সুনামগঞ্জ ডিবিতে থাকা বির্তকিত এসআই জামালের টার্গেট সীমান্তঃতৎপর বিজিবি

    0
    223

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৯এপ্রিল,মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়াঃ সুনামগঞ্জ ডিবিতে থাকা তাহিরপুর থানার বির্ততিক এসআই জামালের টার্গেট সীমান্ত। বিভিন্ন অনিয়ম দূর্নীতির কারণে সস্প্রতি এসআই জামালকে ডিবিতে বদলী করলেও তার দুই সহযোগীকে দিয়ে সিন্ডিকেডের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করছে তাহিরপুর সীমান্তের চাঁদাবাজি ও কয়লা,মদ,গাঁজা পাচাঁরের বাণিজ্য। কিন্তু সুনামগঞ্জ ৮ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়কের কড়া নজরদারীর কারণে বিপাকে পড়েছে চোরাচালানীরা। খোঁজ নিয়ে জানাযায়-এসআই জামালের একান্ত সহযোগী তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের রাজাই গ্রামের কয়লা চোরাচালানী জম্মত আলীর ছেলে নূর ইসলামকে গত মঙ্গলবার ও চানপুর গ্রামের দিন ইসলামের ছেলে চোরাচালানী আবুল হোসেনকে গত শুক্রবার আটক করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে বিজিবি।

    এছাড়াও রজনীলাইন এলাকা থেকে ৯টি ঠেলাগাড়ি আটক করাসহ প্রতিদিন অবৈধ কয়লা জব্দ করা হচ্ছে। চাঁনপুর সীমান্তের রাজাই ও নয়াছড়া,রজনীলাইন এলাকা দিয়ে ভারত থেকে পাচাঁরকৃত চোরাই কয়লার প্রতিবস্তা থেকে ২০টাকা হারে এসআই জামাল চাঁদা উত্তোলন করছে চোরাচালানী জম্মত আলীকে দিয়ে। ওই বির্তকিত এসআইয়ের নির্দেশে চাঁরাগাঁও সীমান্তের বাঁশতলা এলাকা দিয়ে কয়লা আনতে গিয়ে পাহাড়ি গুহায় চাপা পড়ে শাহ জামাল নামের এক শ্রমিক মৃত্যু বরন করেন। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও লাশ ফেরত আনা সম্ভব হয়নি। তারই মদদে গত ১৮ই মার্চ শাহ আরেফিন মেলায় আগত দোকানপাট ও ২৭শে মার্চ বড়ছড়া শুল্কষ্টেশনে বাংলা কয়লা থেকে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে দুইবার গণধৌলাই খেয়েছে ৩টি চাঁদাবাজি মামলার আসামী চোরাচালানী আজাদ ও সাজ্জাদ মিয়া।

    এঘটনায় সালিশে ১০হাজার টাকা জরিমান দিয়েছে তারা। এসআই জামালকে তাহিরপুর থানা থেকে ডিবিতে বদলীর করার পরপরই একেরপর এক ঘটতে থাকে এসব অনৈতিক ঘটনা। সীমান্তের চোরাচালানীদের ওপর বিজিবি চড়াও হওয়ার ঘটনায় এসআই জামাল সীমান্ত এলাকার স্থানীয় নিরীহ লোকজনদেরকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর চোরাচালানী জম্মত আলীর ছেলে মাদক ব্যবসায়ী নূর ইসলামকে বিজিবি আটক করে জেল হাজতে পাঠানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল ৯এপ্রিল বুধবার দুপুরে তদন্তের নামে এসআই জামাল তার শিষ্য সাজ্জাদকে রাজাই সীমান্তের ১২০১পিলার এলাকা দিয়ে ভারতে পাঠালে বিএসএফ তাড়া করে।

    এরপর বাংলাদেশে আসলে বিজিবির তোপের মুখে পড়ে চাঁদাবাজ সাজ্জাদ মোটর সাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। এব্যাপারে চোরাচালানী জম্মত আলী বলেন-চোরাচালান করতে বাঁধা দিয়ে আমাদের ক্ষতি করছিস,তোদেরকে জামাল স্যার ও আজাদ-সাজ্জাদ ভাই দেখে নেবে বলেছে। চাঁরাগাঁও কয়লা আমদানী কারক সমিতির সভাপতি জয়ধর আলী,কয়লা ব্যবসায়ী রুসমত আলী,আব্দুল আলী,সমির উদ্দিন,আরিফ মিয়াসহ আরো অনেকেই বলেন-সুনামগঞ্জ ডিবি অফিস থেকে এসআই জামাল মোবাইলে তার লোক দিয়ে সীমান্তের চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছে। মাঝে মধ্যে তিনি এসে দেখা করছেন আবার চোরাচালানীরা সুনামগঞ্জ গিয়ে দেখা করে হিসেব নিকাশ মিলাচ্ছে।

    তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবুল হোসেন খান বলেন-এসআই জামাল সুনামগঞ্জ থেকে চাঁদাবাজ আজাদ ও সাজ্জাদকে মদদ দেওয়ার কারণে সীমান্ত অপরাধ বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। নামপ্রকাশ না করার শর্তে বাদাঘাট ও কামড়াবন্দ গ্রামের বাসিন্দারা বলেন-আজাদ ও সাজ্জাদ কে নিয়ে এসআই জামাল সকল অপরাধ করছে। কয়েকদিন আগে চাঁদাবাজ আজাদের কামড়াবন্দ গ্রামের বাড়ির পাশে অবস্থিত কিতাবআলী মাজারে রাতে বসে সাজ্জাদকে নিয়ে মদপান করছে। এব্যাপারে জানতে চাইলে বির্তকিত এসআই জামাল বলেন-পত্রিকায় লেখলে কি হয় আমার জানা আছে,দেখি পত্রিকায় লিখে তোরা আমাদের কি করতে পারিস। তার সহযোগী আজাদ মিয়া বলেন-আমরা যা ইচ্ছে তাই করব তোদের বাপের কি,আমাদের পিছনে লাগিস না,তাহলে তোর অস্তিত্ব ধ্বংস করে ফেলব।

    সুনামগঞ্জ ৮ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক গোলাম মহিউদ্দিন বলেন-সীমান্তের চোরাচালান প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা দুইজন চোরাচালানীসহ ৯টি ঠেলাগাড়ি ও চোরাই পথে ভারত থেকে আসা প্রচুর কয়লা জব্দ করেছি। চোরাচালান প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

    উল্লেখ্য,এসআই জামালের বিভিন্ন অনিয়ম,দূর্নীতি ও অপকর্মের ঘটনায় সম্প্রতি বিভিন্ন জাতীয় ও বিভাগীয় দৈনিকসহ অনলাইন পত্রিকায় সংবাদের ঝড় উঠে। এছাড়া এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বির্তকিত এসআই জামালকে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাহিরপুর থানা থেকে এপর্যন্ত ৩বার বদলী করেছে।

    কিন্তু এবার তাকে সুনামগঞ্জ ডিবিতে বদলি করার পরও ক্ষান্ত হয়নি। তাই দুদুক কৃর্তক তদন্তপূর্বক এসআই জামালের যাবতীয় কর্মকান্ড,অবৈধঅর্থ-সম্পত্তি,বিলাস বহুলবাড়ি ও গাড়ির হিসেব-নিকাস নিয়ে তার বিরুদ্ধে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিস্ট প্রশাসনের কাছে জোরদাবী জানিয়েছেন ভূক্তভোগী জনসাধারণ।