দুই সিটিতে নৌকার মেয়র বিপুল ভোটে নির্বাচিত

0
109

আমার সিলেট ডেস্ক রিপোর্ট: বরিশাল ও খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনের ফলে দুই সিটিতেই বিপুল ভোটে নৌকার বিজয় হয়েছে। দুই সিটিতেই নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাতপাখার প্রার্থী। বরিশালে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত। তিনি পেয়েছেন ৮৭ হাজার ৮০৮ ভোট আর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাতপাখার মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৮২৮ ভোট। খোকন সেরনিয়াবাত ৫৩ হাজার ৯৮০ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। খুলনায় মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের তালুকদার আব্দুল খালেক।
তালুকদার আব্দুল খালেক পেয়েছেন ১,৫৪,৮২৫ এবং নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. আব্দুল আউয়াল পেয়েছেন ৬০,০৬৪ ভোট। ভোট শেষে ফল প্রত্যাখ্যান করে শুক্রবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ইসলামী আন্দোলন। সেইসঙ্গে তারা ২১ জুন অনুষ্ঠিতব্য সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে।
রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে সোমবার (১২ জুন ২০২৩) সকাল থেকেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেন। নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখের পড়ার মতো।
এদিকে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে বসে সিসি ক্যামেরায় সার্বক্ষণিক ভোট পর্যবেক্ষণ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সুষ্ঠু ভোট হওয়ায় আবারও পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলো ইসি। খুলনায় শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হলেও বরিশালে বিচ্ছিন্ন একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। ভোট শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল জানিয়েছেন, দুই সিটিতে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হওয়ায় ইসি সন্তুষ্ট।
বরিশালে ভোট চলাকালে ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম’র ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। কেন্দ্র পরিদর্শনকালে নৌকা সমর্থকরা তাকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ করেন ইসলামী আন্দোলনের এই প্রার্থী। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ইসলামী আন্দোলনের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করে বলা হয় নৌকার সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দিয়েছে হাতপাখা সমর্থকরা।
এদিকে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের ওপর হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সিসি ক্যামেরা মনিটরিংয়ের এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান।
সৈয়দ ফয়জুল করীম সাংবাদিকদের জানান, ২২নং ওয়ার্ডের ৮৭নং কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে দেখি নৌকার সমর্থকরা ভোট কক্ষে ঢুকে ভোটারদের বলছেন ‘নৌকায় ভোট দিলে দাও না হলে চলে যাও। আমি প্রিসাইডিং অফিসারকে এসব বিষয় বলছিলাম। তখন নৌকার কর্মীরা এসে আমাকে ও আমার সঙ্গে যারা ছিলেন, তাদের ওপর হামলা চালিয়ে জখম করে দেয়। আমি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে অভিযোগ দিয়েছি।’ এছাড়াও তার গাড়ি ভাঙচুর ও সঙ্গে থাকা লোকজনের ওপর নৌকার কর্মীদের হামলা এবং ৮টি কেন্দ্রে ভোটে অনিয়মের অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে নৌকা প্রতীকের প্রধান এজেন্ট আফজালুল করিম বরিশাল জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা হুমায়ুন কবিরের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন, ভোট চলাকালে নৌকার কর্মীদের ওপর হামলা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। তার অভিযোগ মতে, ৬টি ওয়ার্ডে হাতপাখার লোকজন নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের মারধর, ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়, ভোট দিতে আসা নারীদের ধর্মীয়ভাবে বুঝিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে নিষেধ করে এবং কেন্দ্রে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা লাঠি ও তলোয়ার নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। বরিশালের পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, আমরা আগে থেকেই সবাইকে সতর্ক করেছিলাম, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।