নড়াইলের চিত্রা নদীতে নারী-পুরুষের অংশগ্রহনে ‘এস এম সুলতান নৌকাবাইচ’

0
151

সুজয় বকসী,নড়াইল প্রতিনিধি: “চিত্রা আমার নদী, বইছে নিরবধি ” শ্লোগানকে সামনে নিয়ে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ও শিল্প সংস্কৃতিকে সর্বজনীন করার উদ্দেশ্যে বিশ্ব বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে নড়াইলের চিত্রা নদীতে আজ শনিবার ‘এস, এম, সুলতান নৌকা বাইচ’ প্রতিযোগীতা-২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতান ৯৯ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ নৌকা বাইচের আয়োজন করা হয়। এ নৌকাবাইচকে কেন্দ্র করে নড়াইলের চিত্রা নদীর দু’পাড়ে সৃষ্টি হয় আনন্দ-উৎসব।
এ নৌকাবাইচে নারীদের চারটি নৌকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ১২ টি নৌকা অংশ গ্রহন করে।
এর মধ্যে টালাই গ্রুপে ৪টি নৌকা,কালাই গ্রুপে-৪ টি, মহিলা গ্রুপে-৪ টি ।
নড়াইল শহরের চিত্রা নদীর শেখ রাসেল ব্রীজ এর নিচে পুরাতন ফেরিঘাট এলাকা থেকে এসএম সুলতান সেতু পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার অংশ জুড়ে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা হয়।
শনিবার দুপুরে নড়াইলের চিত্রা নদীতে নৌকাবাইচ শুরু হলেও সকাল থেকেই বিভিন্ন পেশার মানুষ নদীর দু’পাড়ে ভিড় করেন। দুপুরে নৌকাবাইচ শুরুর আগেই চিত্রা নদীর দুই পাড়, বাসাবাড়ি ও রূপগঞ্জ বাজারের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ছাদসহ গাছে গাছে লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। নদীতে নৌকা, ট্রলার, স্পিডবোটে করে বিভিন্ন বয়সের হাজারো মানুষ উপভোগ করেন নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা।
নৌকাবাইচ উপলক্ষে চিত্রা নদীর পাড়ে, বাঁধাঘাটে এবং বিভিন্ন স্থানে মিষ্টিসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা বসেছিল। সুষ্ঠু-সুন্দর ভাবে প্রতিযোগিতা শেষ করতে পেরে খুশি আয়োজকরা। খুশি অংশগ্রহণকারীরা।
জেলা প্রশাসন ও এসএম সুলতান ফাউন্ডেশন আয়োজনে দুপুর আড়াই টায় বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে বাইচের উদ্বোধন ও বাইচ শেষে শহরের বাঁধাঘাট চত্বরের অস্থায়ী মঞ্চে বিজয়দের মাঝে পুরস্কার বিতরন করেন প্রধান অতিথি খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ হাসানুজ্জামান,পিপিএম।।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী এর সভাপতিত্বে পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শাশ্বতী শীল, পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তারসহ সুধীজন, ,মুক্তিযোদ্ধা জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, এস, এম, সুলতান ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা, সরকারি- বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারি , সাংবাদিক, ব্যাবসায়ি নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ এ বাইচে উপস্থিত ছিলেন।

এ প্রতিযোগীতায় পুরুষদের টালাই গ্রুপে প্রথম হয়েছে মাগুরার “আকরাম খান ” নৌকা , দ্বিতীয় হয়েছে তেরখাদা খুলনার “ ভাই ভাই জল পরী ”নৌকা ও তৃতীয় হয়েছে গোপালগঞ্জ জেলা টুঙ্গিপাড়ার “ জয় মা কালী ” নৌকা। পুরুষদের কালাই গ্রুপে প্রথম হয়েছে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ার জোরারিয়ার নিকুঞ্জ কুমার মন্ডলের “ মা শীতলা ” নৌকা, দ্বিতীয় হয়েছে যশোর এর জগন্নাথ পুরের “ আব্দুল কাদের খান” নৌকা এবং তৃতীয় হয়েছে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার “ নিছার এ´প্রেস” নৌকা।
এছাড়া মহিলা গ্রুপে প্রথম হয়েছে নড়াইল সদর উপজেলার হাতিয়াড়া গ্রামের “গানের পাখি ”নৌকা, দ্বিতীয় হয়েছে নড়াইল সদর উপজেলার একই গ্রামের চিত্রাকলি এবং তৃতীয় হয়েছে নড়াইল সদরের গোয়াখুলা গ্রামের “কুসুম কলি” নৌকা ।

এ প্রতিযোগীতায় টালাই ও কালাই গ্রুপের ১ম স্থান অধিকারী নৌকাকে ৬০ হাজার টাকা, ২য় স্থান অধিকারী নৌকাকে ৪০ হাজার টাকা ও ৩য় স্থান অধিকারিকে নৌকাকে ২০ হাজার টাকা এবং মহিলা গ্রুপের ১ম স্থান অধিকারী নৌকাকে ১০ হাজার টাকা পুরষ্কার প্রদান করা হয়। এ ছাড়াও অংশগ্রহনকারী প্রত্যেক নৌকাকে ৫ হাজার টাকা করে পুরস্কার প্রদান করা হয়।