বিবিয়ানায় “সামিট” উন্নয়নে কোন কাজ করেনি:বেহাল দশা

    0
    273

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৪নভেম্বর,সানিউর রহমান তালুকদারঃ নবীগঞ্জ প্রতিনিধি:নবীগঞ্জের পারকুলস্থ এশিয়ার সর্ব বৃহত্তম বিদ্যুৎ পান্ট এর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সামিট বিবিয়ানা ২ পাওয়ার কোম্পানী লিমিটেড অধীক গ্রহনকৃত এলাকার আর্থ সামাজিক উন্নয়ন সহ এলাকার সর্বাঙ্গীণ উন্নয়নের অঙ্গীকারাবন্ধ থাকলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এ বিষয়ে এলাকাবাসী লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে তদন্তে রাস্তা-ঘাটের বেহাল দশা সহ সর্বক্ষেত্রে অনতিবিলম্বে সামিটের অঙ্গিকারবন্ধ সহ সকল বিষয়ে তড়িৎ উন্নয়ন কাজ শুরু করার জোর দাবী জানায় এলাকাবাসী।

    এলাকাবাসী সাথে আলাপকালে জানা যায়, বাংলাদেশে বিদ্যমান বিদ্যুৎ সংকট নিরসনে আংশিকভাবে বাংলাদেশ সরকারকে সাহায্যে করাই পাওয়ার পান্টের উদ্দেশ্যে। প্রকল্পটি হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ৫নং আউশকান্দি ইউনিয়নের পারকুল গ্রামস্থ প্রায় ২৫ একর জায়গা জুড়ে ব্যপৃত (নির্মান কাজের জন্য যেটাতে আছে প্রায় ১৪ একর) এতে ঝইওওচঈখ পাওয়ার পান্টের আনুমানিক খরচ প্রায় ২৯০ মিলিয়ন ডলার যা ঝইওওচঈখ দ্বারা পূরন করার জন্য। যাদের বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পসমূহে নির্মান মালিকান ও চালনার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে। ঝইওওচঈখ পাওয়ার পান্টের প্রদান করা হয় সামিট বিবিয়ানা ২ পাওয়ার কোম্পানী লিমিটেডকে।

    রাস্তার বেহাল দশা
    রাস্তার বেহাল দশা

    ৩৪১ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন প্রাকৃতিক গ্যাস দহনকারী কম্বাইড সাইকেল টারবাইন বিদ্যুৎ প্রকল্পটি অবস্থিত। আর্থ সামাজিক প্রভাব মূল্যায়ন, পূনর্বাসন কর্ম পরিকল্পনা এবং জীবিকা পুননির্মাণ কাঠামো (ঝওঅ, জঅচ ও খঅজ) সেই সকল প্রকল্প- ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর (চঅঐং) জন্য প্রযোজ্য যাদের জীবিকা প্রস্তবিত সামিট বিবিয়ানা ২ পাওয়ার কোম্পানী লিমিটেড প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিপ্রেক্ষিতে বাধ্যতামূলক ভূমি অধিগ্রহণ এবং হুকুম দখল দ্বারা প্রভাবিত হবে। ঊঝওঅ প্রক্রিয়ার সময় একটি ভূমি জরিপ করা হয়েছিল, প্রকল্প এলাকায় ভূমি ব্যবহারের
    বর্তমান অবস্থান জানার জন্য, প্রথমে করা হয়েছিল ২০০৮ সালে এবং তার পর তা হালনাগাদ ও যাচাইকরণ করা হয় ২০১১ সালে।

    ভূমি ব্যবহারের তর্থ্য সংগ্রহ করার জন্য মোট ১০টি গ্রাম নির্বাচিত করা হয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের (ডিওই) নির্দেশিকার সঙ্গে সঙ্গতিপূণ রেখে সংগৃহীত তথ্যে স্থপনা, শিল্প- কারখানা, দোকান- পাট, বাজার, গ্রোথ সেন্টার, কৃষি জমি, জলাশয়, সেতু, শিক্ষা প্রতিষ্টান, ধর্মীয় প্রতিষ্টান ও অন্যান্য সুবিধাদি অন্তর্ভূক্ত করা হয়। জরিপের ফলাফল অনুযায়ী প্রধান ভূমি ব্যবহারের বিভাগ গুলো হলো, ৭৩% কৃষি জমি, ১২% আবাসিক জনবসতি, ৯% কুশিয়ারা নদীর, ৩% প্রস্তবিত প্রকল্পের এক্সেস রাস্তা সহ প্রকল্পের স্থান ২% খাল, পুকুর ও বিল এবং ১% স্থায়ীয় রাস্তা। প্রকল্পের স্থান থেকে ১০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে কোন গুরুত্বপূর্ণ শহর বা শহরতলী নেই।

    যদি এখানে ইউনিয়ন অফিস বাজার শিক্ষা প্রতিষ্টান ধর্মীয় কেন্দ্র (মসজিদ,মন্দির ও গির্জা) রয়েছে। অ্যাসেসমেন্ট এবং পরিবেশগত ও সামাজিক ঝুঁকি ও প্রভাব ব্যবস্থপনা, শ্রম ও কর্মপরিবেশ, সম্পদ দক্ষতা এবং দূষণ প্রতিরোধ, কমিউনিটি স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা এবং নিরাপত্তা, ভূমি অধিগ্রহন এবং অনৈচ্ছিক পুর্ণবাসন, জীববৈচিত্র সংরক্ষন ও জীবিত প্রাকৃতিক সম্পদের টেক সই ব্যবস্থাপনা। আদিবাসী ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে আরো জানা যায়, আউশকান্দি ইউনিয়নের অন্তর্গত পারকুল, বনগাঁও, পাহাড়পুর ও গির ব্রাক্ষণগ্রামে কোন উন্নয়ন হয় নি।

    এশিয়ার সর্ববৃহৎ বিবিয়ানা বিদ্যুৎ পান্ট পারকুল গ্রামে অবস্থিত হওয়ায় ওই এলাকার লোকজন বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। বিশ্ব ব্যাংক প্রতিনিধিরা বার বার স্থানীয়দের সাথে মিটিং করিয়া আশ্বাস করেছে আমাদের এলাকার উন্নয়নে ওই কোম্পানী গুলো কাজ করবে। কিন্তু সামিট বিবিয়ানা পাওয়ার পান্ট- ২ কাজ শুরুর মুর্হুতে আমাদেরকে আশ্বস্ত করেন আমাদের রাস্তা পাকা করণ, পানি নিস্কাষনের ড্রেইন, হাসপাতাল, হাইস্কুল, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা, স্থাণীয় যুবক শ্রমিকদের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজের সুযোগ করে দেওয়া। বর্তমানে এল.এন.টি বিবিয়ানা পাওয়ার পান্ট-৩, ওংড়ষবী চড়ৎংড়হ বিবিয়ানা পান্ট-১ ইতি মধ্যে কাজ শুরু করতেছে। কিন্তু এলাকার উন্নয়নের জন্য কোন কাজ শুরু করে নাই। স্থানীয়রা বার বার উক্ত কোম্পানীগুলোকে এলাকার উন্নয়নের দাবী তুলে ধরলেও কোন কাজের কাজ হচ্ছে না। কাজেই এলাকাবাসী নিরুপায় হয়ে হবিগঞ্জ ডিসি সহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তর বরাবরে গত ২ নভেম্বর ২০১৬ইং তারিখে পূণরায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাদের দাবী সমূহঃ-

    ১. পারকুল পাকা রাস্তা হইতে বনগাঁও পশ্চিম সীমানা পর্যন্ত রাস্তা পাকা করণ।

    ২. পাহাড়পুর থেকে পিটুয়া (বিশ্বরোড) পর্যন্ত পাকা করণ।

    ৩. সামিট পাওয়ার পান্ট থেকে বনগাঁও পর্যন্ত (ভায়া ভূমিহীন) রাস্তা পাকা করণ।

    ৪. দিগর ব্রাক্ষণগ্রাম থেকে হাছনখালী পর্যন্ত (ভায়া পারকুল, বনগাঁও) পানি নিষ্কাষে নর জন্য ড্রেইন নির্মান।

    ৫. সামিট পাওয়ার পান্ট থেকে বনগাঁও পর্যন্ত অসর্ম্পর্ণ পানি নিস্কাষনের ড্রেইন নির্মাণ।

    ৬. মান সম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মান।

    ৭. আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষার অগ্রযাত্রার উচ্চ
    বিদ্যালয় ও কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্টান প্রতিষ্টাকল্পে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।

    ৮. বিবিয়াানা পাওয়ার পান্ট থেকে এলাকাবাসীর জন্য নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করণ।

    ৯. পারকুল, বনগাঁও, পাহাড়পুর ও দিগর ব্রাক্ষনগ্রাম এলাকার সাধারন মানুষের ঘরে ঘরে গ্যাস লাইন সংযোগের ব্যবস্থা করণ।

    ১০. স্থাণীয় যুবকদের যোগ্যতা অনুসারে চাকুরীর ব্যবস্থা। অফিসার ইর্চাজ নবীগঞ্জ, প্রজেক্ট ম্যানাজার সামিট বিবিয়াানা পাওয়ারা পান্ট-২, প্রজেক্ট ম্যানাজার এল.এন.টি বিবিয়ানা পাওয়ারা পান্ট-৩, প্রজেক্ট ম্যানাজার ওংড়ষবী চড়ৎংড়হ বিবিয়ানা পাওয়ারা পান্ট-১ পারকুল নবীগঞ্জ হবিগঞ্জ, প্রজেক্ট ম্যানাজার ঘ.উ.ঊ বিবিয়ানা পাওয়ারা পান্ট-১ পারকুল নবীগঞ্জ।

    হবিগঞ্জ ডিসি অফিসে এলাকাবাসীর লিখিত অফিযোগের প্রেক্ষিতে গত শনিবার দুপুরে নবীগঞ্জ থানার এ এস আই পলাশ চন্দ্র দাশ একদল পুলিশ নিয়ে ওই এলাকায় পরিদর্শন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ৫নং আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়রাম্যান হাজী মুহিবুর রহমান হারুন, প্যানেল চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান, যুবলীগ নেতা বেলাল আহমদ, শিপন আহমদ’সহ এলাকার গণমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তদন্ত কারী কর্মকর্তা এ এস আই পলাশ চন্দ্র দাশ পাওয়ার পান্টের রাস্তা-ঘাট ও পরিবেশ দূর্ষন সহ এলাকার বেহাল দশা দেখে অসুষ্ট প্রকাশ করেন।