ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলোর শিক্ষার্থীরা হুমকির মুখে

    0
    714

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,১৯মে,জাহাঙ্গীর আলম ভুঁইয়া,সুনামগঞ্জঃসুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলের প্রাকৃতিক দূর্যোগ হলেও মানব সৃষ্টি দূর্যোগের কারনেই এবার বোরো ধান উৎপাদনে সমৃদ্ধি সুনামগঞ্জ জেলা হুমকির মুখে পরেছে। হুমকির মূখে রয়েছে কৃষক পরিবার ও তাদের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা জীবন নিয়ে। যেখানে দু-বেলা দু-মোঠো ভাত যোগার করতে হিমসিম খেতে হয়। সেই পরিবার গুলো একমাত্র সম্পদ এক ফসলী বোরো ধান হারিয়ে তাদের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা জীবনের আনুশাঙ্গিক খরচ মিটাতে হিমসিম খাচ্ছে। আর ঘরে চাল নেই,নেই টাকা ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার খরচ ও পরিবারের চাহিদা কিভাবে মিটাবে এ নিয়ে উৎবেগ,উৎকণ্ঠার মধ্যে দিয়ে সময় পাড় করছে অভিভাকগন। অসময়ে জীবন বাচাঁর একমাত্র সম্পদ বোরো ধান,হাওরের মাছ ও গৃহপালিত পশু বিলিন হওয়ায় কৃষক পরিবার গুলোতে হাহাকার বিরাজ করছে।

    সেই শোক কাটতে না কাঠতেই এখন হাওর পাড়ের অসহায় মানুষ গুলো একের পর এক দূর্যোগপূর্ন বাস্থবতার কারনে ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা জীবন নিয়ে কিং কর্তব্য বিমূঢ অবস্থায় সময় পাড় করছে হাওরবাসী। চার দিকে পানি আর পানি তার পরও হাওরে নেই মাছ। বংশ পরমপরায় বছরের পর বছর যে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে তাও শেষ হাওরে মাছ নেই। বৈশাখ মাসে রোবো ধান কাঠার পর হাওরে মাছ ধরেই জীবন বাকী সময় সংসার পরিচালিত করছিল হাওর বাসী। কিন্তু এবার সব শেষ হয়ে গেছে বানের পানিতে বোরো ধান আর নানান কারনে মাছে মরকে। সরকার ঐ সব ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের দিকে সহযোগীতার হাত বাড়ালেও তা সংকুলান হচ্ছে না। ওএমএস চাল,ভিজিএফ কার্ড সহ সরকারী সহযোগীতা যা পাচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবেই কম।

    অনেক স্থানেই প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থরা পাচ্ছে না সরকারী সহযোগীতা। সরকারী ভাবে বিনা মূল্যে শিক্ষার্থীরে মাঝে বই বিতরন করলেও শিক্ষা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিস পত্রের চাহিদা মিটাতে হিমসিম খাচ্ছে অসহায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলো। যার জন্য হাওর পাড়ের কৃষক পরিবারে ছেলে মেয়েদের শিক্ষা জীবন এখন হুমকি মুখে পড়েছে। আর পরিবারের বর্তমান অসহায়ত্বে চিত্র দেখে অনেক শিক্ষার্থী চোখে মুখে অন্ধকার দেখছে। অনেকেই নিজের জীবনের কথা না ভেবে পরিবারের কথা মাথায় রেখে ছেড়ে দিচ্ছে শিক্ষা জীবন। যোগ দিচ্ছে বিভিন্ন কাজে না হয় চলে যাচ্ছে শহরে জীবিকার তাগিদে। জেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানাযায়,জেলায় মাধ্যমিক স্কুল ২২৫টি,মাদ্রসা ৯২টি,কলেজ ৩১টি রয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্টানে শিক্ষার্থী আছে ১লাখ,২১হাজার ২৮১জন শিক্ষার্থী এর মধ্যে জেলার তাহিরপুর,দিরাই,শাল্লা,জগন্নাথপুর,ধর্মপাশা,জামালগঞ্জ,বিশ্বম্ভরপুর ও দোয়ারা বাজার উপজেলার হাওরপাড়ে শিক্ষার্থী রয়েছে ৮০হাজার।

    জেলায় হাওর পাড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছে ৯০হাজারের অধিক শিক্ষার্থী। তাদের খরচ ও পরিবারের চাহিদা কিভাবে মিটাবে এ নিয়ে উৎবেগ,উৎকণ্ঠার মধ্যে দিয়ে সময় পাড় করছে অভিভাকগন। তাহিরপুর উপজেলায় ১৩১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৭হাজার শিক্ষার্থীর অধিক,মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা রয়েছে ২৩টি,শিক্ষার্থী ১২হাজারের অধিক,দুটি কলেজ,শিক্ষার্থী ২হাজার ৩শতাধিকের বেশি। এই সব শিক্ষার্থীদের পরিবার বোরো ধানের উপর নির্ভরশীল ছিল। উপজেলার ২৩টি হাওরের উৎপাদিত বোরো ধান হারিয়ে সাড়ে ৩লক্ষাধিক পরিবারের জীবন-জীবিকা ধমকে গেছে। অনেকেই শহরে চলে গেছে জীবন বাচাঁর তাগিদে।

    শিক্ষার আনুশাংগিক খরচ মিটিতে না পেরে পরিবারের কথা ভেবে অনেকেই বিভিন্ন কাজে যোগ দিচ্ছে বলে জানায় হাওর পাড়ের লোকজন। জেলার সচেতেন মহল মনে করেন,স্থানীয় কৃষক পরিবার গুলোকে এবার ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় ঐ সব পরিবার গুলোতে এখন হাহাকার। খ্যাদের জোগান দিতে গিয়ে এখন হিমসিম খাচ্ছে। তাই শিক্ষা ক্ষেতে হাওর পাড়ের শিক্ষার্থী জন্য দূত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিয়ে ঝড়ে পড়বে হাজার হাজার শিক্ষার্থী। সেই সাথে ক্ষতিগস্থ কৃষকদের পাশে সরকার গুরুত্ব সহকারে পাশে না দাড়ালে আগামীতে বোরো ধান চাষাবাদ করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেবে। বোরো ধান উৎপাদনে সমৃদ্ধ এ জেলার কৃষকরা বোরো ধান উৎপাদন বন্ধ হলে ফলে শুন্য হয়ে যাবে হাওর। হাওর পাড়ের অভিভাবকগন জানান,সরকার যদি হাওর পাড়ের আমাদের সন্তানদের এবার লেখা-পড়া করার সুযোগ-সুবিধা না দেয় তাহলে আমাদের সন্তানদের লেখা-পাড়া বন্ধ করে দিতে হবে।

    কারন এবার আমাদের একমাত্র সম্পত জীবন বাচাঁর হাতিয়ার বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। নিজেরা কি খেয়ে বাচঁব তাই ভেবে পাচ্ছি না। সুনামগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন জানান,আমি আমার সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি যে এবার আগামী ফসল না উঠা পর্যন্ত হাওর পাড়ের শিক্ষা প্রতিষ্টানের ঐসব ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সকল শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তির আওতায় আনার জন্য। এই বিষয়টি নিয়ে আমি কথাও বলেছি সবার সাথে তবে এখনও পর্যন্ত কোন কার্যকর প্রদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুমতি পাই নি। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান-এ উপজেলার ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সকল শিক্ষার্থীদের খরছের ব্যয়বার মাননীয় এমপি মহোদয় নিয়েছেন। সে অনুযায়ী কাজ শুরু হচ্ছে।

    তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বলেন-এবার হাওর সম্পূর্ন পানিতে ডুবে যাওয় কৃষকরা দিশেহারা। এখন হাওর পাড়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন হুমখির মুখে পড়েছে। সরকার যে পরিমান সহযোগীতা করছে তা খুবেই কম চাহিদা অনুযায়ী আরো বাড়ানো প্রয়োজন।

    শিক্ষা ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নেবার দাবী জানাই। তা না হলে সঠিক ভাবে সঠিক সময় হাওর রক্ষা বাঁধে কাজ না করায় বানের পানির মত হাওর যে ভাবে ডুবে গেছে তেমনি টাকা ও প্রয়োজনীয় শিক্ষার আনুসাংঙ্গিক চাহিদা মিটাতে না পেরে শিক্ষার্থীরাও লেখা পড়া ছেড়ে বিভিন্ন কাজ যোগ দিবে না হয় শহরে চলে যাবে জীবন বাচাঁতে।