নড়াইলে নারী ও পুরুষের অংশগ্রহনে ‘এস এম সুলতান নৌকাবাইচ” অনুষ্ঠিত

0
248

সুজয় বকসী,নড়াইল প্রতিনিধি: “চিত্রা আমার নদী, বইছে নিরবধি ” শ্লোগানকে সামনে নিয়ে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ও শিল্প সংস্কৃতিকে সর্বজনীন করার উদ্দেশ্যে বিশ্ব বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে নড়াইলের চিত্রা নদীতে আজ শনিবার ‘এস, এম, সুলতান নৌকা বাইচ’ প্রতিযোগীতা-২০২২ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতান ৯৮ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ নৌকা বাইচের আয়োজন করা হয়। এ নৌকাবাইচকে কেন্দ্র করে নড়াইলের চিত্রা নদীর দু’পাড়ে সৃষ্টি হয় আনন্দ-উৎসব।
এ নৌকাবাইচে নারীদের চারটি নৌকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ১৮ টি অংশ গ্রহন করে । এর মধ্যে টালাই গ্রুপে ৩টি নৌকা,কালাই গ্রুপে-১০ টি, মহিলা গ্রুপে-৩ টি এবং নতুন সংযোজন মাদারীপুরের ২টি গয়না নৌকা । নড়াইল শহরের চিত্রা নদীর শেখ রাসেল ব্রীজ এর নিচে পুরাতন ফেরিঘাট এলাকা থেকে এসএম সুলতান সেতু পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার অংশ জুড়ে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা হয়।
শনিবার (২২ অক্টোবর ২০২২) দুপুরে নড়াইলের চিত্রা নদীতে নৌকাবাইচ শুরু হলেও সকাল থেকেই বিভিন্ন পেশার মানুষ নদীর দু’পাড়ে ভিড় করেন। দুপুরে নৌকাবাইচ শুরুর আগেই চিত্রা নদীর দুই পাড়, বাসাবাড়ি ও রূপগঞ্জ বাজারের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ছাদসহ গাছে গাছে লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। নদীতে নৌকা, ট্রলার, স্পিডবোটে করে বিভিন্ন বয়সের হাজারো মানুষ উপভোগ করেন নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা।

নৌকাবাইচ উপলক্ষে চিত্রা নদীর পাড়ে, বাঁধাঘাটে এবং বিভিন্ন স্থানে মিষ্টিসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা বসেছিল। সুষ্ঠু-সুন্দর ভাবে প্রতিযোগিতা শেষ করতে পেরে খুশি আয়োজকরা। খুশি অংশগ্রহণকারীরা।
জেলা প্রশাসন ও এসএম সুলতান ফাউন্ডেশন আয়োজনে দুপুর ২ টায় প্রতিযোগীতার উদ্বোধন ও বাইচ শেষে শহরের বাঁধাঘাট চত্বরে বিজয়দের মাঝে পুরস্কার বিতরন করবেন প্রধান অতিথি খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরী ।

এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন, নব-নির্বাচিত জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডঃ সুবাস চন্দ্র বোস, সিভিল সার্জন ডাঃ নাছিমা খাতুন, পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা, সংসদ সদস্য মাশরাফির পিতা গোলঅম মোতুর্জা স্বপনসহ সরকারি কর্মকর্তা,এস, এম, সুলতান ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা, সাংবাদিকগন উপস্থিত ছিলেন।

এ প্রতিযোগীতায় পুরুষদের টালাই গ্রুপে প্রথম হয়েছে খুলনার দিঘলিয়ার ঘোষগাতির আলমাচ শেখের “সোনার বাংলা ” নৌকা , দ্বিতীয় হয়েছে গোপাল গঞ্জের জোরারিয়ার মিলন চৌধুরীর “ জয় মা দূর্গা ”নৌকা ও তৃতীয় হয়েছে গোপালগঞ্জ জেলা টুঙ্গিপাড়ার বন্যাখালীর অপূর্ব রায়ের “ জয় মা কালী ” নৌকা। পুরুষদের কালাই গ্রুপে প্রথম হয়েছে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ার জোরারিয়ার নিকুঞ্জ কুমার মন্ডলের “ মা শীতলা ” নৌকা, দ্বিতীয় হয়েছে মাগুরার মোহাম্মদপুরের কৃষ্ণপুরের আতর আলীর “ মায়ের দোয়া” নৌকা এবং তৃতীয় হয়েছে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানীর আড়পাড়ার ওসমান মিনার “ সোনারতরী” নৌকা।

এছাড়া মহিলা গ্রুপে প্রথম হয়েছে নড়াইল সদর উপজেলার হাতিয়াড়া গ্রামের পুতুল মজুমদারের চিত্রাকলি , দ্বিতীয় হয়েছে নড়াইল সদরের গোয়াখুলা গ্রামের মনিহার পালের “কুসুম কলি” নৌকা এবং তৃতীয় হয়েছে নড়াইল সদর উপজেলার হাতিয়াড়া গ্রামের কবিতা সরকারের “গানের পাখি ”নৌকা।