৩০০ ঋণখেলাপির তালিকা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী

    0
    257

    অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আজ জাতীয় সংসদে দেশের শীর্ষ ৩০০ ঋণখেলাপির তালিকা প্রকাশ করেছেন। একই সাথে তিনি খেলাপি ঋণের পরিমাণ ও  খেলাপিদের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ার তথ্যও দিয়েছেন। তবে, অর্থমন্ত্রীর তালিকাভুক্ত ৩০০ শীর্ষ ঋণ খেলাপির রাজনৈতিক পরিচয় বা খেলাপি অর্থ আদায়ের জন্য সরকার গৃহীত প্রসঙ্গে কিছুই খোলাসা করা হয় নি।

    এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক মহল ও অর্থনীতিবিদরা জোর দাবি করেছেন, ঋণখেলাপিদের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষক কারা তাদের নাম-পরিচয়ও প্রকাশ করা হোক। একইসাথে এ বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায়ে সম্পত্তি ক্রোকসহ কারাদণ্ডের ব্যবস্থা করা হোক। ব্যাংক থেকে জনগণের আমানতকে এভাবে যারা খেলাপি হতে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট সেসব কর্মকর্তাদেরও আইনের আওতায় এনে তাদের কাছ থেকেও খেলাপি ঋণের একটা অংশ আদায় করা হোক।

    অর্থমন্ত্রী আজ সংসদে জানিয়েছেন, শীর্ষ ৩০০ ঋণখেলাপির কাছে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাওনা আছে ৫০ হাজার ৯৪২ কোটি টাকা। এছাড়া ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৫ কোটি টাকার বেশি ঋণ নেওয়া ১৪ হাজার ৬১৭ জনের বড় একটি অংশ ঋণখেলাপি, যাদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক লাখ ১৮৩ কোটি টাকা।

    অর্থমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত সাড়ে তিন বছরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ৪৩ হাজার ২১০ কোটি ১৯ লাখ টাকা। এ সময়ে ঋণ খেলাপির সংখ্যা বেড়েছে ৫৮ হাজার ৪৩৬ জন।

    এ প্রসঙ্গে অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক বিশ্লেষক বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান রতন রেডিও তেহরানকে বলেন, দীর্ঘদিনের গণদাবির মুখে ঋণখেলাপিদের একটা তালিকা প্রকাশ করতে সরকার বাধ্য হয়েছে। এসব খেলাপিদের কারা রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে বা কোন কর্মকর্তারা এসব ঋণ দিয়েছে তাদেরও জবাবদিহিতার আওতায় আনা দরকার।

    এই বামপন্থি নেতা আরো বলেন, কেবল ৩০০ শীর্ষ খেলাপির তালিকা, তাদের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ বা ক্রমশ খেলাপিঋণের পরিমাণ বৃদ্ধির তথ্য প্রকাশই যথেষ্ট নয়; নির্দিষ্ট সময় সীমা বেধে দিয়ে কীভাবে এ বিপুল ঋণ আদায় করা হবে এবং খেলাপি ঋণগ্রহীতা ও তাদের সহযোগীদের কীভাবে আইনের আওতায় আনা হবে সেটাই এখন দেখতে চায় দেশের মানুষ।

    উল্লেখ্য, অর্থমন্ত্রীর তালিকায় শীর্ষ ১০ ঋণ খেলাপির মধ্যে আছে, চট্টগ্রামের সামানাজ সুপার অয়েল (এক হাজার ৪৯ কোটি টাকা), গাজীপুরের গ্যালাক্সি সোয়েটার অ্যান্ড ইয়ার্ন ডায়িং (৯৮৪ কোটি), ঢাকা সাভারের রিমেক্স ফুটওয়্যার (৯৭৬ কোটি), ঢাকার কোয়ান্টাম পাওয়ার সিস্টেম (৮২৮ কোটি), চট্টগ্রামের মাহিন এন্টারপ্রাইজ (৮২৫ কোটি), ঢাকার রূপালী কম্পোজিট (৭৯৮ কোটি), ঢাকার ক্রিসেন্ট লেদার ওয়্যার (৭৭৬ কোটি), চট্টগ্রামের এস এ অয়েল রিফাইনারি (৭০৭ কোটি), গাজীপুরের সুপ্রভ কম্পোজিট নিট (৬১০ কোটি), গ্রামীণ শক্তি (৬০১ কোটি)।

    সংসদে অপর এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়ছেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ৮টি বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংক থেকে গত বছরে (জানুয়ারি ২০১৮-ডিসেম্বর ২০১৮) ছয় হাজার ১৬৩টি ঋণ হিসাবের বিপরীতে এক হাজার ১৯৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা সুদ মওকুফ করা হয়েছে।পার্সটুডে