নড়াইল জেলা কালচারাল অফিসারকে অবাঞ্চিত ঘোষনার দাবিতে সমাবেশ

0
116
নড়াইল জেলা কালচারাল অফিসারকে অবাঞ্চিত ঘোষনার দাবিতে সমাবেশ

নড়াইল প্রতিনিধি: নড়াইল জেলা শিল্পকলা একাডেমির স্বেচ্ছাচারী ও দুর্নীতিবাজ কালচারাল অফিসার মোঃ হামিদুর রহমান কে অবাঞ্চিত ঘোষনা করে দ্রুত অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে নড়াইলে প্রতিবাদ সমাবেশ ও ঘেরাও কর্মসুচি পালিত হয়েছে। শুক্রবার নড়াইল জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসারের স্বেচ্ছাচারীতা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ সংগ্রাম কমিটি, নড়াইল এর আয়োজনে এ প্রতিবাদ সমাবেশ ও ঘেরাও কর্মসচি পালিত হয়।
সংগ্রাম কমিটির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা সাইফুর রহমান হিলুর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, নড়াইল প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এনামুল কবীর টুকু, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রওশান আরা কবীর লিলি, মানবাধিকার কর্মী কাজী হাফিজুর রহমান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট নড়াইলের সভাপতি মলয় কুমার কুন্ডু, সাধারণ সম্পাদক শরফুল আলম লিটু,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান লিটু।
নড়াইল প্রেসক্লঅবের সাবেক সাধারন সম্পাদক সাংস্কৃতিক কর্মি শামীমূল ইসলাম টুলু, শাহ আলম, নড়াইল জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সংগীত বিভাগের শিক্ষক নিরঞ্জন বিশ^াস, আশিষ কুমার স্বপন সহ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট নড়াইলের নেতৃবৃন্দ,জেলা শিল্পকলা একাডেমি শিক্ষক- শিক্ষার্থী, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ- ছাত্র-ছাত্রী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বক্তরা বলেন, শিল্প ও সংস্কৃতির জেলা নড়াইলে এ ধরণের ঘৃণ্য ন্যাক্কারজনক ঘটনা কখনও ঘটেনি। গত এক বছরে এই দূর্নীতিবাজ অফিসার বিভিন্ন অনুষ্ঠান, প্রশিক্ষণ,কর্মশালা, অডিটোরিয়াম সংস্কারের নামে প্রায় ৫০ লাখ টাকার দূর্নীতি করেছে। শিল্পকলা একাডেমীর শিক্ষক-কর্মচারিদের অপমান ও শিল্পকলা থেকে বের করে দিয়েছে। গত ১০ দিন শিল্পকলা একাডেমীতে কোনো ক্লাস হয়না। শিক্ষকরা তার এভাবে সে নড়াইলের সংস্কতিকে ধ্বংস করছে। এর আগে সে ময়মনসিংহ,চুয়াডাঙ্গা জেলায় দূর্নীতির কারণে তাকে তাড়ানো হয়েছে। এই আন্দোলন একটি প্রগতিশীল সমাজকে বাঁচানোর আন্দোলন। এইসেচ্ছাচারি এ দূর্নীতিবাজ এই ব্যক্তিকে একদিনও দেখতে চাই না। আগামি এক সপ্তাহের মধ্যে সে নড়াইল ছেড়ে চলে না গেলে শিল্পকলা একাডেমী তালা মেওে দেওয়ার ঘোষণা দেন।
অভিযোগ রয়েছে, জেলা কালচারাল অফিসার হামিদুর রহমান ২০২৩ সালের জানুয়ারী মাসে যোগদানের পর থেকে এভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে শিল্পী, বিচারক ও কলাকুশলীদের জন্য সরকারি নির্ধারিত সম্মানি দেন না। অনুষ্ঠনের জন্য যে বরাদ্দ থাকে তার চার ভাগের একভাগও খরচ করেন না। এছাড়া শিল্পকলা একাডেমিতে সংগীতের বিভিন্ন শাখার ক্লাস চলাকালীন সময়ে কালচারাল অফিসার সংগীত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে তিনি অসদাচরণ করে থাকেন। গত বছরের মাঝামাঝি জেলা শিল্পকলা অডিটোরিয়ামের লাইটিং, সাউন্ড, ইলেকট্রিক ও ভবন সংস্কারে ১০ লাখ টাকার কাজ হলেও অভিযোগ রয়েছে, এ কাজে খাতা-কলমে টেন্ডার দেখিয়ে মূলত নিজেই কাজ করেছেন। এ পর্যন্ত এই দূর্নীতিবাজ অপিসার নড়াইল থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা আতœসাৎ করেছে।
এসব অনিয়ম-দূর্নীতির বিরুদ্ধে গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, নড়াইলের নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরীর কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। এর প্রেক্ষিতে ২৪ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা কালচারাল অফিসারের বিরুদ্ধে অনিয়ম,দূর্নীতি ও দুর্বব্যবহারের বিরুদ্ধে স্বাক্ষ্য দেয় নড়াইলের ৩২জন সাংস্কৃতিক কর্মী, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও ব্যবসায়ী। কালচারাল অফিসারের বিভিন্ন অনিয়ম-দূর্নীতি তদন্ত করে এর সত্যতা পাওয়ায় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংস্কৃতি বিষয়ক সচিবের কাছে গত ৬ ফেব্রুয়ারী একটি প্রতিবেদন পাঠালে অপসারণ বা শাস্তি দূরের কথা একই ধরণের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।