২০মে চা শ্রমিক দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবী

    0
    225

    আমারসিলেট24ডটকম,২১মে,শাব্বির এলাহীঃ শহীদদের স্মরণে পুষ্প¯তবক অর্পন, র‌্যালী, আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে চা শ্রমিক দিবস পালিত হয়। সমাবেশে বক্তারা ২০০ টাকা দৈনিক মজুরী, ভিটা উচ্ছেদ আইন বাতিল, ক্যাজুয়েল লিভ প্রদান, উচ্চ শিক্ষা ও চাকুরীতে কৌটা, চা শ্রমিকদের শিক্ষা বৃত্তি পুণ: চালু সহ ২০ মে চা শ্রমিক দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবী জানান। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের মৃত্তিঙ্গা চা বাগানের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এক বিরাট চা শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে শহীদ মিনারে চা শ্রমিকদের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়। পরে এক বিরাট র‌্যালী বাগানের বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরী। স্থানীয় ইউপি সদস্য চা শ্রমিক নেতা ধনা বাউরির সভাপতিত্বে ও মৃর্ত্তিঙ্গা চা ছাত্র যুব পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মানিক প্রসাদ পালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন মৃর্ত্তিঙ্গা চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি নিরঞ্জন তন্তবাই। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কুল চন্দ্র তাঁতী, মৃর্ত্তিঙ্গা চা ছাত্র যুব পরিষদের সভাপতি দ্বীপ নারায়ণ পাল, চা শ্রমিক নেতা মাসুদ আলী, কাজল কুর্মী, সুনারাইন কুর্মী, আরতী ঘোষ, নিতাই তাঁতী, মো: আলী, আং জব্বার, লালসাই উড়াং, হালেমা বিবি, গঙ্গা প্রসাদ পাল, আবুল কালাম, নয়ন ঘোষ, শিব নারায়ণ কুর্মী, চুন্টু উড়াং, রাজপাল কুর্মী, হরিকিশোর তাঁতী, অনন্ত দাশ প্রমুখ। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরী বলেন, চা-শ্রমিকদের কাছে ২০শে মে একটি স্বরণীয় দিন। ১৯২১ সালের ২০শে মে ঘটে যাওয়া সেই রক্তাক্ত ঘটনা স্মরণ করেই এই দিবসটি প্রতিবছর চা-শ্রমিকরা পালন করে থাকে বাগানে বাগানে। শোষণ মুক্তির সংগ্রামের ইতিহাসে ত্যাগের এই গৌরবোজ্জ্বল এই দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় চা শ্রমিকরা স্মরণ করে প্রতি বছর। কিন্তু যে মুক্তির জন্য শ্রমিকরা ৯৩ বছর আগে প্রতিবাদী হয়েছিল তার সমাধান আজও হয়নি। সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, চা-শ্রমিকদের শ্রমে এই চা-শিল্প বিশ্বব্যাপী ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করলেও তারা তাদের ন্যায্য মজুরি থেকে বরাবরই বঞ্চিত হয়। এখনও চা শ্রমিকরা দৈনিক মাত্র ৬৯ টাকা মজুরিতে কাজ করে বাগানে। তৎকালীন সরকার ও মালিকদের নানামুখী নির্মম নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ১৯২১ সালের ২০শে মে কাছার ও সিলেট অঞ্চলের প্রায় ত্রিশ হাজার চা-শ্রমিক বিদ্রোহ করে নিজ মুল্লুকে (নিজ জন্ম স্থানে) ফিরে যেতে চাইলে মালিক ও সরকার পক্ষের মদদে চাঁদপুর মেঘনা নদীর স্টিমারঘাটে মালিকদের সহযোগিতায় গোর্খা সৈন্যরা হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠে। এই ঘটনায় বেশ কিছু শ্রমিক নিহত হয়। তাই এ দিনটি আজও চা শ্রমিকদের মুক্তি আন্দোলনের স্মারক ‘চা শ্রমিক দিবস’ হিসেবে পালন হয়ে আসছে। তাই ২০ মে চা শ্রমিক দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবী জানান।