এম এ কাদের,হবিগঞ্জ থেকে: হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার শিমূলঘর কমিউনিটি ক্লিনিক ইদানিং বেশ কিছু দিন যাবত সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত তালাবদ্ধ রয়েছে বলে জানা যায়। এটা এই কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রায় রোজকার চিত্র বলে এলাকাবাসী থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসী কাঙ্কিত চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে। এমনই এক ফিরে যাওয়া বৃদ্ধা মহিলা আক্ষেপ করে বলেন, ‘সরকারি ওষুধ নিবার লাগি তিন দিন আইলাম, একদিনও ফাইলাম না। এই ধরনের আসপাতাল (হাসপাতাল), থাইক্ক্যা (থেকে) অই কিতা অইব (কী হবে), আর না থাইক্ক্যা ওই আমারার কিতা অইব?’
এদিকে সরে জমিনে কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে পাওয়া যায়নি দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউকে। অভিযোগ রয়েছে- নিজেদের খেয়াল-খুশিমতো ক্লিনিক খুলে কিছুক্ষণ বসে তালাবদ্ধ করে চলে যান ক্লিনিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেলিনাসহ কর্মচারীরা।
এছাড়া প্রত্যন্ত অঞ্চলের রোগীদের বিনামূল্যে ৩০ প্রকার ওষুধ দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হচ্ছে না কাউকে।
হবিগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় মোট কমিউনিটি ক্লিনিকের সংখ্যা ২১৪টি।
জানা গেছে, জেলা শহরের আশপাশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো নরমাল ডেলিভারিসহ বিভিন্ন রোগীকে সেবা দিয়ে জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার অর্জন করে থাকলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে এটা নেই। খবরও রাখা হচ্ছে না এসবের।
সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে খোঁজখবর না নেওয়ার কারণে খেয়াল-খুশিমতো দায়িত্ব পালন করছেন কর্মরতরা। ৩০ প্রকার ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হচ্ছে না। সরকারি ওষুধ বিভিন্ন কৌশলে বিক্রি করে দায়িত্বপ্রাপ্তরা টাকা নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলার শিমূলঘর গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিটির সদস্যরা বলেন, আমাদের এলাকার কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে কখনও ওষুধ পাওয়া যায় না। কর্মরত একজন থাকলেও মাসে কয়েক দিন এসে কিছু সময় বসে চলে যান। ঔষধের জন্য গেলে প্রায় সময়ই বলেন, এই ঔষধটা নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, সম্প্রতি জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আমি কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে কাউকে পাইনি। দু’ঘণ্টা বসে থাকার পর এক ব্যক্তি আসলেও কোনো ওষুধ না দিয়ে উল্টো আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।
তাছাড়া এলাকার সচেতন মহল ও কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিটির সদস্যরা বলেন, এলাকার লোকজন সঠিকভাবে স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে না। কমিউনিটি ক্লিনিক একটি থাকলেও কোনো কাজে আসছে না।
স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন শিমূলঘরবাসী।
সম্প্রতি গত ১১, ১২, ও ১৩ ই জুন জাতীয় দৈনিক, স্হানীয় দৈনিকসহ বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে। তারপরও বহাল তবিয়তে রয়েছেন সেলিনা আক্তার।
বিভিন্ন পত্রিকায় সেলিনার অনিয়মের সংবাদ প্রকাশিত হয় বিভিন্ন শিরোনামে।
এ ব্যাপারে সেলিনা বেগমের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (টিএসও) ডাঃ এ কিউ এম আরিফ ইফতেকার মামুন এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, Chcp training ( সিএইচসিপি প্রশিক্ষণ) এ গিয়েছিলেন লাইট ফ্যান ঠিক ভাবে বন্ধ না করে যাওয়া উচিত হয়নি। ঠিক মত দায়িত্ব পালন না করলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জানানো হবে।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সিভিল সার্জন বলেন, এবিষয়ে খোজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।