হবিগঞ্জে হিজরাদের চাদাবাজিঃবিয়ের গাড়ীতে প্রতিনিয়ত হানা

    0
    249

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৫মার্চ,হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: ঢাকা- সিলেট মহাসড়কসহ হবিগঞ্জের বিভিন্ন সড়কে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সংঘবদ্ধ হিজড়া চক্র। এ সব হিজড়ারা মহাসড়কের কয়েকটি পয়েন্টে গাড়ি থামিয়ে চাঁদাবাজি করছে। এই চাঁদাবাজির কারণে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ।
    শুক্রবার দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মিরপুর এলাকায় বরের গাড়ি আটকিয়ে
    চাঁদাবাজি করে একদল হিজরা।
    জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার জনৈক ব্যক্তি বিয়ের উদ্দেশ্যে নবীগঞ্জের ইমামবাড়ি (রসুলগঞ্জ) এর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। বরযাত্রী বহরটি মিরপুর পয়েন্টে এলেই সংঘবদ্ধ কয়েকটি হিজড়া চক্র মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে গাড়ি বহরটি থামিয়ে দেয়। এসময় তারা বরের গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে চাঁদা দাবি করে। তারা গাড়ির সামনে নাচানাচিসহ অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি শুরু করে।
    এ সময় বরের গাড়ির পেছনে থাকা গাড়িগুলোও আটকে যাওয়ায় মিরপুর এলাকায় মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। হিজড়াদের এসব কার্যকলাপ দেখে উৎসুক জনতা রাস্তার পাশে ভিড় করেন।
    এরপর, বরের সাথে থাকা স্বজনরা হিজড়াদের ৩ হাজার টাকা চাঁদা দিলে তারা পথ ছাড়ে। পরবর্তীতে বরযাত্রী বহরটি হবিগঞ্জ-কামড়াপুর বাইপাস দিয়ে সড়ক পথে ইমামবাড়ি রওয়ানা দেয়। পথিমধ্যে বরযাত্রীবাহি গাড়িটি কামড়াপুর ব্রীজের নিকট পৌছলে বেবিষ্ট্যান্ড এলাকার হিজরা সুজানা পাগলীর নেতৃত্বে হিজরাদের একটি গ্রুপ গাড়ি আটকিয়ে করে চাঁদা দাবি করে।
    এ সময় বরযাত্রীর সাথে থাকা স্বজনরা কিছু টাকা দিয়ে তাদের বিদায় করতে চাইলে শুরু হয় দুইপক্ষে বাকবিতণ্ডা। এক পর্যায়ে সুজানা পাগলীর নেতৃত্বে হিজরা বরযাত্রীবাহি গাড়ি ভাংচুর করে।

    স্থানীয় লোকজন বরযাত্রীবাহি গাড়ির লোকজনের চিৎকারে এগিয়ে এলে হিজরারা সটকে পড়ে। বিষয়টি বরের স্বজনরা স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুর রহমানকে অবগত করলে তিনি তাদেরকে বিচারের আশ্বাস দেন। সন্ধ্যায় হিজরা সুজানা পাগলীকে উমেদনগরে খবর দিয়ে এনে বিষয়টি মিমাংসা করে দেন।
    সুত্র জানায়, হিজড়াদের মূল টার্গেট থাকে বরযাত্রীদের গাড়ি। তবে শুক্রবার এলেই বেড়ে যায় তাদের উৎপাত। বরযাত্রীদের গাড়ি দেখলেই থামার সংকেত দিয়ে চাঁদা দাবি করে তারা।
    প্রতিটি গাড়ি থেকেই ২ থেকে শুরু করে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে। কেউ চাঁদা দিতে না চাইলে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি দেখিয়ে অপমান করে। তাই নারী পুরুষ ও বাচ্ছাদের সামনে নিজেদের সম্মান বাঁচাতে বাধ্য হয়েই চাঁদা দেন সাধারণ মানুষ।

    পুলিশ বলছে ‘হিজড়ারা নিজেরা ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে কেউ কোন অভিযোগ দেয় না। মানুষও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে চায় না। তবে হিজড়াদের বিরুদ্ধে লাঞ্ছনা কিংবা চাঁদাবাজির সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
    সাধারণ মানুষকে হয়রানি, লাঞ্ছনা আর চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে চাইলে হিজরা সমিতির সভাপতি সাহেব আলী জানায়, ‘যারা হিজড়া বেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কিংবা অন্য কোন উপায়ে টাকা নেয় তাদের অনেকেই প্রকৃত হিজড়া নয়। এদের অধিকাংশই পুরুষ।
    তারা বিনাশ্রমে অর্থ উপার্জনের জন্য হিজড়া সেজে হয়রানি-চাঁদাবাজি করে।তিনি আরো বলেন, ‘অনেকেই পুরুষ থেকে অপারেশনের মাধ্যমে নিজেদের বেশ স্থায়ীভাবে পরিবর্তন করেছে।

    মানুষকে লাঞ্ছিত করে প্রকৃত হিজড়াদের ইমেজ নষ্ট করছে নকল হিজড়ারা। যারা প্রকৃত হিজড়া তারা মানুষের দেয়া টাকাতেই খুশি থাকে। আমরা চাই ওইসব নকল হিজড়াদের শনাক্ত করে শাস্তি দেয়া হোক।