শ্রীমঙ্গলে মুন হোটেলে হত্যাকান্ডের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই রহস্য উদঘাটন:মূল হোতা গ্রেপ্তার

0
392

ব্যাটারি চালিত একটি অটো রিক্সার লোভে পরে এই নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে মুন আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার করা অজ্ঞাত পরিচয়ধারী নিহতের পরিচয় নিশ্চিত ও মুল হোতা কে সনাক্ত করে রহস্য উন্মোচন করেছে বলে সাংবাদিক কনফারেন্সে জানিয়েছে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ।
ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে খুনের সাথে জড়িত মূল অপরাধীকেও গ্রেপ্তার করেছে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ।

বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে শ্রীমঙ্গল থানায় প্রেস ব্রিফিং করে শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেল অফিসার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, গত ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় শ্রীমঙ্গল নতুনবাজারে অবস্থিত মুন আবাসিক হোটেল থেকে অর্ধগলিত অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা মৃত ব্যক্তির নাম মো. ইন্তাজ মীর। তিনি পেশায় একজন অটোরিকাসা চালক। সে কমলগঞ্জ উপজেলার কালেঙ্গা গ্রামের মৃত ইনু মীরের ছেলে।
পুলিশ জানায়, গত ৩০ নভেম্বর হোটেল মুন এর ২০২ নাম্বার রুমটি মৌলভীবাজারের বর্ষিজোড়ার সোনাপুর এলাকার সুজন নামের এক ব্যক্তি ভাড়া নেয়। খুনের রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে ২০২ নং রুমে অবস্থান করা সুজন নামের ব্যক্তির খোঁজে মাঠে নামে পুলিশের একটি চৌকস টিম। এক পর্যায়ে গতকাল ৫ ডিসেম্বর হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্থাগঞ্জ থেকে সুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার করা সুজন পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সে পেশায় একজন বাবুর্চি। ইন্তাজ মীরের অটোরিকসাটি ছিনিয়ে নিতে হোটেলে ডেকে আনে তাকে। পরে রাতের কোন এক সময় তাকে গলা টিপে হত্য করে লাশ ২০৩ নং রুমের খাটের নীচে লুকিয়ে রেখে পালিয়ে যায়।
পুলিশ সুজনের অবস্থান করা ২০২ নং রুম থেকে নিহত ইন্তাজ মীরের ব্যবহৃত কিছু জামা কাপড় ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে বলে সাংবাদিকদের জানান।
এছাড়াও ইন্তাজের অটোরিকসাটি শ্রীমঙ্গলের আশিদ্রোণ ইউনিয়ন এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।
প্রেস ব্রিফিংকালে শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো, আমিনুল ইসলাম সেলিম,পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) তাপস চন্দ্র রায়সহ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে পুলিশের শ্রীমঙ্গল সার্কেল কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, আপাতত আমাদের কাছে একজনকেই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে,আরও তদন্ত করে এ ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হোটেল মোটেল ইত্যাদি সম্পর্কে আপনাদের কোন অভিযোগ থাকলে আমাদেরকে জানাবেন আমরা পরিচয় গোপন রেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এ সময় শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার জানান, হোটেলের রুম থেকে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত ও মূল আসামিকে ২৪ ঘন্টার ভিতরেই আমরা গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি।এটি আপনাদের সবার সহযোগিতার কারণেই সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরো জানান,এ ব্যাপারে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মৌলভীবাজার জেলা বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য একই হোটেলে কিছুদিন পূর্বেও একজনকে ঝুলন্ত অবস্থায় মৃত উদ্ধার করা হয়, এবং এর পার্শ্ববর্তী একটি হোটেলে প্রায় দুই বছর পূর্বে এক মধ্যবয়স্কা নারীকে দাঁড়ালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

অপরদিকে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দ্রুত এই ন্যাক্কারজনক হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অপরাধে মূল অপরাধী কে গ্রেপ্তার করায় শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের ভুয়সী প্রশংসা করছেন এবং যে সমস্ত আবাসিক হোটেল বা রিসোর্টে অনৈতিক কার্যকলাপ পরিচালিত হয় সেগুলিকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে আইনের আওতায় এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।