একই দিনে রাজধানীতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ও তীব্র যানজট

0
109

আমার সিলেট ডেস্ক রিপোর্ট,ঢাকা: একই দিনে রাজধানীর পৃথক স্থানে বিএনপির এক দফা ও এক দাবি এবং আওয়ামী লীগের ও সংবিধান রক্ষায় এক দফার দাবিতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বুধবার (১২ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে আয়োজিত মহাসমাবেশে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদের বিলুপ্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে ‘এক দফা’ আন্দোলনের চূড়ান্ত ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।এই এক দফার ঘোষণা দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের ভোটাধিকার হরণকারী ফ্যাসিবাদী, কর্তৃত্ববাদী সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা, নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির এক দফা ঘোষণা করছি।

তিনি বলেন, এ দাবি আদায়ে আগামী ১৮ জুলাই ঢাকাসহ সারাদেশের মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মার্চপাস্ট বা পদযাত্রা কর্মসূচি করা হবে। ওইদিন সকাল ১০টা থেকে ৪টা পর্যন্ত গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত এবং আব্দুল্লাহপুর থেকে বাহাদুরশাহ পার্ক পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করা হবে। একইভাবে সারাদেশের মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এ কর্মসূচি করা হবে।

অপরদিকে একই দিনে রাজধানীতে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শান্তি সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তাদের যেমন এক দফা, আমাদেরও দফা একটাই। আর সেটা হলো, সংবিধান অনুযায়ী শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

রাজধানীর গুলিস্তানে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে শান্তি সমাবেশে এ কথা বলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বলেন, ‘তাদের এক দফা, আমাদেরও একটাই দফা, সংবিধানসম্মত নির্বাচন। শেখ হাসিনাকে ছাড়া কোনো নির্বাচন নয়। শেখ হাসিনার আমলের নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনেই হবে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি জানে নির্বাচন হলে তারা হেরে যাবে। শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তার কাছে ভেসে যাবে। তারা শেখ হাসিনাকে হিংসা করে। শেখ হাসিনার অপরাধ উন্নয়ন করেছেন।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আপনারা চান অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন। আমরাও সেটা চাই। সেই সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দিতে আসলে প্রতিহত করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ যাকে ভালোবাসে, বাংলাদেশের জনগণ যে নেত্রীর সততাকে, উন্নয়নকে পছন্দ করে, যিনি সারারাত জেগে মানুষের কথা ভাবেন, আমাদের এমন নেতা আমরা হারাতে পারি না।’

সমাবেশে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড.আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।

উল্লেখ, রাজধানীতে দুইদলের সমাবেশকে ঘিরে পল্টনসহ আশপাশের এলাকার সড়কগুলোতে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে।

কাকরাইল মসজিদ মোড় থেকে মগবাজার, ইস্কাটন রোড, মৎস্য ভবন থেকে হাইকোর্ট মোড় সড়কে যানবাহন কার্যত স্থবির হয়ে আছে।

মাঝে বৃষ্টির কারণে যানজট পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। অনেক যাত্রী ও সমাবেশগামী বাসের নেতাকর্মীরা হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন।

নেতাকর্মীদের চলাচলের সুবিধার্থে কাকরাইল মসজিদ মোড় থেকে নয়াপল্টনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। একইভাবে পল্টন মোড় থেকে গুলিস্তান ও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদমুখী সড়কও বন্ধ রাখা হয়। পল্টন মোড়ে জলকামান ও প্রিজনভ্যান প্রস্তুত রাখা হয়।