রাত পোহালেই আওয়ামীলীগের সম্মেলনঃনিরাপত্তার চাদরে ঢাকা

    0
    187

    বঙ্গবন্ধু পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের অংশগ্রহণ এবারের সম্মেলনের অন্যতম আকর্ষণ

     

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,২১অক্টোবর,শিমুল তরফদার, ঢাকা থেকেঃআর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। দীর্ঘ দিনের অপেক্ষার পালা শেষ হতে চলেছে। দিবস নয়, এখন ঘণ্টা ধরে প্রহর গুনছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা । রাত পোহালেই সকাল ১০টায় আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দীর্ঘ এক মাস দিন-রাত ব্যস্ত সময় পার করছিলেন শুধুমাত্র সম্মেলনকে সফল এবং স্বার্থক করার জন্য।

    বঙ্গবন্ধু পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের অংশগ্রহণও এবারের সম্মেলনের অন্যতম আকর্ষণ। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের এবারের সম্মেলনে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু পরিবারের উত্তারাধিকারের বিষয়টিও অনেকটা নির্ধারিত হবে বলে মনে করছেন অনেকে । এছাড়া সামনের জাতীয় নির্বাচন এবং ভিশন ২০৪১- নিয়ে সম্মেলনের ঘোষণাপত্রে বিশেষ বার্তা থাকবে বলেও অনেকে মনে করছেন ।

    দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের সম্মেলনে নানা চমক থাকলেও গঠনতন্ত্রের পরিবর্তন একটি গুরুত্বপূর্ণ চমক আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গঠনতন্ত্রের পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে দলের সাংগঠনিক পদ বৃদ্ধি এবং স্থানীয় সরকারের বিষয়টি নির্ধারিত হবে।

    ইতোমধ্যে সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি শেষ। শনিবার সকালেই পর্দা উঠবে সম্মেলনের। দু’দিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এ সম্মেলনকে ঘিরে আনন্দ বইছে আওয়ামী নেতাকর্মীদের মাঝে।

    সম্মেলনে আগত অতিথির জন্য ৪০ হাজার আসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে প্যান্ডেলের ভেতরে ও বাইরে। অতিথিদের জন্য ১০০ ভ্রাম্যমাণ টয়লেট, ২০টি টি-স্টলের ব্যবস্থা থাকছে। প্যান্ডেল ও এর আশপাশে সুশৃঙ্খলভাবে সম্মেলন উপভোগের জন্য ১৬টি বড় পর্দার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও মঞ্চে থাকছে বিরাট থ্রি-জি পর্দা।

    সম্মেলনকে ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা শহর। এসএসএফ-এর নির্দেশনায় প্রায় দশ হাজার সোয়াদ ও পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে। সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে শাহবাগ, টিএসসি, দোয়েল চত্বর এলাকা। তিনটি কন্ট্রোল রুম থেকে সম্মেলনের পুরো এলাকা তদারকি করা হবে। কারও গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবে। সম্মেলন স্থলে সাতটি গেটে আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে সার্চ করে প্রবেশ করানো হবে। ভেহিকল মিরর সার্চ করে গাড়ি সম্মেলন স্থলে প্রবেশ করা হবে বলে জানা গেছে। এদিকে শুধু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নয়, তাদের পাশাপাশি যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সমন্বিতভাবে পুরো ঢাকা মহানগরীর নিরাপত্তায় কাজ করবে বলে জানা গেছে।

    এছাড়া নিরাপত্তার স্বার্থে রাজধানীতে যান চলাচলের ক্ষেত্রেও কিছু নিদের্শনা দেয়া হয়েছে। সম্মেলন চলাকালে কদম ফোয়ারা, মৎস্য ভবন, দোয়েল চত্বর, শাহবাগ, টিএসসি পর্যন্ত এলাকার সড়কগুলোতে যান চলাচল করতে পারবে না। সম্মেলন স্থলে ভিআইপি ছাড়া কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। এছাড়াও সম্মেলন ঘিরে উদ্যানের চারপাশে বসানো হয়েছে একাধিক চেকপোস্ট। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পোশাকে- সাদা পোশাকে শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পল্টন, হাইকোর্ট এবং রমনা এলাকায় দায়িত্ব পালন করছেন । এছাড়াও শুক্রবার থেকে রোববার পর্যন্ত টানা তিন দিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাধারণ দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে ।

    সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিশুপার্ক সংলগ্ন প্রবেশপথ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য ও দলের কেন্দ্রীয় নেতারা এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট সংলগ্ন প্রবেশপথ দিয়ে কূটনীতিক ও বিদেশি মেহমানরা প্রবেশ করবেন।

    এছাড়া রমনা কালীমন্দির, রাজু ভাস্কর্য ও চারুকলা ইনস্টিটিউট সংলগ্ন প্রবেশপথ দিয়ে সাধারণ ডেলিগেট, আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথি ও সাংবাদিকরা ঢুকবেন। এ সময় সঙ্গে মোবাইল ফোনসহ কোনো ধরনের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস বহন করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

    আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক এ সম্মেলনে ১১টি দেশের প্রায় অর্ধশত বিদেশি অতিথি অংশ নেবেন। সম্মেলন অংশ নিতে সারাদেশ থেকে কাউন্সিলর ও ডেলিগেটরাও ঢাকায় আসছেন।