অষ্টগ্রাম হাওরে ডুবন্ত নৌকার যাত্রীদের বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ হারালেন সাহায্যকারী!

0
133

আমার সিলেট ডেস্ক রিপোর্ট,কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম হাওরে সোমবার (১০ জুলাই) দুপুরে নারী শিশু ও গরু ৭ যাত্রীকে নিয়ে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় যাত্রীদের বাঁচাতে পানিতে ঝাঁপ দেন সাবিকুল ইসলাম (২৫) নামের একই উপজেলার এক যুবক। নারী ও শিশুসহ দু’জন উদ্ধার করতে পারলেও তিনি নিজেই পানিতে ডুবে মারা যান। তাঁর লাশ সন্ধ্যা পৌনে সাতটায় উদ্ধার করেছে অষ্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।

কিশোরগঞ্জের ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়কের ভাতশালা গ্রামের পাশে বাইশ মিটার সেতু নামক এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা জানান, কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার কলমাকান্দা ইউনিয়নের কাকুরিয়া গ্রাম থেকে ছোট ডিঙি নৌকায় করে একটি গরু, দুই শিশুসহ পাঁচজন নারী-পুরুষ বাজিতপুর উপজেলার হাছানপুর গ্রামে যাচ্ছিলেন। এ সময় অষ্টগ্রামের কাস্তুল ইউনিয়নের ভাতশালায় ‘বাইশ মিটার সেতু’ পেরোনোর সময় স্রোতে নৌকাটি ডুবে যায়।

এদিকে ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়কে মোটরবাইকে ঘুরতে আসা পর্যটক সাবিকুল নৌকাডুবির ঘটনা দেখে সড়কে মোটরসাইকেল রেখে যাত্রীদেরকে উদ্ধার করতে পানিতে ঝাঁপ দেন। তিনি এক শিশু ও এক নারীকে উদ্ধার করে সড়কে উঠতে গিয়ে হঠাৎ হাওরের পানিতে তলিয়ে যান বলে বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা জানান।

ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল দীর্ঘ সময় সন্ধান করে সন্ধ্যা পৌণে ৭টার দিকে সাবিকুলের মরদেহ উদ্ধার করে।

তিন বছর বয়সী এক ছেলে সন্তানের বাবা সাবিকুল ইসলাম। তিনি অষ্টগ্রাম উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের বৈরাগীরকান্দি গ্রামের আবদুর রহিমের ছেলে।

জানা গেছে, অষ্টগ্রামের কলমাকান্দা ইউনিয়নের কাকুরিয়া গ্রামের ববিতা রাণি সরকার, স্বামী, দুই সন্তান, ছোট বোন ও বোন জামাই এবং নৌকার মাঝিসহ ৭ জনকে নিয়ে বাবার বাড়ি বেড়িয়ে বাজিতপুর এলাকার হাছানপুরে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন।

অষ্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের অধিনায়ক সাব স্টেশন অফিসার কবির আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, আমরা বেলা দেড়টায় নৌদুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। বাজিতপুর থেকে ডুবুরি এলে উদ্ধার কাজ শুরু করি। মরদেহ উদ্ধার করে থানায় হস্তান্তর করেছি।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরোপকারী এই যুবকের মৃত্যুতে অষ্টগ্রাম ইটনা মিঠামইন এলাকার নেটিজেনরা সাবিকুল ইসলামকে শহীদ ঘোষণা করে শহীদ সাবিকুল ইসলাম ব্রিজ নামে আখ্যায়িত করার জন্য প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ব্রিজের নাম শহীদ সাবিকুল ইসলাম ব্রীজ হিসেবে অনেকেই মত প্রকাশ করেছেন।