ইউপি সদস্য-স্কুল শিক্ষকের সহায়তায় কমলগঞ্জে বাল্যবিয়ে সম্পন্ন

    0
    209

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,০৪অক্টোবর,কমলগঞ্জ প্রতিনিধিঃকমলগঞ্জ উপজেলাকে বাল্য বিবাহ মুক্ত ঘোষণা করার পর উপজেলার পতনউষার ইউনিয়নে এক ইউপি সদস্য ও স্কুল শিক্ষক (বিয়ের কাজী) জন্মসনদ সংশোধন করে বাল্য বিয়ে সম্পন্ন করেছেন। বাল্য বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পর বিষয়টি জানাজানি হলে তথ্য সংগ্রহকালে কাজী সংবাদ কমীর সাথে অশালীন ভাষা ব্যবহার করেন। এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রেরণ করা হয়েছে।

    স্থানীয়দের অভিযোগে জানা যায়, জন্মসনদ সংশোধন করে একটি ভূয়া জন্মতারিখ লিখে ঐ জন্মসনদের আড়ালে কাবিন রেজিষ্টারী ও বিয়ে সম্পন্ন করেছেন পতনউষার ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আশিক মিয়া ও বিয়ের কাজী ইউনিয়ন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের এমপিওভূক্ত শিক্ষক আব্দুল মজিদ। শহীদনগর বাজারে বিয়ের কাবিন সম্পন্ন করে গত ১৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়। উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের মৌলা মিয়ার মেয়ে হালিমা বেগম এর সাথে রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নের মরিচা গ্রামের ফয়েজ ক্বারী সাহেবের ছেলে তারেক আহমদ এর সাথে কন্যার পিত্রালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বাল্য বিয়ে হয়। শ্রীসূয্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পতনউষার উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি রেজিষ্টার অনুযায়ী হালিমা বেগমের জন্মতারিখ ১৯৯৯ সনের ১১ অক্টোবর। ইত্তেফাক কমলগঞ্জ প্রতিনিধি নুরুল মোহাইমীন মিল্টন অবিযোগ করেন,তিনি কাজী আব্দুল মজিদের কাছে বাল্য বিয়ের কাবিন রেজিষ্ট্রারী সম্পর্কে জানতে চাইলে  কাজী বিষয়টি স্বীকার করলেও তথ্য পেতে চাইলে তিনি মোবাইল ফোনে তার সাথে অশালীন আচরন করেন । কাজী আব্দুল মজিদ একাধারে মুন্সিবাজার ও পতনউষার দুই ইউনিয়নের কাজী ছাড়াও ইউনিয়ন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের এমপিওভূক্ত সহকারী শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিদ্যালয়ে পাঠদানেও তাঁর যথেষ্ট ত্রুটি রয়েছে বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক অভিযোগ করেন।

    বিষয়টি নিয়ে সোমবার সাংবাদিক মিল্টন বিদ্যালয় থেকে সংগৃহীত জন্মতারিখ, বিয়ের কার্ডসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

    অভিযোগ বিষয়ে ইউপি সদস্য আশিক মিয়ার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। স্কুল শিক্ষক ও কাজী আব্দুল মজিদ বলেন, ‘তোকে বিয়ের কাবিন দেখাতে ও তথ্য দিতে বাধ্য নয়। পারলে কিছু করিস।’

    উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আব্দুল মজিদের এধরনের আচরন গুরুতর অপরাধ। এবিষয়ে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

    কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, তিনি অভিযোগ পেয়েছেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

    উল্লেখ্য, গত ১৭ আগষ্ট বুধবার দুপুরে কমলগঞ্জ উপজেলা সদরের জেলা পরিষদ অডিটরিয়াম কাম মাল্টিপারপাস হলরুমে উপজেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ও সামাজিক সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, এনজিও কর্মীসহ সর্বস্তরের জনগনের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ বাক্য পাঠ ও সমাবেশের মাধ্যমে কমলগঞ্জ উপজেলাকে বাল্য-বিবাহ মুক্ত ঘোষনা করেন মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান।