শ্রীমঙ্গলে হোটেল নারী শ্রমিকের প্রতারণা মামলায় রাজনগরের এক প্রতারক গ্রেফতার

0
217

আমার সিলেট রিপোর্ট: শ্রীমঙ্গলে রেস্টুরেন্টের এক নারী শ্রমিকের প্রতারণা মামলায় মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার কর্ন্নুল মজুমদার ওরফে কর্নেল মজুমদার ওরফে জয়নাল হাজারী ওরফে অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান নাম পরিচয় প্রদানকারীকে মৌলভীবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সহায়তায় আজ শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে সাকুরা মার্কেট এর সম্মুখ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গ্রেফতারের পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই আলাউদ্দিনের কাছে হস্তান্তর করেন গোয়েন্দা পুলিশ।

মামলা ও বাদিনীর সূত্রে জানা যায়, আটক কর্ন্নুল মজুমদার ওরফে কর্নেল মজুমদার ওরফে জয়নাল হাজারী ওরফে এডভোকেট কামরুল হাসান ইত্যাদি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নাম ধারণ করে পরিচয় প্রদানকারী নিম্ন আয়ের, বিশেষ করে শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের কাছ থেকে তাদের সরলতার সুযোগে বিভিন্ন প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে,এবং নিজেকে আইনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি প্রচার করে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর,সরকারি জমি, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতাসহ বিদেশে প্রেরণ, ভোটার আইডি সংশোধন ইত্যাদি সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন অংকের টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল। এমনি এক ঘটনায়, শ্রীমঙ্গল শহরের হবিগঞ্জ রোডস্থ নূর ফুডসের এক নারী শ্রমিকের সাথে প্রতারণা ৭৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন।
এ বিষয়ে মামলার বাদী আয়েশা বেগম আমার সিলেটকে জানান, আমি হোটেলে পেঁয়াজ, তরকারি কাটি ও মসল্লা বাটার কাজ করতে করতে আমার হাতের আঙ্গুল নষ্ট হয়ে গেছে, আমি চামচ দিয়ে ভাত খাই অথচ এত কষ্টের টাকা ৭৭ হাজার টাকা আমার কাছ থেকে নিয়ে যায়, ছেলেকে বিদেশ নিবে ,আমাকে সরকারি ঘর দিবে, নারীদের বিদেশ পাঠাবে ইত্যাদি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার লোভ দেখিয়ে প্রতারণা করে টাকা নিয়ে পরিশেষে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়, আমি এক পর্যায়ে অপারগ হয়ে শ্রীমঙ্গল থানার আশ্রয় নিয়ে মামলা করি এবং ওই মামলায় আজ তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন,তাকে খুঁজতে গিয়ে মাসের পর মাস বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামে পরিচয় পেয়েছি, আমাদের কাছে এডভোকেট কামরুল হাসান পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করেছে। অন্যান্য এলাকায় অন্যান্য নামে পরিচিত আছে,আমি আমার প্রাপ্য টাকার জন্য তার কাছে যোগাযোগ করলে, সে বিভিন্ন জায়গায় যেতে বলে, বিভিন্ন ধরনের অবৈধ কাজের অফার দেয়, কখনো কখনো ঘন্টার পর ঘন্টা বসিয়ে রাখে, দিন চলে যায় কিন্তু সে আমার সামনে আসে না, এভাবে করতে করতে একসময় আমার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে যায়, আমি বাধ্য হয়ে মামলা করি।

এ ব্যাপারে মামলার আইও শ্রীমঙ্গল থানার এসআই আলাউদ্দিন বলেন, তাকে দীর্ঘদিন ধরে ধরার চেষ্টা করছি কিন্তু সে ফোন ধরে, এক জায়গায় একটু পরে এসে জায়গা বদলে ফেলে, বহূনাম ধারণকারী হিসেবে লোকজনের কাছে তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি।বহুদিন ধরে তার পিছনে ঘুরতে ঘুরতে অবশেষে মৌলভীবাজার জেলা গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই,
সে বর্তমানে শ্রীমঙ্গল থানা হাজতে রয়েছে। আগামীকাল আইন মোতাবেক আদালতে প্রেরণ করা হবে। তার নামে মামলা রয়েছে মামলার নাম্বার হচ্ছে ৫(০১)২৩, বাদী আয়েশা বেগম।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় এর আগেও তার বিরুদ্ধে মৌলভীবাজার সদর থানা সহ বিভিন্ন জায়গায় প্রতারণার অভিযোগ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য,বাদি আয়েশা বেগম এর মূল বাড়ি হবিগঞ্জের আসাম পাড়ায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে শ্রীমঙ্গলে থেকে হোটেল রেস্তোরাঁয় মসলা বাটার কাজ করে আসছেন।