ঘাতক পুত্র নির্মমভাবে খুন করলেন ৬৫ বছর বয়সী পিতাকে

    0
    221

    পিতৃ সম্পদ বিক্রয়ের সিদ্ধান্তই কাল হয়ে দাড়ালো দুবাই প্রবাসী মুক্তার উলাহ ॥ বাড়ির পুকুরের ফেলে মৃত্যু নিশ্চত করে রক্তমাখা ছোরা হাতে নিয়ে বুক ফুলিয়ে বীর দর্পে সবার সামনে চলে যায় ঘাতক পুত্র !

     

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৬মার্চ,সানিউর রহমান তালুকদার ও মতিউর রহমান মুন্নাঃ  নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের সদরাবাদ গ্রামে ঘাতক পুত্রের হাতে নির্মমভাবে খুন হলেন ৬৫ বছর বসয়ী বৃদ্ধ মুক্তার উল্যা নামের এক দুবাই প্রবাসী। ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার দিবাগত
    রাত অনুমান সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেরন করেছে। ঘাতক পুত্র বীর দর্পে জন সম্মূখে পালিয়ে যায়।

    এ ঘটনায় নিহতের যুবতি কন্যা ডালিনা বেগম (২২) ও প্রতিবেশী রাফি আহমদ (৩০) নামের যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আটক করেছে। নিহতের পারিবারিক ও সরেজমিনে জানাযায়, নবীগঞ্জ উপজেলার ওই গ্রামের মৃত রমিজ উলার পুত্র মুক্তার উলাহ প্রায় বছর খানেক পূর্বে দুবাই থেকে বাড়িতে আসেন। বয়সের ভারে নতজানু ওই বৃদ্ধা কোন রোজিরোজগার করতে পারেন নি। তার ২ছেলে ও ৩ মেয়ে বড় ছেলে সুমন সিলেট শহরে সিকিউরিটির কাজ করে, ঘাতক পুত্র জীবন শেরপুর মাইওয়ান ইলেক্ট্রনিক্স এতে শ্রমিকের কাজ করে বলে জানাযায়, কোন রকম চলছিল তাদের জীবন সংসার।

    সংসারের ভরণপোষন ও একটি মেয়ের বিবাহ দিতে গিয়ে কিছু বাড়ি রকম জায়গা বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেন মুক্তার উলাহ। এই জায়গা বিক্রয় নিয়ে পিতা পুত্রের মধ্যে গত ২সপ্তাহ ধরে মনোমালিন্য চলে আসছিল। এরই জের ধরে ঘটনার উলেখিত রাতে পাশ্ববর্তী প্রতিবেশী মৃত আহমদ উলার পুত্র রাফি আহমদ এর বাড়িতে বসা ছিলেন মুক্তার উলাহ। ওই সময়ে তারই জামাতা একই গ্রামের মৃত ওয়াজিব উলার পুত্র আজির উদ্দিন (৩৫) ও তার শশুরকে বিষয়টি মিমাংশা করার কথা বলে বাড়িতে নিয়ে আসার সাথে সাথেই ধারালো অ¯ ¿ (ছোরা) নিয়ে বৃদ্ধা পিতাকে ধাওয়া করে বাড়ির পুকুরের পানিতে ফেলে বুকের মধ্যে ঘাই মেরে মৃত্যু নিশ্চত করে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছোরা হাতে নিয়ে বুক ফুলিয়ে বীর দর্পে পালিয়ে যায়। এ সময় বাড়ির লোকজনের আর্ত চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে পুকুরের পানি থেকে ডুবন্ত লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে
    প্রেরন করে। নিহতের স্ত্রী নাজমা বেগম বলেন, আমার স্বামী বিদেশ থেকে আসার পর অনেক লক্ষ টাকা খুইছেন, অবশেষে তার এ জায়গা বিক্রিকে আমরা কেউ মেনে নিতে পারিনি। তবে, আমার কুলাঙ্গার পুত্র তার বাপকে এভাবে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। আমি মা হয়েও তার ফাঁসি চাই। গ্রামের সাবেক মেম্বার মোঃ আলম মিয়া, একে ফজলু, কামরুল ইসলাম স্বপন, আমীর আলী সহ অনেকেই বলেন, এমন হত্যাকান্ডের সংবাদ পেয়ে আমরা গ্রামবাসী তাৎক্ষনিক ছুটে এসেছি। এই হৃদয়বিধারক কর্মকান্ডে আমরা গ্রামবাসী গভীর শোকাহত ও মর্মাহত। আমরা গ্রামবাসী তার সুষ্ট তদন্তে খুনি জীবনের ফাঁসি দাবী করছি। আরেকটি সূত্র জানায়, পুলিশের হাতে ধৃত মৃত আহমদ উলার পুত্র রাফি আহমদ মৌলভীবাজার পাঁতাকুড়ি অফসেট প্রেসের একজন কম্পিউটার অপারেটর, বৃদ্ধ মুক্তার মিয়া
    তার সাথে কিছু জায়গা বিক্রয়ের আলাপ আলোচনা করছিলেন তার বাড়িতে বসেই। এ ছাড়াও গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী কামরুল ইসলাম স্বপন ও আমির আলী
    সহ আরো কয়েক জনের নিকট তিনি বাড়ির ৭২শতক ভূমির মালিকার মধ্যে ২০শতক
    জায়গা বিক্রয়ের কথা বার্তা বলে আসছিলেন। এতে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে তার কুলাঙ্গার পুত্র জীবন। অবশেষে সামান্য কিছু জায়গার জন্য কেড়ে নিল জন্ম দাতা পিতার তাজা প্রাণ। এ ঘটনায় এলাকায় নিন্দার ঝড় বইছে। উপজেলার সর্বত্র তুলাপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানা ওসি আব্দুল বাতেন খাঁন বলেন, এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় থানায় এখনো কোন মামলা হয়নি, প্রস্ততি চলছে। তবে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২ জনকে আটক করা হয়েছে তিনি এ কথা স্বীকার করেন।

    __