জৈন্তাপুরের লাল শাপলা বিলের ২হাজার বিঘা জমি দখল

    0
    248

    “উপড়ে ফেলা হচ্ছে শাপলা, মাছ লুট, অবৈধ ভাবে বাঁধ মির্মাণ, বিল এরিয়া শনাক্তের দাবী”

    রেজওয়ান করিম সাব্বির,জৈন্তাপুর সিলেট প্রতিনিধিঃ  সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র লাল শাপলার ৪টি বিল, অপরিকল্পিত ভাবে বাঁধ নির্মাণ ফলে ডিবিবিল ও কেন্দ্রী বিলের প্রায় ২ হাজার বিঘা জমি দখলে নিচ্ছে প্রভাবশালীরা। স্থানীয়দের দাবী উপজেলা প্রশাসনের ছত্র-ছায়ায় বিলের বড় অংশের লাল শাপলা ধ্বংস করে ও নালা সেঁচ মাছ লুটছে প্রভাবশালীরা। স্থানীয়দের ৪টি বিলের প্রকৃত এরিয়া ডিমাগেশন করে সংরক্ষনের জন্য বাঁধ নির্মাণ ও অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে বিল গুলো রক্ষার দাবী পরিবেশবাদীদের।

    সরেজমিনে সিলেটের জৈন্তাপুরের লাল শাপলার রাজ্য ঘুরে দেখা যায়, স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের ছত্র-ছায়ায় কেন্দ্রী ও ডিবি বিলের পশ্চিম অংশে প্রায় ২শত বিঘা জমির লাল শাপলা ইতোমধ্যে উপড়ে ফেলে জমি দখল করে ধান লাগানো হচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবী বিলের বড় একটি অংশের অপরিকল্পিত ভাবে প্রায় ১০লক্ষ টাকার মাছ লুঠ করে নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় কেন্দ্রী গ্রামের বাসিন্ধা শৌলেন্দ্রর সাথে আলাপ কলে তিনি জানান বিলের পানি বন্ধ করে দেওয়ার কারনে আমার দখলিয় জায়গায় এবার ধান লাগানো যাবে না।

    অপরদিকে সে আরও এই বাঁধ নিচের জায়গা গুলো অন্যান্যরা দখল করে শাপলা উত্তোলন করে ধান লাগাচ্ছে। জমি বন্দোবস্ত কিংবা লীজ গ্রহন করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন যারা ধান চাষ করছে তারা কেউই লীজ কিংবা বন্দোবস্ত নেননি। বিলের বাঁধ নির্মানের বিষয় জানতে চাইলে তারা বলেন ইউপি সদস্য আহমদ আলীর নেতৃত্বে বাঁধ দেওয়া হয়েছে এবং বিলের অপর অংশ পানি ছেড়ে মাছ ধরা হচ্ছে।

    সদ্য বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌরীন করিম শাপলা বিল সুরক্ষার জন্য গঠিত কমিটির সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক কামাল আহমদ ও কোষাধক্ষ্য ইমরান আহমদ প্রতিবেদককে জানান- আমরা লাল শাপলার বিলটি বিভিন্ন নালার বাঁধ দিয়ে পানি আটক করে রেখেছি।

    সম্প্রতি বিলের মধ্যে দিয়ে যে বাঁধ দেওয়া হয়েছে এবং বিলের বড় একটি অংশের শুকিয়ে এবং শাপলা ধ্বংস করে কোন প্রকার ইজারা বা বন্দোবস্ত না নিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে এবং বিলের ভূমিতে ধান রোপন করা অবৈধ ভাবে কয়েক মাসের জন্য ঘর নির্মাণ করে ফসল ফলিয়ে তারা চলে যায়। আমরা চাই প্রকৃত ভাবে ৪টি বিলের (কেন্দ্রী বিল, ডিবি বিল, হরফকাট বিল এবং ইয়াম বিল) প্রকৃত এরিয়া যত দ্রুত সম্ভব ডির্মাগেশন করে পরিপূর্ণ পর্যটন এরিয়া ঘোষনার দাবী জানাই সরকারের উচ্চ মহলের কাছে।

    তবে যেখানে বাঁধ দেওয়া হচ্ছে তা হলে বিলের প্রায় ২ শত বিঘা জমি বেদখল হবে সেই সাথে শাপলা বিলটি প্রকৃতিক সৌন্দর্য্য বিনষ্ট হবে। বিল গুলোর পরিপূর্ণ এরিয়া নির্ধারণ করে যদি বাঁধ নির্মাণ করা হয় তাহলে সিলেটের শেষ্ঠ পর্যটন হিসাবে বিশ্বব্যাপী সৌন্দর্য্য ছড়িয়ে পড়বে।

    আহমদ আলী মেম্বারের সাথে আলাপকালে তিনি পানি ছাড়ার বিষয় স্বীকার করে বলেন, আমি শুধুমাত্র চৌকিদারের দায়িত্ব পালন করছি। আপনি ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে আলাপ করেন।

    বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা সিলেটের সন্বয়ক আব্দুল করিম কিম বলেন, যদি ব্যক্তি স্বার্থের জন্য কেউ লাল শাপলা বিলের জায়গা অপদখলের চেষ্টা করে তাহলে এখনই তা রোধ করতে হবে। বর্তমানে ডিবির হাওর এলাকার ৪টি বিলের প্রকৃত জায়গা দ্রুত সময়ের মধ্যে চিহ্নিত করে পরিকল্পনা মাফিক প্রকৃতিক সৌর্ন্দয়ের ধরে রাখার জোর দাবী জানাই। পাশাপািশ প্রশাসনের উর্দ্বতন মহলের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি অবৈধ দখলদার মুক্ত করে শাপলা বিলকে সুরক্ষা করতে হবে। অন্যতায় বিলের জায়গা রক্ষায় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) মানব বন্ধন সহ প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারক লিপি প্রদান সহ আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

    উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ বলেন, শাপলা বিলে একটি অংশ দখল বা দখলের চেষ্টা কোন মতে মেনে নেওয়া হবে না। আমি প্রশাসনের উর্দ্বতন মহলের কাছে ডিবির হাওরের ৪টি বিলের প্রকৃত এরিয়া ডিমাগেশন করে পরিকল্পনা মাফিক পর্যটন এরিয়া ঘোষনা করা হউক।

    ভারপআপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুসি কান্ত হাজং এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আমরা প্রশাসনের পক্ষ হতে নিষেধ করেছি। এখানে বাঁধ দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু এখনও বাঁধ দেওয়া হয়নি। আমি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে পাঠাচ্ছি।