চলো যাই ইজতিমায়

    0
    284

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১০ফেব্রুয়ারী,আবছার তৈয়বীঃ  আজ থেকে চট্টগ্রামে শুরু হচ্ছে- দাওয়াতে ইসলামীর ৩ দিন ব্যাপী ইজতিমা। মাসখানিক আগে থেকে শুরু হয় এই ইজতিমার জোর প্রচারণা। তাঁদের অনলাইন প্রচারণাও উল্লেখ করার মতো। সুন্নাতি সাজে সজ্জিত দা’ওয়াতে ইসলামীর মুবাল্লিগ ভাইদের চেহারা গুলো দেখতে আমার বড় ভালো লাগে! বিশেষ করে তাঁদের সবুজ পাগড়িটা দেখলে আমার ‘সবুজ গম্বুজের’ কথা মনে পড়ে যায়। তাই আমি তাঁদের চেহারা দেখার পর ওই পাগড়িটা দেখতেই থাকি। দা’ওয়াতে ইসলামীকে আমি ভালোবাসি। ভালোবাসি বলেই আমি তাঁদের নিয়ে ভাবি। ভালোবাসি বলেই আমি গত বছর তাঁদের জন্য একটি ‘তারানা’ (গীতিকাব্য) রচনা করেছি। ভালোবাসি বলেই তাঁদের নিয়ে মাঝে-মধ্যে কিছু লেখার চেষ্টা করি।

    ‘দা’ওয়াতে ইসলামী’ একটি আন্তর্জাতিক দাওয়াতি সংস্থা। পৃথিবীর প্রায় সবকটি দেশেই তাঁদের কার্যক্রম চলছে। ‘গান্ধা মেওয়াতি’ তাবলীগিদের সার্থক কাউন্টারপার্ট হিসেবে আমরা দা’ওয়াতে ইসলামী দেখতে চাই। তাঁদের ‘ওয়েল ট্রেইন্ড’ জনবল আছে। তারপরও তাঁরা অন্য সুন্নী সংগঠন গুলোর মতো চট্টগ্রাম কেন্দ্রীক কেন? বাংলাদেশে তাঁদের সবচেয়ে বড়ো ইজতিমাটি ঢাকায় না হয়ে চট্টগ্রামে কেন? আমি বিগত ২ বছর থেকে এই প্রশ্নটি বিভিন্ন জায়গায় করেছি, কিন্তু কোন সদুত্তর পাইনি। রাজধানী ঢাকার গুরুত্ব কবে আমাদের মাথায় ঢুকবে? এর রকম একটি বিশাল ইজতিমা ঢাকায় করা গেলে কী অঘটনই না ঘটে যেতো! বুঝলাম- অন্য সংগঠনের সামর্থ নেই, কিন্তু তাঁদের তো সামর্থ আছে। তাঁরা কেন সারা বাংলাদেশের মাদানী কাফেলা গুলোকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসবে- কোন যুক্তিতে?

    ইতোমধ্যে দা’ওয়াতে ইসলামীকে নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠেছে। দা’ওয়াতে ইসলামীর ভেতরেও কিছু ‘ঘুনেপোকা’ ঢুকেছে। একটি বিশেষ ‘কালো চিহ্নিত’ গোষ্টি দাওয়াতে ইসলামীর গুরুত্বপূর্ণ পদে নানা কৌশলে পোক্ত অবস্থান নিয়েছে। তারা সুন্নী প্রতিষ্ঠান, শীর্ষস্থানীয় সুন্নী অালেম ও বিভিন্ন দরবার নিয়ে আজে-বাজে মন্তব্য করেছে। তারা কৌশলে তাদের স্বার্থসিদ্ধি করছে। দা’ওয়াতে ইসলামীর ‘মাদ্রাসাতুল মদীনা’ এ টু জেড তাদের নিয়ন্ত্রণে! দা’ওয়াতে ইসলামীর মুহতারাম নিগরানবৃন্দ কি এ ব্যাপারে বেখবর? ‘দাওয়াতে ইসলামীর প্রতি মাদানী গুজারিশ’ লেখায় আমি সে বিষয়ে কিছুটা আলোকপাত করেছি। তাদেরই একজন আমার লেখায় মন্তব্য করে বলেছিলেন- “দাওয়াতে ইসলামী’তে আমাদের অবস্থান পুরোপুরি জানলে আপনি ‘থ’ হয়ে যাবেন”! আমি ‘থ’ হইনি। কারণ, আমি জানি- তারা ‘সূঁচ হয়ে ঢুকে আর ফাল হয়ে বেরোয়’। আগে ভাগে সতর্ক না হলে একদিন দেখবেন- আমও যাবে ছালাও যাবে। তাই আমি দাওয়াতে ইসলামীর নিগরানবৃন্দের খিদমতে গুজারিশ রাখবো- প্লিজ! আপনাদের চোখ-কান খোলা রাখুন। কথায় বলে- সাবধানের মার নেই।

    শুনেছি- ইজতেমায় নাকি মুরিদও বানানো হয়। সেই মুরিদ বানানোর পদ্ধতি নিয়েও বিতর্ক আছে। আমি সেদিকে যাবো না। আমি বলবো- যেমনেই পারেন মুরিদ বানান। কোন অসুবিধা নেই। কিন্তু ইজতেমার মতো বিশাল প্রোগ্রাম- যেখানে বিভিন্ন দরবার সংশ্লিষ্ট লোকজন অংশ নিয়ে থাকেন, সেখানে মুরিদ বানালে ইজতেমার ‘আবেদন’টাই নষ্ট হয়ে যায়। আমাদের একটি প্লাটফরম থাকুক না- যেখানে সকল দরবারের এবং সকল মতের মানুষদের সত্যিকার ‘মিলনমেলা’ (ইজতিমা) হয়। ইজতিমায় গিয়ে সবাই যেন স্বস্তি পায়, শান্তি পায়, আনন্দ পায়। বাংলাদেশের প্রতি জনপদে যেন জনরব উঠে- ‘চলো যাই দা’ওয়াতে ইসলামীর ইজতিমায়’।