হবিগঞ্জে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে দুই সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ:আহত-৪০

0
147

একদল দুর্বৃত্ত পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। তারা আমাদের নেতাকর্মী নন: বিএনপি নেতা

নূরুজ্জামান ফারুকী,বিশেষ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জে পুলিশ ও বিএনপি সমর্থকদের সংঘর্ষে দুই সাংবাদিক ও পুলিশসহ ৪০ জন আহত হয়েছেন।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

এই সংঘর্ষে মাইটিভির জেলা প্রতিনিধি নীরঞ্জন গোস্বামী শুভ ও দেশটিভির জেলা প্রতিনিধি আমীর হামজা পুলিশের ছোড়া ছররা গুলিতে আহত হয়েছেন। তাদেরকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে নীরঞ্জন গোস্বামী শুভর চোখে গুরুতর আঘাতের কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হবে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অজয় চন্দ্র দেবসহ ১৫ পুলিশ ও বিএনপির ২৫ নেতাকর্মী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১১টার দিকে শায়েস্তানগর এলাকার পইল রোডে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির মানববন্ধন হয়। নেতারা বক্তব্য রাখার পর মানববন্ধন শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়। এরপরই একদল নেতাকর্মী পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকেন। তখন পুুলিশ পিছু হটে ওই এলাকার একটি রড-সিমেন্টের দোকানে আশ্রয় নেয়। এরপর ওই দোকানে হামলা চালায় বিএনপির নেতাকর্মীরা। তখন কয়েকটি দোকান ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

এদিকে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান বলেন, “আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি শহরের শায়েস্তানগরে একটি মানববন্ধন হয়। জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শাম্মী আক্তার শিপার সভাপতিত্বে মানববন্ধন শান্তিপূর্ণভাবেই সমাপ্ত হয়। পরে একদল দুর্বৃত্ত পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। তারা আমাদের নেতাকর্মী নন। তবে এই সংঘর্ষে বিএনপির প্রায় ২৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সমকালের জেলা প্রতিনিধি রাসেল চৌধুরী বলেন, “রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে জেলা বিএনপির মানববন্ধনের খবর সংগ্রহ করতে যান নীরঞ্জন গোস্বামী ও আমীর হামজা। তখন বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে দুই সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হন। তাৎক্ষণিক তাদেরকে হবিগঞ্জ জেলা সদর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয়। দুইজনের শরীরে ১০টির বেশি ছররা গুলি লেগেছে। এর মধ্যে মাইটিভির জেলা প্রতিনিধি নীরঞ্জন গোস্বামী শুভর চোখে বেশি আঘাত লেগেছে। যে কারণে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হবে।”

হবিগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অজয় চন্দ্র দেব বলেন, “বিএনপির মানববন্ধন শেষে দলটির নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এতে আমিসহ আরও ১০/১৫ সদস্য আহত হয়। পরে পুলিশ রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে। ওই এলাকায় বর্তমানে পুলিশ ও র‍্যাব মোতায়েন রয়েছে।”
উল্লেখ্য এর আগেই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় এতে বলা হয় দলের গুরুত্বপূর্ণ নয় এমন এবং যারা এখনো বিএনপির কর্মী হিসেবে পরিচিত হইনি, তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় মানববন্ধনের আয়োজন করা হবে।