রাজনগরে ৭ কোটির ও অধিক টাকা ব্যায়ে নির্মিত ভবন যেন গণ শৌচাগার!

0
154

আলী হোসেন রাজন,মৌলভীবাজার: নির্মাণ কাজ সমাপ্তের এক বছর পেরিয়ে গেলেও উদ্বোধন হচ্ছেনা রাজনগর উপজেলা পরিষদের সম্প্রসারিত প্রশাসনিক ভবন ও মাল্টিপারপাস হলরুম। দুইদফা উদ্বোধনের উদ্যোগ নিলেও বাস্তবে ভেস্তে যায় উদ্যোগ।

ফলে ৭ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা ব্যায়ে নির্মিত এই ভবনে গরু ছাগল ও মানুষে প্রস্্রাব পায়খানার আস্তানা। আর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রতি সপ্তাহে নিজ অর্থ ব্যয় করে এসব পরিষ্কার করাছেন ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৭ জুলাই ভবনটি উদ্বোধনের জন্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়। উপজেলা চেয়ারম্যানের নাম উদ্বোধন ফলকে না থাকায় এসময় উদ্বোধনে জটিলতা সৃষ্টি হয়। পরে করোনা পরিস্থিতির কথা বলে বন্ধ করা হয় অনুষ্ঠান। উপজেলা পরিষদের সভায় উদ্বোধনী নামফলকে উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান খান এর নাম রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে ওই বছরের ১৩ জানুয়ারি মৌলভীবাজার রাজনগর ৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমদ এর কাছ থেকে অনুষ্ঠানের সময় চাইতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে পত্র দেন উপজেলা চেয়ারম্যান। ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ না করায় চেয়ারম্যান আবারো স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর পত্র পাঠান।
ওই পত্রে উল্লেখ করেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের অর্ন্তদ্বন্ধের কারণে সংসদ সদস্য ভবনটি উদ্বোধনে আগ্রহ প্রকাশ করছেন না। পরে চলতি মাসের ২ তারিখে উপজেলা চেয়ারম্যান বহিঃবাংলাদেশ ছুটিতে থাকাবস্থায় ভবনটি উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ স্থগিত রাখতে ইউএনওকে পত্র লিখেন এবং ৫ ফেব্রুয়ারি তিনি লন্ডনে চলে যান।
১৬ ফেব্রুয়ারি সংসদ সদস্য নেছার আহমদ ইউএনওকে পত্র দিয়ে ২৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১ টায় ভবন উদ্বোধনের জন্য অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। ইউএনও বিষয়টি পরিষদকে না জানিয়েই উদ্বোধনের জন্য বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রকৌশলীকে পত্র পাঠান। কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যান বহিঃবাংলাদেশ ছুটি শেষে দেশে ফিরলে ভবনের উদ্বোধন করতে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপজেলা-২ শাখার উপসচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম মজুমদার এক পত্রে জানান। এরই মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার মিতা প্রশিক্ষণে চলে যান। ফলে আবারো উদ্বোধন আটকে যায়।
বর্তমানে রাজনগর উপজেলা পরিষদের সম্প্রসারিত প্রশাসনিক ভবনে প্রতি তলায় মানুষ সারি বদ্ধ ভাবে পায়খানা করে জড়িয়ে রেখেছে, রাতের আদারে নেশাখুরদের নেশার আড্ডা বসে। প্রতিটি দরজায় উলিপুকায় বাসা করেছে দামি দামি লাইট মাকড়সার জালে ভরে গেছে । এ দিকে মাল্টিপারপাস হল রুমের বারান্দায় গরু ও ছাগলের প্রস্্রাব পায়খানা করছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে রাজনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান খান বলেন বর্তমান সরকার, উন্নয়নের সরকার,আমাদেরকে ৭ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা ব্যায়ে রাজনগর উপজেলা পরিষদের সম্প্রসারিত প্রশাসনিক ভবন ও মাল্টিপারপাস হলরুম করে দিয়েছেন। কিন্তু এই ভবনটি এখনো উদ্বোধন হচ্ছেনা। তিনি বলেন আমর মনে হচ্ছে সংসদ সদস্য উদ্বোধনের নাম ফলকে আমার নাম রাখতে চাইছেন না,সে কারনে হয়তো উদ্বোধন হচ্ছেনা। তবে উপজেলা পরিষদের সভায় উদ্বোধনী নামফলকে আমার নাম রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমি উদ্বোধনের জন্য জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়েছি।
ভবনটি অপরিস্কার জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি প্রতি সাপ্তাহ আমার অর্থ ব্যায় করে মানুষ দিয়ে পরিস্কার করাই তার পরেও রাতের আধারে কে বা কারা ডুকে অপরিস্কার করে বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার মিতা বলেন সংসদ সদস্য নেছার আহমদ একটি ডিও লেটার দিয়ে ছিলেন ভবনটি উদ্বোধন করার জন্য। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ভবনটি উদ্বোধনের একটি তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল । কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা আসছে সংসদ সদস্যের তারিখ স্থগিত রাখার জন্য। নির্দেশনায় বলা আছে সংসদ সদস্য, উপজেলা পরিষদের চেয়াম্যান শাহজাহান খান ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে উদ্বোধন করার জন্য । সে আলোকে আমরা বসে উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত নিবো । ভবনটি অপরিস্কারের বিষয়ে বলেন আমাদের জনবল সংকট সে কারনে নতুন ভবনটি ময়লায় ভরে গেছে। তবে আমি এটি পরিষ্কার করার ব্যবস্থা নিবো।