তাদের পরিবারও টিকে আছে তাদের আয়ের উপর৷ মোটের উপর কাজ করলে সেটা অনেক পরিবারের জন্যও ভালো৷ আমার কাছে এ সব যুক্তি শিশুশ্রমের যৌক্তিক কারণ মনে হয় না৷একটা শিশুকে কাজের মধ্যে ঠেলে দিয়ে একটা সুন্দর সম্ভাবনাকে কার্যত শুরুতেই মাটি চাপা দেয়া হয়৷ আর এর দায় আমাদের সবার, এবং অবশ্যই জনগণের প্রতিনিধি সরকারের৷আজ যদি এমন অবস্থা থেকে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যায় তাহলে পরিবার বা সমাজের জন্য আরও বুঝা হয়ে যেতে পারে না কি?

    প্রশ্ন উঠতে পারে, শিশুশ্রম কি ক্ষতিকর? কাজ করবে এর মধ্যে আবার ক্ষতির কী আছে? ক্ষতিটা মানসিক এবং শারীরিক৷ বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে শিশুরা মূলত কাজ করে এমন সব প্রতিষ্ঠানে যেগুলোর আনুষ্ঠানিক তেমন কোনো ভিত্তি নেই৷এ সব প্রতিষ্ঠানে কাজের নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই, নিয়মকানুন মানার বিধিনিষেধ নেই, কোনটা শিশুর জন্য ক্ষতিকর তা বিবেচনার ব্যবস্থা নেই৷ এমন পরিবেশে কাজ করে শিশুরা অল্প বয়সেই বিভিন্ন রোগের কবলে পড়ে যায়৷ পরিশ্রমের ক্লান্তির কারণে, পর্যাপ্ত সময় না থাকায় লেখাপড়া থেকে কার্যত ছিটকে পড়ে৷

    শিশুশ্রমিক হিসেবে কাজ করতে গিয়ে শিশুরা প্রতিনিয়তই নিগ্রহেরও শিকার হচ্ছে৷ গৃহকর্মীদের উপর নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র আমরা সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকবার দেখেছি৷ বাংলাদেশে কিছু মানুষ সম্ভবত শিশুদের নির্যাতন করে একরকম পৈচাশিক আনন্দ লাভ করেন৷ সর্বশেষ এক ক্রিকেটার এবং তাঁর স্ত্রীর হাতে নির্যাতনের শিকার এক গৃহকর্মীর ছবি দেখে আমার তাই মনে হয়েছে৷ আমরা সেই নির্যাতন দেখেছি বলে আঁতকে উঠছি, কিন্তু এ রকম হয়ত আরো অনেক গৃহকর্মী প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার হয়ে বেড়ে উঠছে, যাদের দেখার কেউ নেই৷ শিশুশ্রম এবং শিশুদের যেমন তেমন কাজ বন্ধ না হলে বড়দের প্রতি শিশুদের একদিন সম্মান প্রদর্শন যাদুঘরে উঠে যাবে।শিশুটির যায়গা গাড়ির ভিতরে কেন হলোনা বয়সে সিনিয়র অনেক ভাই বাবা তুল্য লোক ওই গাড়িতেই রয়েছে তাহলে প্রশ্নটি থেকেই গেলো তার যায়গা কেন চাকার উপর ?লেখকঃআব্দুল মজিদ,সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রীমঙ্গল অনলাইন প্রেস ক্লাব,পরিচালক সদস্য,এনিমেটরস বাংলা মিডিয়া গ্রুপ।