হবিগঞ্জ বাহুবলে যুব সংহতি নেতাকে কুপিয়ে হত্যাঃআটক-২

    0
    185

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৮ফেব্রুয়ারী,হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের বাহুবলেমিরপুর ইউনিয়ন যুব সংহতির সভাপতি রফিক মিয়াকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে কুপিয়ে হত্যাকরেছে দুর্বৃত্তরা।রোববার সকাল ১১টায় পুলিশ রেললাইন থেকে লাশ উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্ধেহে পুলিশ দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে।

    জানা যায়, উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের পশ্চিমজয়পুর গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে রফিক মিয়া শনিবার রাত ১টার দিকে প্রকৃতির ডাকা সাড়া দিতে ঘর থেকে বের হয়। এরপর আর ঘরে ফিরে আসেনি।  রাত ২টার দিকে রফিক মিয়ার স্ত্রী তাসলিমা আক্তার তাকে ঘরে দেথতে না পেয়ে চিৎকার করলে আশপাশের
    লোকজন ছুটে এসে বাড়ির আশ-পাশসহ পুরো গ্রাম খোজাখুঁজির একপর্যায়ে ভোরে বাড়ির দক্ষিণ পার্শ্বে জমিতে রক্ত,তার পড়নের লুঙ্গি-গেঞ্জি ও রক্ত মাখা একটি কুড়াল দেখতে পায় তার স্বজনরা। পরে বাহুবল মডেল থানায় খবর দিলে ঘটনাস্থলে এসে আলামত সংগ্রহ করে পুলিশ।
    সকাল ১১টার দিকে নিহতের বাড়ি থেকে ২ কিলোমিটার দুরে ঢাকা-সিলেট রেল সড়কের উপজেলার বারআউলিয়া নামকস্থানে স্থানীয়রা রেল লাইনের উপর ট্রেনে কাটা লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে রফিক মিয়ার চার খন্ডিত লাশ উদ্ধার করে হবিগঞ্জ মর্গে পাঠায়।
    এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় একই গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে জাহির মোল্লা (৪৫) ও আবুল কালাম (৪৮) কে আটক করে পুলিশ।
    নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, বাড়ির রাস্তা নিয়ে পাশের ঘরের জাহির মোল্লা, আবুল কালাম ও হাশিম মিয়ার সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। গত তিন মাস আগে বাহুবল-নবীগঞ্জের এমপি এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু বিরোধীয় রাস্তা দিয়ে নিহত রফিক মিয়ার বাড়িতে আসতে চাইলে এমপিকে বাঁধা প্রধান করা হয়। পরে বাহুবল উপজেলা চেয়াম্যান আব্দুল হাই এর মধ্যস্থতায় এমপিকে বাড়িতে প্রবেশ করার সুযোগ করে দেয়া হয়। নিহত পরিবারের দাবী রাস্তা নিয়ে বিরোধের জের ধরেই তাকে হত্যা করা হয়েছে।
    এদিকে সরেজমিনে সকালে নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, রফিক মিয়ার ছয় মাসের শিশুকন্যা মুনতাহার আক্তার ফারহানা ঘরের বারান্দায় প্রতিবেশী এক মহিলার কোলে বসে মানষের ভিড় দেখে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সে জানেনা বাড়িতে কি হয়েছে,মানুষ দেখে শুধু দু’হাত নাড়ছে। ঘরের ভিতরে গিয়ে দেখা যায় তার আরেক সন্তান তিন বছরের শিশু শোয়েব আহমেদ মাহদি বিছানায় ঘুমিয়ে আছে আর খাটের এক পাশে স্ত্রী
    তাসলিমা আক্তার বাক হারিয়ে বসে আছেন।
    প্রতিবেশী মহিলারা মাথায় হাত বুলিয়ে সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। বড় ভাইয়ের খন্ডিত লাশ রেল লাইনের উপর পাওয়া গেছে শুনে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিল ছোট ভাই ছাদিক মিয়া।
    নিহতের বৃদ্ধ মা ফুলবানু বুকফাটা আর্তনাদ করে জানান, আমার ছেলে কি এমন দোষ করেছিল যে তাকে মেরে ফেলতে হবে। আমার ছেলে সাতদিন যাবত অসুস্থ অবস্থায় বিছানায় ছিল। আগে জানলে আমার বুকের ধনকে ঘর থেকে একা বাহির হতে দিতাম না। যারা আমার তিন নাতি-নাতনিদের এতিম করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
    এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বলেন, রাস্তার বিরোধীয় বিষয়টি নিয়ে অনেকবার সমাধানের চেষ্টা করেছি। প্রতিপক্ষের লোকজন সমাধানে যেতে রাজি হয়নি।
    খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হবিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এমএ মুনিম চৌধুরী বাবু, বাহুবল উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হাই, এডিশনাল এসপি শহিদুল ইসলাম ও র্যাবের ডিএডি বেলাল মিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।