কমলগঞ্জে আবাদের আওতায় ৪৯০০ হেক্টর অনাবাদী জমি

    0
    196

    পাইলট প্রকল্প গ্রহনেঃকৃষকের মুখে ফসলের হাসি

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৮ফেব্রুয়ারী,শাব্বির এলাহী,কমলগঞ্জ(মৌলভীবাজার): প্রবাসী অধ্যুষিত মৌলভীবাজারের ৭টি উপজেলায় প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ জমি অনাবাদী থাকে। এতে এ অ লে সবজিসহ নানা ফসলের ঘাটতি দেখা দেয়। মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের নিদের্শক্রমে সিলেট বিভাগে অনাবাদী জমিগুলো আবাদের কার্যক্রম গ্রহন, বাস্তবায়ন ও তদারকীর নিমিত্তে বিভাগীয় পর্যায়ে বিভাগীয় কৃষি উন্নয়ন বিষয়ক কোর কমিটির  আওতায় কমলগঞ্জে অনাবাদী জমি আবাদের আওতায় আনতে পাইলট প্রকল্প হাতে নিয়েছে কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি উন্নয়ন কোর কমিটি। উপজেলার ২টি ইউনিয়ন যথাক্রমে আদমপুর ও পতনউষারের শতভাগ পতিত জমি বোরো আবাদের আওতায় আনার কার্যক্রম গ্রহন করা হয়েছে। এতে প্রায় ৫শত কৃষক উপকৃত হবেন। এ প্রকল্প সফল হলে পর্যাক্রমে উপজেলার বাকী ইউনিয়নে এ পদ্ধতি চালু করা হবে। এতে উপজেলায় উৎপাদিত কৃষিপণ্য চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করা সম্ভব হবে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।

    উপজেলা কৃষি উন্নয়ন কোর কমিটি সূত্রে জানা যায়, কমলগঞ্জের আদমপুর ও পতনউষার ইউনিয়ন প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ জমি অনাবাদী থেকে যায়। এসব জমির কিছুু অংশে আউশ কিংবা আমন ফসল হলেও সেচ সুবিধা না থাকায় ৪৯০০ হেক্টর জমিতে কোনো প্রকার সবজি কিংবা ফল  ফসল উৎপাদন হয় না। উপজেলা কৃষি উন্নয়ন কোর কমিটি সমন্বয় সভায় এ দুইটি ইউনিয়নকে মডেল ইউনিয়ন ঘোষণা করে এখানে প্রয়োজনীয় সেচ সুবিধা ও বীজ প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। এ দুইটি ইউনিয়নে ১৫টি গ্রামের অনাবদী জমির মালিকদের ২০টি ভাগে বিভক্ত করে প্রতিটি গ্র“পে ২৫জন কৃষক অন্তুভুক্ত করে ২০টি সেচ পাম্প বিতরণ করা হয়েছে। এতে করে ২টি ইউনিয়নের মোট ৫শত কৃষক উপকারের আওতায় আসবে।

    উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হক জানান, ইতিমধ্যে ইউনিয়নের জন্য ১৯টি সেচ পাম্প বিতরণ করা হয়েছে। এই সেচ পাম্প এর অর্থ উপজেলা পরিষদ হতে খরচ করা হয়েছে। এছাড়া কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে বিভিন্ন জাতীয় বীজ প্রদান করা হচ্ছে। কৃষকদের উৎসাহ দিতে এবং তাদের উদ্বুদ্ধ করতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তিনি জানান, এ ইউনিয়ন দুইটিতে সফলতা পাওয়া গেলে পর্যাক্রমে সব ইউনিয়নে এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হবে। এতে কৃষকদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করে তারা লাভবান হতে পারবে।

     উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সামসুদ্দিন আহমেদ জানান, উপজেলার মধ্যে আদমপুর ও পতনউষার ইউনিয়নে বোরো চাষের সময় সবচেয়ে বেশি জমি অনাবাদী থাকে। অথচ এসব জমিতে সেচ সুবিধার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ ধান,শাক-সবজি ও ফল ফসল উৎপাদন সম্ভব। আমরা এ বিষয়টি চিন্তা করে আদমপুর ও পতনউষার ইউনিয়নকে বেছে নিয়েছি। কৃষকদের প্রয়োজনীয় সাপোর্ট ও সেচ সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আদমপুর ইউনিয়নের ২২৯১ হেক্টর ও পতনউষারে ২৬৭৮ হেক্টর অনাবদী জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। সেচ সুবিধা না থাকায় আউস ধান ছাড়া অন্য কোনো ফসল আবাদ হয় না। তাই এ দুইটি ইউনিয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে কৃষিপণ্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ফসলের মধ্যে শিম, লাউ, কদু, বরবটি, টমেটো, শসা, লেবু, বেগুন, হেলে াসহ নানা শাক-সবজির পাশাপাশি আনারস, লিচু, পেঁপে,জলপাই ইত্যাদি ফল ফসল চাষাবাদ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হবে।

    আদমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদাল হোসেন জানান, তার ইউনিয়নের কোনাগাঁও, আধকানী, পুর্বজালালপুর, বনগাঁও,কাটাবিল.উল্টরভাগ.মধ্যভাগসহ ১০টি গ্রামের কৃষকদের মধ্যে সেচ পাম্প বিতরণ করা হয়েছে। এতে করে প্রায় ৩শতজন কৃষক জমি আবাদের সুযোগ পেয়েছে। কমলগঞ্জে উপজেলায় ১৮ হাজার ৬২ হেক্টর আবাদী জমি রয়েছে। এ সব জমিতে শুধু আউশ ও আমন ফসল উৎপন্ন হয়। পর্যাপ্ত সেচ সুবিধা পেলে ফসলের উৎপাদনও অনেকগুণ বেড়ে যাবে বলে আশা করছে উপজেলা কৃষি উন্নয়ন কোর কমিটি। এদিকে পাইলট প্রকল্প আওতায় আসা ইউনিয়ন দুইটির সুবিধাভোগী কৃষকদের মধ্যে উৎসাহ দেখা দিয়েছে। তারা জমি চাষে বেশ উৎসাহী হয়েছেন। আদমপুর  ইউনিয়নের ঘোড়ামারা গ্রামের উপকারভোগী কৃষক বিশ্বজিত সিংহ ,মছদ্দর খাঁন জানান, বিগত সময়ে তাদের জমি অনাবাদী থাকতো। পাইলট প্রকল্পে আওতায় আবাদের উপযোগী হওয়ায় আমরা খুশি।