সারা দেশে এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিচ্ছে ইসলামী ফ্রন্ট:এম এ মতিন

0
110

“দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিদেশি হস্তক্ষেপ বন্ধ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবাইকে নির্বাচনে আসতে হবে,চট্টগ্রাম লালদীঘি মাঠে ইসলামী ফ্রন্টের বিশাল মহাসমাবেশে এম এ মতিন।”
“সংঘাতের রাজনীতি পরিহার করে গণমুখী রাজনীতির পথে আসুন: স উ ম আব্দুস সামাদ”

আমার সিলেট ডেস্ক: বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট’র চেয়ারম্যান মাওলানা এম এ মতিন বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে এলেই দেশি-বিদেশি কুচক্রীরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। জাতীয় নির্বাচন কীভাবে কোন পদ্ধতিতে হবে তা দেশের রাজনীতিবিদরা বসে ফয়সালা করবেন, এটাই কাম্য।

কিন্তু রাজনীতিবিদরা আজ এক্ষেত্রে ব্যর্থ। ফলে দেশি-বিদেশি কুচক্রীরা আমাদের দেশ নিয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপের সুযোগ পাচ্ছে। রাজনীতির নাটাই দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে চলে যাওয়া রাজনীতিবিদদের জন্য বড় লজ্জার বিষয়। দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপ আমাদের দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতি সরাসরি আঘাতের শামিল।
তাই দেশের রাজনীতি নিয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপ রুখে দিতে এবং দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবাইকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে আসা দরকার। এজন্য ইসলামী ফ্রন্ট নির্বাচনে অংশ নেবে বলে তিনি ঘোষণা দেন এবং সারা দেশে এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন। অধিকারহারা দেশের শান্তিকামী সূফিবাদি জনতার অধিকার আদায়ে আসন্ন নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশে দলে দলে ভোট দিয়ে সুন্নিয়তের পক্ষে ব্যাল্ট বিপ্লব ঘটানোর আহ্বান জানান তিনি। আন্দোলনের নামে ধ্বংসাত্মক পথে না গিয়ে সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষায় বিরোধী দলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান ইসলামী ফ্রন্ট চেয়ারম্যান এম এ মতিন।
অবহেলিত শান্তিপ্রিয় সূফিবাদি জনতার অধিকার আদায়, দুর্নীতি, অগ্নিসন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা, ফিলিস্তিনে ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ঘোষণার দাবি, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং চলমান সংঘাত সহিংসতার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে আজ ২৫ নভেম্বর শনিবার বিকালে চট্টগ্রাম লালদীঘি মাঠে আয়োজিত মহাসমাবেশে কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান এম এ মতিন প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। দূরদূরান্ত থেকে নানা পরিবহনযোগে হাজার হাজার জনতা মহাসমাবেশে অংশগ্রহণ করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যের আগেই লালদীঘি মাঠ উপচে বিশাল এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। মহাসমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আল্লামা তৈয়ব আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন ইসলামী ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা স উ ম আব্দুস সামাদ।

স্বাগত বক্তব্য দেন মহাসমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব ইসলামী ফ্রন্ট প্রেসিডিয়াম সদস্য এম সোলায়মান ফরিদ। ফিলিস্তিনে ইসরাইলি জঘন্য বর্বরতা ও গণহত্যা বন্ধ করতে জাতিসংঘ, আরব লীগ ও আইসিকে অবিলম্বে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে এম এ মতিন বলেন, ফিলিস্তিনের গাজায় আজ চরম মানবিক বিপর্যয় চলছে। ইসরাইলি হামলায় নারী, নিরপরাধ শিশু, মসজিদ, হাসপাতাল কিছুই রেহাই পাচ্ছে না। আজ সারা বিশ্বকে ইসরাইলি বর্বরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে এবং স্বাধীন সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় বিশ্ব জনমত গড়ে তুলতে হবে। তিনি ফিলিস্তিনের মজলুম মানুষের প্রতি সমর্থন ও সংহতি জানানোর জন্য এবং বৈশ্বিক যুদ্ধবিরোধী অবস্থান নেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি ধন্যবাদ জানান। এম এ মতিন বলেন, দেশের জনগণ আজ ভালো নেই। ভোগ্যপণ্যসহ সকল নিত্যপণ্যের দাম আজ আকাশচুম্বি। অসাধু সিন্ডিকেটের কাছে সরকারও যেন আজ বড় অসহায়। এই অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে জনগণকে বাঁচাতে হবে। এম এ মতিন বলেন, সকল সভ্য দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচন পরিচালনা করে স্বাধীন শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন। তাই অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনকে সত্যিকার অর্থে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে। স্বাধীন শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনই সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে পারে।
প্রধান বক্তা ইসলামী ফ্রন্ট মহাসচিব স উ ম আব্দুস সামাদ বলেন, সাংবিধানিক সংকট থেকে উত্তরণ, বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলা এবং আমাদের দেশকে কেন্দ্র করে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ইসলামী ফ্রন্ট আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি সকল পক্ষকে সংঘাতের রাজনীতি পরিহার করে দেশ ও জনগণের কল্যাণে গণমুখী রাজনীতি করার আহ্বান জানান। আব্দুস সামাদ বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সূফিবাদি সুন্নি জনতাকে আজ রাজনীতি সচেতন হতে হবে। না হয় তাদের পিছিয়ে পড়তে হবে। ইসলামী ফ্রন্টই দেশের আমজনতাসহ সুন্নি জনতার অবিকল্প প্লাটফর্ম বলে তিনি উল্লেখ করেন এবং শান্তিকামী জনতাকে ইসলামী ফ্রন্টের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার তাগিদ দেন। সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ আল্লামা তৈয়ব আলী বলেন, সুন্নি মতাদর্শের আলোকে গণমুখী ইনসাফভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই ইসলামী ফ্রন্টের লক্ষ্য। আজকের মহসমাবেশ সুন্নি জনতার জাগরণের জানান দেয়। আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে পার্লামেন্টে সুন্নি জনতার প্রতিনিধিত্ব নির্বাচনের যে সুযোগ এসেছে তা আমাদের কাজে লাগাতে হবে।
মাস্টার মুহাম্মদ আবুল হোসেন, মুহাম্মদ এনামুল হক ছিদ্দিকী ও নাছির উদ্দীন মাহমুদের সঞ্চালনায় মহাসমাবেশে ইসলামী ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য, জেলা ও মহানগর নেতৃবৃন্দ এবং ছাত্রসেনা-যুবসেনা নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত বাংলাদেশ এর মহাসচিব পীরে তরিকত আল্লামা সৈয়দ মছিহুদ্দৌলা, অধ্যক্ষ আল্লামা মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ অছিয়র রহমান, অধ্যক্ষ আল্লামা আহমদ হোসাইন আলকাদেরী, অধ্যক্ষ ড. মাওলানা ইসমাইল নোমানী, মাওলানা সৈয়দ মোজাফ্ফর আহমদ মোজাদ্দেদী, মাওলানা রফিকুল ইসলাম পাটোয়ারী, অ্যাডভোকেট আবু নাছের তালুকদার, বিশিষ্ট বক্তা আল্লামা গিয়াস উদ্দিন তাহেরী, পীরজাদা মাওলানা মুহাম্মদ গোলামুর রহমান আশরফ শাহ, অধ্যক্ষ আল্লামা খলিলুর রহমান নেজামী, অধ্যক্ষ আবু তালেব বেলাল, অধ্যক্ষ মাওলানা আবু জাফর মঈনউদ্দিন, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, হাজী মুহাম্মদ রুবেল, কাজী মাওলানা সোলাইমান চৌধুরী, এম এ রহিম, মাওলানা রেজাউল করিম তালুকদার, অ্যাডভোকেট ইসলাম উদ্দিন দুলাল, মাওলানা নুরুল ইসলাম জেহাদী, মাওলানা সৈয়দ জালাল উদ্দিন আজহারী, মাওলানা কাজী জসিম উদ্দিন আশরাফী, মাওলানা আব্দুল হাকিম, ইঞ্জিনিয়ার নুর হোসেন, অ্যাডভোকেট ইকবাল হাছান, অধ্যাপক আবুল মনছুর দৌলতি, অধ্যাপক মাওলানা আব্দুর রহিম মুনিরী, অধ্যক্ষ মাওলানা আহমদ রেজা নক্সবন্দী, মাওলানা আবদুল আজিজ আনোয়ারী, অধ্যক্ষ মাওলানা এম এ মুস্তফা হেজাজী, সৈয়দ মুহাম্মদ আবু আজম, এম মহিউল আলম চৌধুরী, মুহাম্মদ নুরুল্লাহ রায়হান খান, মাওলানা ফেরদৌসুল আলম আলকাদেরী, মাওলানা গিয়াস উদ্দিন নেজামী, ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা সোলাইমান ফারুকী, মাওলানা সৈয়দ হাসান আজহারী, মাওলানা এনাম রেজা কাদেরী, মাওলানা ইউনুস তৈয়বী, অ্যাডভোকেট মুখতার আহমদ সিদ্দিকী, মাওলানা আব্দুন নবী আলকাদেরী, পীরজাদা মাওলানা সৈয়দ এয়ার মুহাম্মদ পেয়ারু, অধ্যক্ষ মাওলানা জামেউল আক্তার আশরাফী, মাওলানা আশেকুর রহমান, মাওলানা আমান উল্লাহ আমান সমরকন্দি, অধ্যাপক জামাল উদ্দিন, অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম আশরাফী, শাহাজাদা মাওলানা সৈয়দ তৌছিফুল হুদা, অধ্যাপক কাজী মুহাম্মদ ইউনুস রিজভী, মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম, মুহাম্মদ আলী হোসেন, অধ্যক্ষ হাফেজ আহমদ আলকাদেরী, মাওলানা করিম উদ্দিন নুরী, মাওলানা আলী শাহ নেছারী, ফজলুল করিম তালুকদার, মাওলানা আবুল কাশেম আনসারী, মুহাম্মদ সৈয়দ হোসেন, নাছির উদ্দিন মাহমুদ, আখতার হোসেন চৌধুরী, অধ্যাপক ইমরান হোসেন, আলমগীর ইসলাম বঈদী, সৈয়দ মুহাম্মদ খোবাইব, আজিম উদ্দিন আহমদ, মামুন উদ্দিন সিদ্দিকী, মাওলানা আশরাফুল আলম, হাবিবুল মোস্তফা সিদ্দিকী, সৈয়দ সালাউদ্দিন খোকন, ইয়াছিন রানা সোহেল, নিজামুল করিম সুজন, মাওলানা সোহাইল উদ্দিন আনসারী, আরিফুল হক রানা, বদরুল হুদা তারেক, আবদুল করিম সেলিম, মুহাম্মদ মারুফ রেজা, মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন, সাইফুদ্দিন আহমদ, আজাদ হোসেন, কাজী মুহাম্মদ আরাফাত, মুহাম্মদ নুর রায়হান চৌধুরী, নুর উদ্দিন, রবিউল হোসাইন সুমন, মুহাম্মদ আতিকুর রহমান, বেলাল রেজা প্রমুখ।
মহাসমাবেশ শেষে এক বিশাল র‌্যালি লালদীঘি চত্বর থেকে বের হয়ে চেরাগী পাহাড় এসে সমাপ্ত হয়।