সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে হাবিবের কাছে পাত্তাই পেলোনা অন্যরা

0
563
সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে হাবিবের কাছে পাত্তাই পেলোনা অন্যরা

জহিরুল ইসলাম, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলা সমন্বয়ে ঘটিত সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে হাবিবুর রহমান হাবিব। সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব। তার কাছে অন্য তিন প্রার্থী দাঁড়াতেই পারেননি।তিনি ৬৫ হাজার ৩১২ ভোটের ব্যবধানে সাংসদ নির্বাচিত হন।

শনিবার ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং তারিখে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হাবিব পান ৯০ হাজার ৬৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক পান ২৪ হাজার ৭৫২ ভোট।

ভোট গণনা শেষে রাতে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমাদুল ইসলাম এ ফলাফল ঘোষণা করেন। তিনি হাবিবুর রহমান হাবিবকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।

নির্বাচন কমিশনের হিসাবে ৩ উপজেলায় ভোটার ৩ লাখ ৫২ হাজার আর কেন্দ্র রয়েছে ১৪৯টি।

এই নির্বাচনের অন্য দুই প্রার্থী বিএনপি দলীয় সাবেক সাংসদ শফি আহমদ চোধরী ৫১৩৫ ভোট ও স্বতন্ত্র পার্থী জুনায়েদ মুহাম্মদ মিয়া পান ৬৪০ ভোট।পরে দুপুর ৩ টা ৫০ মিনিটে রেবতি রমণ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেন আতিক।

বিজয়ের পর শনিবার দিবাগত রাতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে তাতক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় হাবিবুর রহমান হাবিব ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে জনগনের আশ্বাসের প্রতিদান দেওয়ার কথা বলেন।

অপরদিকে পরাজয় মেনে নিয়ে আতিকুর রহমান আতিক বিজয়ী প্রার্থী হাবিবকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

শনিবার সকাল থেকে সিলেট-৩ আসনের ভোটগ্রহণ শুরু হ্যে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ হলেও ভোটার উপস্থিতি ছিলো একেবারেই সামান্য। বেশিরভাগ কেন্দ্রে গিয়ে ভোটার দেখা যায়নি।

তকে ছোটখাটো কিছু অভিযোগ ছাড়া কোনো প্রার্থীদের পক্ষ থেকেই নির্বাচন নয়ে বড় ধরণের কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।সিলেটের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা কাজী এমদাদুল ইসলাম জানিয়েছেন ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ভোট প্রয়োগ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এখনও আমরা পুরো হিসাব পাইনি। তবে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে পাওয়া তথ্যে ধারণা করছি ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ভোট প্রয়োগ হয়েছে।’

ভোটার উপস্থিতি কম হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছি। কোথাও কোনো গোলযোগ হয়নি। শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। তারপরও কেন মানুষ ভোটে আসেননি তা বলতে পারব না।’

এদিকে সকালে কেন্দ্রে ভোটই দিতে পারেননি জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক। ইভিএমে জটিলতরার কারণে ভোট দিতে পারেননি তিনি।

দক্ষিণ সুরমার মোঘলাবাজার এলাকার রেবতি রমণ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল ১০টার দিকে তিনি ভোট দিতে যান। বুথ থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি আমার ভোট দিতে পারিনি। নির্বাচন কর্মকর্তারা বললেন, ইভিএমে আমার নাম ও ভোটার নম্বর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’

ইভিএমের এই ত্রুটির বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা এমদাদুল হক বলেন, ‘ওই প্রার্থী হবিগঞ্জের ভোটার ছিলেন। সম্প্রতি তিনি হবিগঞ্জ থেকে এখানে ভোট নিয়ে এসেছেন। তফসিল ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় তার ভোটটি এখানকার তালিকায় আপডেট হয়নি। তবে, সকালের ঘটনার পরই আমি নির্বাচন কমিশনে কথা বলেছি। দ্রুত তার ভোটার নাম্বার এখানে আপডেট করা হয়েছে।

এবারই প্রথম সিলেটের এই আসনে সব কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট হয়। ভিড় না থাকায় ও মেশিনে ভোট হওয়ায় কম সময়েই ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরতে পারছেন বলে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ভোটাররা।

মোগলবাজারে ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘খুবই শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ হয়েছে। কোথাও কোনো ঝামেলা হয়নি।’

জাপা প্রার্থীর এজেন্ট বের করে দেয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তিনি কিসের ভিত্তিতে অভিযোগ করেছেন জানি না। আমরা এমন কোনো অভিযোগ পাইনি।’

নৌকার প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব সকালে দক্ষিণ সুরমার কামালবাজার এলাকার ধরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন। বুথ থেকে বের হয়ে তিনি বলেন, নৌকার জয় সুনিশ্চিত। ভোট শান্তিপূর্ণভাবেই হচ্ছে।

এই উপজেলারই দাউদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকালে ভোট দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপিদলীয় সাবেক সংসদ সদস্য শফি আহমদ চৌধুরী।

ভোটের পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্টি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ইভিএমের কারণে ভোটারদের কিছুটা সমস্যা হয়েছে। ভোটার ও নির্বাচনি কর্মকর্তাদের ইভিএমের বিষয়ে আগেই প্রশিক্ষণ দেয়া প্রয়োজন ছিল।’

দেশ ব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছরের ১১ মার্চ সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যু হয়। এরপর ১৫ মার্চ আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। গত ২৮ জুলাই এ আসনে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে পিছিয়ে যায় নির্বাচনের তারিখ।