শার্শায় ওসি মনিরুজ্জামান যোগদানে আইনশৃংখলার উন্নতি

    0
    255

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,০২জুন,এম ওসমান,বেনাপোল: যশোরের শার্শা থানায় ওসি হিসাবে মনিরুজ্জামান যোগদানের পর থেকে সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত করতে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়াও তিনি জঙ্গিবাদ, নাশকতা প্রতিরোধ, সন্ত্রাস দমন, অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃংখলার উন্নতি, চোরাচালান পণ্য উদ্ধার, মাদক ব্যবসা নির্মূলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখেন। সম্প্রতি তিনি শার্শা উপজেলার ২টি ইউনিয়নকে একেবারেই মাদকমুক্ত করার জন্য পাইলট প্রজেক্ট হাতে নিয়েছেন।

    এসব মিলিয়ে কর্ম দক্ষতার গুণে তিনি গত ২৫মার্চ জাতীয় পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষ্যে বিশেষ সম্মামনা পুরস্কার হিসাবে আইজি পদক অর্জন করেন। শার্শা থানায় কর্মরত অবস্থায় কোন পুলিশ কর্মকর্তার সাহসিকতার পুরস্কার স্বরূপ এই পদক পাওয়ার এটিই প্রথম ইতিহাস। শুধু তাই নয়, তিনি সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য বিভিন্ন সময়ে অনেক পুরস্কার পেয়েছেন।

    শার্শা থানায় অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুজ্জামান গত ২০১৫ সনের ৯ নভেম্বর যোগদান করেন। তিনি যোগদানের পর থেকে সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত থানা ঘোষণা করেন। যেমন ঘোষণা তেমন কাজ, তাই তিনি থেমে থাকেননি । সন্ত্রাস মুক্ত করতে গিয়ে পুলিশকে সর্বদা রেখেছেন প্রস্তুত। শার্শার সমাজ থেকে সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন। শার্শার মানুষকে রাতে নির্বিঘেœ ঘুমানোর এবং রাস্তায় মানুষদের চলাচল সহজ করার জন্য তিনি জীবনবাজি রেখেছেন। তিনি এতে করেও দমে যাননি, থামাতে পারেনি কোন ভয়ভীতি। যুব সমাজকে রক্ষার জন্য তিনি থানা এলাকাকে মাদক মুক্ত ঘোষণা করেন। এজন্য শার্শার কুখ্যাত কুখ্যাত মাদক সম্রাটদের আটক করে মাদক আইনে মামলা দিয়ে পাঠিয়েছেন আদালতে।

    ওসি মনিরুজ্জামান যোগদানের পর শার্শা থানায় শিশু আইন ২০১৩ কার্যকরী করার জন্য শিশু ডেক্স চালু করেন। যাহাতে নারী ও শিশুদের বিশেষ সেবা প্রদান করা যায়। আর এর জন্য তিনি একটি ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার চালু করার উদ্দ্যোগ গ্রহণ করার ঘোষণা করতে যাচ্ছেন। এছাড়াও থানায় আসা সাধারণ মানুষ যাহাতে সহজে সার্বক্ষণিক সেবা পায় তার জন্য একজন অফিসার নিয়োগ করেছেন। এতে করে খুব সহজেই সেবা পাচ্ছে এবং  আইন শৃংখলা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলে দাবি করছে সাধারণ মানুষ। এরই ধারাবাহিকতায় সামাজিক ও মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে অনেক পরিবারকে করেছে এক আবার অনেক শিশুকে দিয়েছে সুন্দর আলোর পথ।

    গত ২৮ফেব্রুয়ারী ওসি মনিরুজ্জামান শার্শার মানুষকে জঙ্গিদের হাত থেকে রক্ষার জন্য বুরুজবাগান মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি এসএম মনির-উজ-জামান বিপিএম, পিপিএম প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে সংসদ সদস্য, যশোর জেলা পুলিশ সুপার, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বর, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতা, শান্তি-শৃংখলা কমিটি, পূজা কমিটি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ সকল স্তরের জনগণের অংশগ্রহণে মাদক ও জঙ্গী বিরোধী মহাসমাবেশ করেন। এরপর তিনি বিভিন্ন এলাকায় শান্তি শৃংখলা কমিটি গঠন, পূজা মন্দিরে কমিটি গঠন, প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের ৯টি ওয়ার্ডে জঙ্গী, সন্ত্রাস বিরোধী কমিটি গঠন করেন। আর এতে করে এখনও পর্যন্ত শার্শা থানা এলাকায় কোন জঙ্গী ঘটনা কিম্বা কোন হামলা হয়নি।

    আইনশৃংখলা রক্ষা ও সমাজ হতে মাদককে না বলা যুব সমাজকে রক্ষার জন্য প্রত্যেক এলাকায় একাধিক বৈঠকসহ মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে মাদকমুক্ত করার জন্য জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। উদ্ধার করেছেন প্রায় ১৩ হাজার বোতল ফেন্সিডিল, ১’শ ১৫ কেজি গাঁজা, ২০ হাজার পিচ ইয়াবা, ২০ কেজি হেরোইন, ৭’শ ৬ বোতল মদ ও ৬ কেজি রুপাসহ বিভিন্ন জনকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করেছেন। উদ্ধার করেছেন ৩১টি বিদেশী পিস্তল, দেশী ওয়ান শুটারগান ও পাইপগান, ৩১ রাউন্ড গুলি, ১০টি ম্যাগজিন, ১০০টি বোমা উলেখযোগ্য।

    প্রকাশ থাকে যে, যশোর জেলার শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুজ্জামান ২০০০সালে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানায় এসআই হিসাবে যোগদান করেন। তিনি চাকরি জীবনে মাগুরা, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, চট্টগ্রাম ও সর্বশেষ যশোর জেলার শার্শা থানায় অফিসার ইনচার্জ হিসাবে কর্মরত আছেন। কর্মজীবনে মনিরুজ্জামান ২০০০ সালে পুলিশের এসআই এবং সর্বশেষ ২০১১ সালে পুলিশ পরিদর্শক হিসাবে যশোর কোতয়ালী থানা ও ডিবিতে পদোন্নতি পান। তিনি ২০১৫ সালের ৯ নভেম্বর শার্শা থানায় অফিসার ইনচার্জ হিসাবে যোগদান করেন। শার্শা থানায় যোগদান করার পর থেকেই সন্ত্রাসী ও কুখ্যাত মাদক স¤্রাটদের কাছে এক মূর্তিমান আতংক হিসাবে পরিচিতি পেয়েছেন। প্রমাণ স্বরূপ কামাল চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য মহিজুল, সাংবাদিক জামাল হত্যা মামলার আসামী উকিল ও জিয়ারকে আটক করতে সক্ষম হন। তাছাড়া এ অ লের কুখ্যাত মাদক স¤্রাটদের বেশ কয়েকজনকে নির্মূল করতে সক্ষম হয়। পারিবারিক জীবনে তিনি ২’কন্যা সন্তানের একজন সফল গর্বিত পিতা হিসাবে দায়িত্ব পালন করিতেছেন।

    যশোর শার্শা থানায় যোগদানের পর তার এ সাফল্য প্রসঙ্গে বলেন, যশোরের শার্শায় আইন শৃঙ্খলার উন্নতি হয়েছে এখানকার মানুষদের জন্য। তাদের সহযোগিতার কারণে সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে।

    আইজি পদক অর্জন প্রসঙ্গে বলেন, এ অর্জন আমার একার নয়, এটা যশোরের শার্শা থানার সব পুলিশ ও জনগণের। থানা এলাকার মানুষ আমাকে সবসময় সহযোগিতা করেছে বলে এখানকার আইনশৃঙ্খলার এতটা উন্নতি হয়েছে। তাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে শার্শাকে সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত থানা হিসাবে উপহার দেওয়া সম্ভব হবে।