৪ মাসের অন্তসত্ত্বা ছাত্রীর পরিবারের বিরুদ্ধে উল্টো বিষ খাইয়ে মারার চেষ্টায় মামলা!

0
186

নূরুজ্জামান ফারুকী,বিশেষ প্রতিনিধি: নবীগঞ্জ উপজেলার করগাওঁ ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামে এক মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে জোর পুর্বক ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এতে ওই কিশোরী ৪ মাসের অন্তসত্ত্বা হয়েছে বলে দাবি করছে পরিবার।
কিশোরীর পরিবার স্থানীয় সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বিচার না পেয়ে অবশেষে হবিগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করেছেন ধর্ষিতার মা রাশেদা বেগম।
বর্তমানে মামলাটি হবিগঞ্জের ডিবিকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন হবিগঞ্জ জেলার বিজ্ঞ আদালত।
মামলা ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার করগাওঁ ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামের ময়না মিয়ার মেয়ে স্থানীয় কওমি মাদরাসার অষ্টম (কাপিয়া) শ্রেণী ছাত্রী (১৫) কে মাদরাসায় আসা যাওয়ার পথে একই গ্রামের ফরিদ মিয়া তালুকদারের বকাটে ছেলে মাসুম তালকদার (২৪) দীর্ঘদিন ধরে উত্যক্ত করে আসছিল।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়,ঘটনাটি মেয়েটির পরিবার মাসুম তালুকদারের বাবাসহ স্থানীয় মেম্বার ও মুরুব্বীগণদের অবগত করলে ছেলেটি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে মেয়ের পরিবারের লোকজন বাড়িতে না থাকার সুযোগে বিগত ২০ মার্চ ২০২৩ ইং তারিখে রাত প্রায় ৯ টার দিকে বখাটে মাসুম তালুকদার ওই মেয়ের ঘরে ঢুকে প্রথমে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে প্রেম নিবেদন করে। মেয়েটি তা প্রত্যাখান করে। এক পর্যায়ে মাসুম জোর পুর্বক মেয়েটিকে ধর্ষণ করে।
এক পর্যায়ে ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয় মুরুব্বীয়ানদের নিয়ে ছেলের বাবা ফরিদ মিয়া তালুকদার তার পুত্র বধু হিসেবে মেয়েটিকে ঘরে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন। সেই সুবাধে ছেলেটি প্রায়ই মেয়ের সাথে দেখা করতো এবং একাধিকবার তাদের মধ্যে দৈহ্যিক মিলন ঘটে। ফলে মেয়ে অন্তসত্ত্বা হয়ে পড়লে ছেলের পরিবার বিয়ে থেকে ছিটকে পড়ে। ছেলের বাবা ও ভাই বিয়েতে মতামত না দেয়ায় মাসুম তালুকদার বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে তাকে নবীগঞ্জ হাসপাতাল নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে মাসুম তালুকদার ও তার পরিবারই ঘটনাটি অস্বীকার করে। অসহায় ধর্ষিতা অন্তসত্ত্বা পরিবার স্থানীয় বর্তমান ও সাবেক মেম্বারসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে জানিয়ে বিচার না পেয়ে হবিগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি হবিগঞ্জের ডিবি পুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দেন আদালত।
মামলার খবর পেয়ে ধর্ষক মাসুম তালুকদারের ভাই মোস্তাক আহমদ তালুকদার (পারছু) বাদী হয়ে ধর্ষিতার বাবা-মা, ভাইসহ পরিবারের ৬ জনের বিরুদ্ধে মাসুম তালুকদারকে বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ এনে আদালতে মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলা দায়ের করার খবর পেয়ে এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
এক পর্যায়ে এলাকাবাসী বুধবার বিচারে স্বউদ্যোগে ধর্ষিতা কিশোরীর ন্যায় বিচার ধর্ষকের ফাসিঁ এবং ধর্ষকের ভাইয়ের দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে বিশাল মানব বন্ধন করেছেন। এতে বক্তব্য রাখেন বর্তমান মেম্বার মোশাহিদ আলী, সাবেক মেম্বার কাজল মিয়া, বিশিষ্ট মুরুব্বী ইসরাইল খাঁ, শেফুল মিয়া চৌধুরী, মোফাজ্জুল হুসেন, তপু মিয়া চৌধুরী, নুরুল আমীন, কনা মিয়া, ইউনুছ খাঁ, ফজল হক চৌধুরী প্রমূখ।
মেম্বার মোশাহিদ আলী বলেন, মাসুম তালুকদার কর্তৃক মাদরাসা ছাত্রী ধর্ষিত হয়েছে। তার কু-কর্মের ফলে মেয়েটি আজ ৪ মাসের অন্তসত্ত্বা। ধর্ষক পরিবার শালিস বিচার না মানায় ধর্ষিতার মা বাদী হয়ে আদালতে মামলা করে।
এছাড়া ওই মামলা থেকে মাসুমকে বাচাঁতে তার ভাই ধর্ষিতা পরিবারের বিরুদ্ধে যে, মামলা দায়ের করেছে তা সম্পুর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। যার কারনে আমরা গ্রামবাসী ধর্ষিতা অন্তসত্ত্বা মেয়ের ন্যায় বিচারের দাবীতে এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জন্য মানব বন্ধন করেছি। ভবিষ্যতে আরও কঠোর কর্মসুচী দিবে বলে গ্রামবাসী হুমকি দিয়েছে।