শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাচনে আ’লীগ মনোনয়নে যারা এগিয়ে

    0
    261

    সাদিক আহমেদ,স্টাফ রিপোর্টারঃ আসন্ন শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক দল ও বর্তমান ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান পদের জন্য মনোনয়ন গ্রহণ করে জমা দিয়েছেন ৯ জন প্রত্যাশী।
    তাদের মধ্যে আওয়ামী মনোনয়নে সবচেয়ে বেশী এগিয়ে আছেন বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রণধীর কুমার দেব।তিনি বর্তমানে হিন্দু,বৌদ্ধ,খ্রিস্টান ঐক্যজোটের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।তাছাড়া তিনি টানা ২ মেয়াদে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।আওয়ামী পরিবারের একজন বিশ্বস্ত রাজনীতিবিদ হিসেবে উপজেলা নির্বাচনে রনধীর কুমার দেবের বিকল্প কেবল তিনিই।উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীদের মধ্যে একমাত্র সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রার্থী তিনি।এদিক থেকে নিঃসন্দেহে বলা যায় সংখ্যালঘুদের অধিকাংশ ভোটই পেতে পারেন তিনি।

    আওয়ামী রাজনীতিতে রণধীর কুমার দেবকে ক্লিন ইমেজের রাজনীতিক বলা হয়ে থাকে।সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী মনোনয়ন পেতে পারেন প্রবীণ ও ত্যাগী এই আওয়ামী নেতা।

    মনোনয়নের দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে আছেন আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী এম এ রহিম।প্রবীণ এই আওয়ামীলীগ নেতা শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন।এম এ রহিম শ্রীমঙ্গল উপজেলা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।জনমুখে প্রায়ই শোনা যায়,শ্রীমঙ্গলের উন্নয়নে এম এ রহিমের অবদান।শ্রীমঙ্গলের প্রতিটি রাস্তাঘাট এম এ রহিমের হাতে গড়া এমনটাই বলে থাকেন উপজেলার  কিছু কিছু ভোটাররা।একজন ত্যাগী,সৎ ও যোগ্য প্রার্থী হিসেবে শ্রীমঙ্গল বাসীর মনে আস্থা করে নিয়েছেন সাবেক এই চেয়ারম্যান।তাই ত্যাগী ও আওয়ামী পরিবারের এই বিশ্বস্থ নেতা যদি উপজেলা নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পান তবে সেটা অকল্পনীয় কিছু হবে না এমনটাই মনে করেন এই অঞ্চলের ভোটাররা।

    মনোনয়ন দৌড়ে মোটামুটি বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে আছেন আফজল হক।তিনি ৩ নং শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের সাবেক সফল চেয়ারম্যান ছিলেন।ক্ষমতা থাকাকালীন শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নের ব্যপক উন্নয়ন করেছেন সাবেক এই চেয়ারম্যান এমনটাই বলছেন ভোটাররা।কর্মগুণে তিনি ১৯৯৮ ইংরেজী সনে সিলেট বিভাগের শ্রেষ্ঠ ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে স্বর্ণপদক লাভ করেন।মূলত ন্যায়পরায়ণ,সৎ,যোগ্য ও বিচারিক হিসেবে পুরো শ্রীমঙ্গলে আফজল হক বেশ পরিচিত।সৎ বিচারিক হিসেবে শ্রীমঙ্গলের প্রতিটি জনগণের আস্থা ও ভালোবাসায় মনে জায়গা করেছেন এই রাজনীতিবিদ।তিনি বর্তমানে শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

    এদিকে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেতে পারেন প্রবীণ আরেক নেতা আছকির মিয়া।তিনি বর্তমানে শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।প্রবীণ এই নেতা আওয়ামীলিগের একজন ত্যাগী নেতা হিসেবে তিনিও সবার কাছে বেশ সুপরিচিত।

    মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে থাকতে পারেন এম মতলিব।তিনি কালাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন।একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক উপজেলা কমান্ডার হিসেবে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলে সেটা খুব বেশী একটা চমক হবে না।

    এদিকে মনোনয়ন জরিপে এগিয়ে আছেন প্রবাসী যুবনেতা কামরুজ্জামান জুয়েল।নবীন এই মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রথমবারের মতো উপজেলা নির্বাচনে দলের মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন।শ্রীমঙ্গলের উন্নয়নমূলক সামাজিক সংগঠন হৃদয়ে শ্রীমঙ্গল এর প্রতিষ্ঠাতা এডমিন হিসেবে ইতোমধ্যেই শ্রীমঙ্গলবাসীর মন জয় করেছেন তিনি।আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী এই যুবনেতা একজন সৎ,পরিচ্ছন্ন,ও নবীন প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী মনোনয়ন পেতে পারেন যা চমক হিসেবে ধরে নিতে পারে জনগণ।

    অপরদিকে কিছুটা আলোচনায় আছেন মনোনয়ন প্রত্যাশী তফাজ্জল হোসেন ফয়েজ।তিনি উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন।আওয়ামী পরিবারের একজন বিচক্ষণ নেতা হিসেবে আলোচনায় আছেন তিনিও।

    বিশেষ করে মনোনয়ন জরিপে অনেকাংশেই এগিয়ে আছেন এম এ মান্নান।একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা,মুজীব আদর্শের সৈনিক আওয়ামীলীগের একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ হিসেবে এম এ মান্নান ব্যপক আলোচনায় রয়েছেন।তিনি ৩ নং শ্রীমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদ এবং উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

    একটি পৌরসভা ও ৯ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত চা বাগান পরিবেষ্টিত শ্রীমঙ্গল উপজেলার মোট আয়তন ৪২৫.১৫ বর্গ কি.মি.।উপজেলার মোট জনসংখ্যা ২,৮৭,৯৮০ জন।যার মধ্যে পুরুষ ১,৪৭,২২০ জন এবং নারী ১,৪০,৭৬০ জন।(সুত্র ২০০১,উপজেলা ওয়েবসাইট থেকে)।
    উপজেলার মোট ভোটার ১,৭৩,৩৫১ জন।যার মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮৫,৫০৪ জন এবং নারী ভোটার ৮৭,৮৪৭ জন।(সুত্র ২০০৮ ভোটার নিবন্ধন,উপজেলা ওয়েবসাইট থেকে)

    উল্লেখ্য,প্রথম পর্যায়ে ১০২ টি উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়ন জমা  দেয়ার শেষ সময় ছিলো ২৫ জানুয়ারী এবং মনোনয়ন যাচাই বাছাইয়ের শেষ দিন ছিলো ২৭ জানুয়ারী।নির্বাচনে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২ ফেব্রুয়ারী।এর আগে ২০০৯ সালের ২২ জানুয়ারি ৪৮০টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।প্রতি পাঁচ বছর পরপর চেয়ারম্যান,ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।