শ্রীমঙ্গলে গেস্ট হাউসে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে আটক-২

    0
    394

    নিজস্ব প্রতিনিধি:   মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর ইউনিয়নের আঐ গ্রামের পাঁচ বছর বয়সী কন্যা সন্তানের মাতা এক নারী শ্রীমঙ্গল থানায় পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে ধর্ষণের অভিযোগে সাতগাঁও এলাকা থেকে কাজল মিয়া (৩০) পিতা মৃত সুরুক মিয়া , মতিন মিয়া (২৮) পিতা মৃত রহমান মিয়া নামের দুই আসামিকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
    ঘটনার বিবরণে জানা যায়, আঐ গ্রামের এক নারী বয়স (২৫) এক বাচ্চার মা, তার স্বামী মাদক মামলায় জেলে রয়েছে। তার স্বামীকে জেল থেকে মুক্ত করার জন্য স্থানীয় দুই দালাল তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে। ওরা ওই নারীকে শ্রীমঙ্গল শহরের গুহ্য রোডস্থ হামিদা গেস্ট হাউসে একজন ভালো উকিল রয়েছে বলে জানালে তাদেরকে নিয়ে সেখানে যান। এক পর্যায়ে তার পাঁচ বছরের বাচ্চাটিকে কৌশলে আলাদা করে ওই নারীকে জোর করে পালাক্রমে চারবার ধর্ষণ করে কাজল মিয়াও মতিন মিয়া এমন অভিযোগ করেন তিনি।

    এ প্রতিনিধির সাথে কথা বলার সময় তিনি (ভিকটিম) বলেন, গত সেপ্টেম্বর মাসের ১৯ তারিখ দুপুর ১২ টা থেকে দুই টার মধ্যে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এর আগের দিন ১৮ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫ ঘটিকায় তার স্বামীকে মাদকের অভিযোগে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরের দিন স্বামীকে দেখার জন্য শ্রীমঙ্গল থানায় আসেন এবং সকাল দশটায় মৌলভীবাজার আদালতে তার স্বামীকে প্রেরণ করা হয়। ঐ সময় কাজল ও মতিন তার সাথে ছিল, কাজল ও মতিন তার স্বামীর বাড়ি সম্পর্কে চাচা লাগে। পরে কাজল মতিন শ্রীমঙ্গল থানার সম্মুখস্থ থেকে সিএনজি যোগে উকিলের কথা বলে নিয়ে যান একটি বাসায়। সেখানে একজন উকিল আছে বলে তাকে নিশ্চয়তা দেয়।

    তার বক্তব্যে জানা যায়, তার স্বামীকে মুক্ত করাতে ২৫০০০ টাকার প্রয়োজন।তার স্বামীকে উদ্ধার করার জন্য উকিলের হাতে পায়ে ধরে টাকা কমানোর চেষ্টার কথা বলে ধর্ষনের অভিযুক্ত কাজল, মতিন হামিদা গেস্ট হাউজের একটি রুমে আটকে রেখে তাকে পালাক্রমে চারবার ধর্ষণ করে।

    ভিকটিমের বক্তব্য অনুযায়ী প্রথমে তাকে ধর্ষণ করে কাজল এবং পরে মতিন এভাবে পালাক্রমে ধর্ষণ চলে, পরে দুইটার দিকে বের হয়ে আসে। এসময় তার পাঁচ বছর বয়সী কন্যা সন্তানটিকে বাহিরে নিয়ে আটকে রেখে তার মাকে ধর্ষনের অভিযুক্ত আসামিরা পালাক্রমে ধর্ষন করে এবং কারো কাছে কিছু বললে মেয়েটিকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

    এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা আমার মেয়েটিকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেখালে আমি চিৎকার বা পালাতে চেষ্টা করিনি। তাছাড়া আমার স্বামীর জেল থেকে মুক্তি হওয়াটা ও মুখ্য বিষয়।তিনি আরো বলেন আমি হামিদা গেস্ট হাউজ চিনি না কখনো যাইনি। ওরা আমাকে উকিলের কথা বলে সেখানে জোর করে নিয়ে গেছে।

    অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান,”ঘটনার পরে আমার শ্বশুরবাড়িতে শ্বশুর শ্বাশুড়িকে বিষয়টি জানালে তাদের অনুমোদিত এবং র্যাবের সহযোগিতায় হাসপাতালে এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন ছিলাম। ধর্ষণ পরীক্ষার কাগজপত্র আসতে সময় লাগে, কাগজপত্র পেয়ে গতকাল শনিবার শ্রীমঙ্গল থানায় অভিযোগ করি।”

    পুলিশের সূত্রে জানা যায়, অভিযোগের প্রেক্ষিতে আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে স্থানীয় থানার ওসি আবদুস ছালিকের দিক নির্দেশনায় মোবাইল ট্রাকিং এর মাধ্যমে সাতগাঁও বাজার এলাকা থেকে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় শ্রীমঙ্গল থানার এসআই আল আমিন, এএসআই নজরুল ইসলাম, এএসআই জিতেন ও এএসআই আকরামসহ পুলিশের একটি টিম অভিযানে অংশগ্রহণ করেন।

    শ্রীমঙ্গল থানার ওসি তদন্ত সোহেল রানা তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।