সকল ঈ’দের সেরা ঈ’দ-ঈ’দে মিলাদুন্নবী মু’মিনেরই ঈদ

0
111

নূর মোহাম্মদ সাগর শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: আলহামদুলিল্লাহ, সকল প্রশংসা রব্বুল আলামীনের জন্য যিনি এক ও অদ্বিতীয় । যিনি আমাদের মাঝে তাঁর পেয়ারা হাবিব রাহমাতুল্লিল আলামিন প্রিয় নবীজি হজরত মোহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার সুবহে সাদিকের সময় মানবতার মুক্তির দিশারী হিসাবে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন যার শুভাগমনের আনন্দকেই ‘ঈদে মিলাদুন্নাবী’ বলা হয়।

আল্লাহ তাঁর পিয়ারা হাবিবের উপর  নাজিল করেছেন আসমানি মহাগ্রন্থ পবিত্র আল কোরআন আর আমাদেরকে উম্মত হওয়ার তাওফীক দিয়েছেন এবং লাখো-কোটি দরুদ ও সালাম সেই নবীর প্রতি-যাঁর আগমনের কারনে আমরা ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা, শবে বরাত ও শবে ক্বদরসহ সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি লাভ করেছি।

পবিত্র ‘ঈ’দে মিলাদুন্নবী’ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলিম বিশ্বের ঈমানি প্রেরনার জয় ধ্বনী নিয়ে প্রতি বছর আমাদের মাঝে আসে রবিউল আওয়াল মাসে। পবিত্র ‘ঈদে মিলাদুন্নবী’ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পালন করা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অন্যতম উৎসব। যুগে যুগে বাতিলদের শনাক্ত করার কিছু নিদর্শন ছিল। তেমনিভাবে তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সমাজে ও বাতিলদের চিনার নিদর্শন হল পবিত্র ‘ঈদে মিলাদুন্নবী’ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিরোধিতা করা। বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রে শত শত বছর যাবৎ ১২ই রবিউল আউয়াল অতি ভাবগাম্ভীর্যের সাথে পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী (দ:) উদযাপিত হয়ে আসছে। তেমনি ভাবে বাংলাদেশ সরকার বারই রবিউল আউয়াল সরকারি ছুটির গেজেট আকারে প্রকাশ করেছেন। 

আমাদের দেশেও রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকারি ছুটি দিয়ে অতি জাক-জমকের সাথে পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী (দ:)পালিত হচ্ছে।

রবিউল আউয়াল মাস আগমনের সাথে সাথে বিশ্ব জাহানের নবী প্রেমিকদের অন্তরে রাসূল (দ:) এর প্রেম ও ভালবাসা প্রবলভাবে জাগরিত হয়। যেহেতু এ রবিউল আউয়াল মাসের ১২ই তারিখ নবী ও রাসূলকুল সর্দার আল্লাহর প্রিয় হাবীব রাহমাতুল্লিল আলামীন (দ:) এর পবিত্র বেলাদত বা শুভ জন্মের বরকতময় দিন। আল্লাহ নবী (দ) কে সমস্ত সৃষ্টি জাহানের জন্যে রহমত স্বরূপ হিসেবে প্রেরণ করেছেন, (সূরা আম্বিয়া-১০৭) রাসুলুল্লাহ শুভাগমণ করেছেন বলে এ দিন ও মাস অত্যন্ত গুরুত্ববহ।

বিশেষ করে বিশ্ব মুসলিম সমাজ। তারা পবিত্র জশনে জুলুস অর্থাৎ আনন্দ মিছিল। আলোচনা, সেমিনার, তবাররুক বিতরণ, দান-সদকা,মীলাদ শরীফ পাঠ, দোয়া-মোনাজাত ইত্যাদির মাধ্যমে পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী (দ:)উদযাপন করে থাকেন।

আমাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে এ ঈদ কীসের ঈদ? উত্তর এ ঈদ প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শুভাগমন তথা মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঈদ। প্রশ্ন হতে পারে, হাদিসে কি মিলাদুন্নবীর কথা আছে? জ্বী, আমরা দেখতে পাই জামে তিরমিজি দ্বিতীয় খন্ডের ২০৩ পৃষ্ঠায় মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামে একটি অধ্যায়ই রয়েছে। অনুরূপভাবে ইমাম বায়হাকি (রহ.)-এর দালায়েলুন নবুয়ত প্রথম খন্ডের ৪৯ পৃষ্ঠায় ফি মিলাদে রসুল্লল্লাহ (সা.) শীর্ষক একটি অধ্যায়ও রয়েছে।

পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী (দ:) কি ?

আভিধানিক অর্থে ঈ’দে মীলাদুন্নবী (দ:) -এর অর্থ-ঈদ শব্দের অর্থ হলো আনন্দ ও খুশি। মীলাদ শব্দের অর্থ জন্মস্থান, জন্মকাল বা জন্মদিন। নবী বলতে আমাদের নবী করিম (দ:)কে বুঝানো হয়েছে। সুতরাং মীলাদুন্নবী অর্থ হলো আমাদের প্রিয় নবী (দ:) এর জন্মদিন বা জন্ম বৃত্তান্ত । ঈদে মীলাদুন্নবী এর অর্থ হলো হুযুর পূরনূর (দ:)এর পবিত্র জন্মদিনে খুশি উদ্যাপন করা। সুতরাং অশান্তি আর বর্বরতায় ভরপুর সংঘাতময় আরবের বুকে আধারের বুক চিড়ে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শান্তি নিয়ে এসে মানবজাতিকে সত্যের, সভ্যতা ও ন্যায়ের দিক নির্দেশনা দিয়ে গোটা বিশ্বকে শান্তিতে পরিপূর্ণ করে তুলেন। নবীজীর পবিত্র শুভাগমনে খুশী উৎযাপন করাটাই হচ্ছে ‘ঈদে মিলাদুন্নবী’ (দ)।

নবীজির সাহাবিরাও মিলাদুন্নবী উদযাপন করেছেন। হজরত আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত। একদা তিনি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে হজরত আমির আনসারি (রা.)-এর ঘরে উপস্থিত হয়ে দেখতে পেলেন তিনি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিলাদাত উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে সন্তানাদি এবং আত্মীয়স্বজন, জ্ঞাতি-গোষ্ঠী, পাড়া-প্রতিবেশীদের নিয়ে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমনের ঘটনাগুলো শোনাচ্ছেন এবং বলছেন, এই দিবস, এই দিবস অর্থাৎ এই দিবসে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জমিনে তাশরিফ এনেছেন এবং ইত্যাদি ইত্যাদি ঘটেছে। তখন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুনে খুশি হয়ে বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমার জন্য রহমতের দরজা খুলে দিয়েছেন (দুররুল মুনাজ্জাম)।

মানুষ যখন কোনো নেয়ামত ও রহমত প্রাপ্ত হয় তখন তার জন্য আনন্দ উৎসব করা তার স্বভাবগত কাজ আর আল্লাহর নির্দেশও তাই। যেমন-পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেন-

অর্থাৎ- হে মানবকুল তোমাদের নিকট তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং অন্তর সমূহের বিশুদ্ধতা, হেদায়াত এবং রহমত ঈমানদারদের জন্য। হে হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনি বলুন! আল্লাহরই অনুগ্রহ ও তাঁর দয়া প্রাপ্তিতে তারা যেন আনন্দ প্রকাশ করে। এটা তাদের সমস্ত ধন দৌলত সঞ্চয় করা অপেক্ষা শ্রেয়। (সূরা ইউনুছ, আয়াত নং- ৫৭-৫৮)।

এই আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম জালাল উদ্দিন সুয়ূতী (রহঃ) তাঁর বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ আদ দুররুল মুনছুর এ উল্লেখ করেন-

অর্থাৎ-হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) এ আয়াতের তাফসীরে বলেন এখানে আল্লাহর অনুগ্রহ (ফাদ্বলুল্লাহ) দ্বারা ইলমে দ্বীন বুঝানো হয়েছে আর (রহমত) দ্বারা উম্মতের কান্ডারী নূরে মোজাচ্ছম আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বুঝানো হয়েছে। যেমন- আল্লাহ তায়ালা বলেন, (ওয়ামা আরসালনাকা ইল্লা রাহমাতাল্লিল আলামীন) অর্থাৎ হে হাবীব আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্বের জন্য রহমত করেই প্রেরণ করেছি।

সূত্রঃ সূরা আম্বিয়া আয়াত নং- ১০৭, তাফসীরে রুহুল মায়ানী, তাফসীরে কবির ও ইমাম সূয়ূতী (রহঃ) কৃত তাফসীরই আদ দুররুল মুনছুর, ৪র্থ খন্ড- ৩৬ পৃষ্ঠায় ও অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

স্বয়ং আল্লাহ রাব্বল আলামীন রাসূল (দ:)- এর মীলাদ তথা রাসূলের জন্মের বা দুনিয়ায় আগমণের আলােচনা করেছেন। রাসূল (দ:)ও বিভিন্ন হাদীসের মাধ্যমে নিজের মীলাদ বা জন্মের আলােচনা করেছেন এবং প্রত্যেক

সােমবার রােজা পালন করে মীলাদুন্নবী বা নিজের জন্মদিবস পালন করেছেন।

সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) গণও বিভিন্ন হাদীসের মাধ্যমে রাসূল (দ:)- এর মীলাদ বা জন্ম বৃত্তান্ত আলােচনা করেছেন এবং মীলাদুন্নবী (দ:)পালনের ফযীলত বর্ণনা করেছেন। এমনকি তিরমিযী শরীফের ২য় খণ্ডের ২০৩ নং পৃষ্ঠায় মীলাদুন্নবী (সা) নামে একটি অধ্যায় রয়েছে।

ঈদে মিলাদুন্নবী’ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিল কি-না ?

বিশ্ব বিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা ইবনে হাজর মক্কি হায়তমী রহমাতুল্লাহি আলাইহি প্রনীত কিতাব আননি’ মাতুল কুবরা আলাল আলম ফী মাওলিদি উলদি আদম”এর মধ্যে কতিপয় হাদিস শরীফ লিপিবদ্ধ হয়েছে।

খোলাফায়ে রাশেদীনের যুগেও ‘ঈদে মিলাদুন্নবী’ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পালন করার নীতি প্রচলন ছিল।

সর্বশ্রেষ্ট সাহাবী ও ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাদ্বিঃ) বলেন-ঈদে এ মিলাদুন্নবী (দ) উপলেক্ষে যে কমপক্ষে এক দিরহাম খরচ করবে সে বেহেশতে আমার বন্ধু হবে।

দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর ফারুক (রাদ্বিঃ) বলেন -যে মিলাদুন্নবী (দ)কে সম্মান করল সে যেন ইসলামকেই জিন্দা করল।

তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান গণি জুননূরাঈন (রাদ্বিঃ) বলেন -যে মিলাদুন্নবী (দ:) উপলক্ষে কমপক্ষে এক দিরহাম খরচ করবে সে যেন বদর এবং হুনাইনের যুদ্ধে অংশ গ্রহন করল

চতুর্থ খলিফা হযরত আলি (রাদ্বিঃ) বলেন-যে ব্যাক্তি মিলাদুন্নবী (দ:)কে সম্মান করবে তার বদৌলতে সে ঈমান ব্যতিরেকে দুনিয়া হতে বিদায় নেবেনা এবং কোন হিসাব নিকাশ ছাড়া বেহেশতে প্রবেশ করবে।

বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত হাসান বসরী (রাদ্বিঃ) বলেন- আমার মন চায়, যদি আমার কাছে উহুদ পাহাড় পরিমান স্বর্ন থাকত, তাহলে সব গুলো মিলাদুন্নবী পালনে খরচ করতাম।

ঈদে মিলাদুন্নবী’ (দ) উপকারিতা সম্পর্কে বুঝার জন্য উপরোক্ত হাদীসই যথেষ্ট। এর জন্য সামান্য পরিমাণ অর্থ ব্যয় করলে অনেক উপকারিতা রয়েছে। যেমন- বেহেস্তে হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ)-এর সাথী হওয়া, ইসলামকে জীবিত রাখা, বদর ও হোনাইনের মত গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধে কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সমতুল্য নেকী অর্জন করা এবং পৃথিবী থেকে ঈমানের সাথে বিদায়ের নিশ্চয়তা ও বিনা হিসাবে বেহেস্তে প্রবেশ করার মত সৌভাগ্য লাভ হয় এই ‘মিলাদুন্নবীর মাহফিলে’। খোলফায়ে রাশেদীনের অভিমত ও আমল আমাদের জন্য একটি শক্ত দলীল।

ঈদে মিলাদুন্নবী’ (দ)-এর উপকারিতা সম্পর্কে জুরকানী শরীফে রয়েছে, যা আবু লাহাব সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে। যেমন- হযরত ছুয়ায়লি (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, হযরত আব্বাস (রাঃ) এরশাদ করেন যে, যখন আবু লাহাব মারা যায় তার এক বছর পর আমি তাকে স্বপ্নে দেখি যে, সে বড়ই খারাপ অবস্থায় আছে এবং সে বলছিল, তোমাদের কাছ থেকে আসার পর আমার কোনো শান্তি নসীব হয়নি। হ্যাঁ এতটুকু অবশ্যই যে, প্রত্যেক সোমবার আমার আযাব হালকা করে দেয়া হয়। তা শুনে হযরত আব্বাস (রাঃ) বললেন, এটি এ জন্যই যে, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সোমবার দিন দুনিয়াতে তাশরীফ এনেছেন। আর ছোয়াইবা নামী জনৈকা ক্রীতদাসী তাকে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার আগমনের শুভ সংবাদ দিয়েছিল বিধায় সন্তুষ্টি চিত্তে আবু লাহাব তাকে আজাদ করে দিয়েছিল। সূত্রঃ (ফাতহুল বারি ৯ম খন্ড ১১৮ পৃষ্ঠা, জুরকানী শরীফ ১ম খন্ড ২৬০ পৃষ্ঠা)

পবিত্র মক্কার জমিন থেকে পাঁচশত মাইল পাড়ি দিয়ে আল্লাহর হাবীব (দ) মদীনা শরীফে শুভাগমন করার পর মদীনাবাসী যদি তাঁকে বরণ করার খাতিরে যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে দলবলে আনন্দ উল্লাসে করে রাস্তায় রাস্তায় মেতে উঠা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয়ে থাকে, তবে অদৃশ্য জগত পাড়ি দিয়ে বস্তু জগতের লােকালয়ে তাঁর শুভাগমনে আনন্দ উল্লাস প্রকাশ করা ও জশনে জুলুস করা জায়েজ হওয়ার ব্যাপারে হাদীসের সমর্থন থাকার কি কোন সন্দেহ থাকতে পারে?

আমরা লক্ষ্য করে আসছি যে, এক দেশের রাষ্ট্রধান অন্যদেশে গেলে সে দেশের স্বসস্ত্র বাহিনী তাকে বিমান বন্দরে গার্ড অপ অনার প্রদান করে। একাধিকবার তােপধ্বনির মাধ্যমে আনন্দ উল্লাস করে বিদেশী রাষ্ট্রপতিকে বরন করে নেওয়া হয় । রাষ্ট্রের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, মন্ত্রীবর্গ ও রাষ্ট্রপতি বিমান বন্দরে বিদেশী মেহমানাকে অভ্যর্থনায় হাজির হয়ে থাকেন। রং বেরং এর পতাকা, বেনার,

তােরন ও অপরূপ সাজে রাস্তাঘাট ও গুরুত্বপূর্ণ স্থান সাজানাে হয়। কচি শিশুসহ সর্বস্তরের মানুষ ফুল নিয়ে তাঁকে স্বাগত জানাতে রাস্তায় নেমে আসে। দেশ হয়ে উঠে উৎসব মূখর ।

তবে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব এবং আল্লাহ্ পাকের বন্ধু “রাহমাতাল্লিল আলামিন” লকব নিয়ে জমিনে শুভাগমন করলে তার অভ্যর্থনা ও সম্বর্ধনা কল্পে জগত উৎসবমূখর হয়ে উঠবে তা অযৌক্তিক হবে কেন? রাসূল আকরাম সাল্লালাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম এর বেলাদতের দিন সাধারণ ঈদ বা খুশীর দিন নয় বরং

সবচেয়ে বড় ঈদ হিসাবে পালন করা সমাচীন হবে। যেমনটি মদীনাবাসী হিজরতের পর আল্লাহর নবীকে পেয়ে সবচেয়ে বেশি আনন্দ আর খুশীতে মেতে উঠেছিল।

বুখারী শরীফের ১ম খন্ড ৫৫৮ পৃষ্ঠায় হযরত বারা ইবনে আজিব থেকে এপ্রসঙ্গে নিমের হাদীসখানা বর্নিত হয়েছে। আমি মদীনাবাসীকে কোন বিষয়ে এমন খুশী হতে দেখিনি যেমনটি রাসূল (দ) কে পেয়ে খুশী হতে দেখেছি।

তাই আসুন, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের গুরুত্ব অনুধাবন করে আমরা নফল রোজা রাখি। দান সদাকা করি। ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তথা নবীজির শুভাগমনের আনন্দ শোভাযাত্রা, নাতে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, মিলাদ মাহফিল উদযাপন করি। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ ছড়িয়ে দেই আমাদের কাজে কর্মে আচরণে। পরিবারে, সমাজের সর্বক্ষেত্রে। আল্লাহতায়ালা পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উসিলায় সারা বিশ্বের মুমিন মুসলিম নর-নারীদের প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শে চলার তৌফিক দান করুন। আমিন।