চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের মোবাইল ছিনতাইয়ের অভিযোগ

0
124

জৈন্তাপুর (সিলেট) প্রতিনিধি: সিলেটের জৈন্তাপুর সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন ভারতীয় গরু মহিষ প্রবেশে কৃষকের ফসল হানি হচ্ছে। কৃষকদের কান্নায় আকাশ বাতাশ ভারী। কিন্তু প্রশাসন নিরব ভূমিকায় বলে অভিযোগ উঠেছে।

কৃষকদের অভিযোগ ও সংবাদের তথ্য ভিত্তিক মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টায় উপজেলার সিলেট তামাবিল মহাসড়কের সারীঘাট উত্তরপাড়স্থ সারী টু নয়াখেল রাস্তার মূখে ছবি ও ভিডিও ধারনের জন্য অবস্থান করি। এসময় ডিআই ট্রাক যোগে ভারতীয় মহিষ নিয়ে যাচ্ছে চোরাকাবারীরা। আমরা ভিডিও ধারণ করতে গেলে চোরাকারবারী দলের গডফাদার হিসাবে খ্যাত উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের হেমু গ্রামের বাসিন্দা ইয়াহিয়া মাহমুদ এবং হরিপুর বাজারের ইজারাদার চোরাকারবারীদের অন্যতম গফফাদার আজির উদ্দিন সহ অন্যান্য ৭/৮ সহযোগীরা সাংবাদিক রেজওয়ান করিম সাব্বির ও তার সহযোগী হাসান মোহাম্মদ বদরুল এর উপর চড়াও হয়ে উঠে। সাথে সাথে সাংবাদিক রেজওয়ান করিম সাব্বির এর ২টি মোবাইল ফোন এবং তার সহযোগীর ১টি মোবাইল ফোন এবং পকেট হতে মানি ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। বিষয়টি তাৎক্ষনিক ভাবে জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ইমরান আহমদ মহিলা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক, সাবেক জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহেদ আহমদকে অবহিত করা হয়।
এঘটনায় জৈন্তাপুর মডেল থানায় সাংবাদিক রেজওয়ান করিম সাব্বির বাদী হয়ে ২জনের নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

জানা যায়, দীর্ঘ দিন হতে জৈন্তাপুর উপজেলার মোকামবাড়ী, আলুবাগান, মোকামপুঞ্জি, শ্রীপুর, কেরিংটিলা, মিলাটিলা, আদর্শগ্রাম, কাঠালবাড়ী, কেন্দ্রী, ডিবিরহাওর, ঘিলাতৈল, ফুলবাড়ী, টিপরাখলা, করিমটিলা, কমলাবাড়ী, ভিতরগোল, গোয়াবাড়ী, বাইরাখেল, হর্নি, জালিয়াখলা, কালিঞ্জীবাড়ী, সারীনদীর মুখ, বাগছড়া, তুমইর, ইয়াংরাজা, বালিদাঁড়া, রাবারবাগান দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩/৪ হাজার ভারতীয় গরু মহিষ, চিনি, আলু, ইয়াবা, মদ, আমদানী নিষিদ্ধ শেখ নাছির উদ্দিন বিড়ি, ভারতীয় শাড়ী, লেহেঙ্গা, কসমেট্রিক্স, মটর সাইকেল দেদারছে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। আর এসব পন্য জৈন্তাপুর উপজেলার চেরাকারবারীদের অন্যতম গড়ফাদার ইয়াহিয়া মাহমুদ, আজির উদ্দিন গংরা বিজিবি ও পুলিশের সাথে সমন্নয় করে বাংলাদেশে প্রবেশ করে আসছে।

অপরদিকে ভারতীয় গরু মহিষ বাংলাদেশে প্রবেশের পর হাজার হাজার কৃষকের ফসলী জমির কাঁচাপাকা ধান নষ্ট করে নিঃস্ব করে দিচ্ছে। কৃষদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সরেজমিন ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে চোরাকারবারী সিন্ডিকেট সাংবাদিক সাব্বির ও বদরুলের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

সাংবাদিক সাব্বির বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে ভিডিও ধারনের প্রক্কালে চোরাকারবারী দলের গড়ফাদার ইয়াহিয়া মাহমুদ ও আজির উদ্দিন দলবল নিয়ে আমার ও আমার সহযোগীর ৩টি মোবাইল ফোন ১টি মানিব্যগ ছিনিয়ে নেন। তাৎক্ষনিক ভাবে আমি বাদী হয়ে ২জনের নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।

এবিষয়ে জৈন্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফখরুল ইসলাম জানান, জৈন্তাপুর ইউনিয়নের প্রায় ১৬/১৭টি গ্রামের কৃষকের লালিত স্বপ্ন ধ্বংস করে চোরাকারবারী দলের সদস্যরা তাদের ব্যবসার জন্য ফসল হানি করে যাচ্ছে। ইতোপূর্বে আইন শৃংঙ্খলা বৈঠকে বিষয়টি জানিয়ে কোন প্রতিকার হয়নি। সাংবাদিকদের মোবাইল ছিনতাই করার ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ইমরান আহমদ মহিলা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক, সাবেক জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহেদ আহমদ বলেন, নয়াখেল গ্রামে আমার বাড়ী এই রাস্তা দিয়ে শুনেছি প্রতিনিয়ত চোরাকারবারীরা ভারতীয় গরু মহিষ নিয়ে যাচ্ছে। সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করেতে গিয়ে চোরাকারবারীরা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা দু:খ জনক। আমি মোবাইল ফোন উদ্ধার ও ছিনতাইকারীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবী জানাচ্ছি।

জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলাম পিপিএম জানান, আমি অভিযোগ পেয়েছি, অফিসারের মাধ্যমে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি এবং মোবাইল ফোন উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছি।